
সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে পাঁচ বছরের জন্য একটি নির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। এই আকাঙ্ক্ষার কথা জানিয়ে সারজিসের দেওয়া একটি ফেসবুক পোস্ট নানা আলোচনা তৈরি করেছে।
সব দল ও মতের ঐকমত্যের ভিত্তিতে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে সারজিসের এমন মন্তব্যে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সন্দেহের জন্ম দেয়। তারা বলছেন, এনসিপি নেতার এমন মন্তব্য অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়া ড. ইউনূসকেই বিতর্কিত করবে।
এ বিষয়ে বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের এমন কোনো চিন্তা আছে বলে আমার কাছে এখনো মনে হয়নি। এ ধরনের মন্তব্য আমলে নেবার প্রয়োজন নেই বলে মনে করেন তিনি। এতে অভ্যুত্থানের অর্জনও বিসর্জনে পর্যবসিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই অতি কথন পরিহার করা উচিত।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী হতে গেলে ড. ইউনূসকে একটি রাজনৈতিক দলে যোগ দিতে হবে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে হবে।
ড. ইউনূসকে প্রধানমন্ত্রী পদে দেখার এই আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ- জনগণকে এক ধরনের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বীর আহমেদ বলেন, আমরা এখনো ড. ইউনূসের কাছে এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য শুনিনি। না দিলে আমরা মনে করি এ বিষয়ে ড. ইউনূসেরও একটা পরিকল্পনা আছে। এ সময় সারজিসদের ড. ইউনূসের লোক বলেও উল্লেখ করেন এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক।
তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ভেঙে দিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়ে ক্ষমতায় আসলে কোনো সমস্যা নেই। তবে অনির্বাচিত অবস্থায় ৫ বছর থাকা যাবে না। এতে সংকট আরও বাড়বে।
এ বিষয়ে এনসিপির নেতারা বলেছেন, অধ্যাপক ইউনূসকে নিয়ে সারজিস ফেসবুকে যে পোস্ট দিয়েছেন, সেটা সম্পূর্ণ তার ব্যক্তিগত মতামত। এটি এনসিপির দলীয় অবস্থান নয়। দলের নেতৃত্বের জায়গা থেকে সারজিসের এ ধরনের পোস্ট করা অনুচিত বলেও তাদের কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন।
ঈদুল ফিতরের এক দিন আগে গত ২৯ মার্চ দুপুরে এনসিপি নেতা সারজিস আলম নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট দেন। সেখানে তিনি লেখেন, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মতো একজন স্টেটসম্যানকে পাঁচ বছরের জন্য বাংলাদেশের একটি নির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা আমার আজীবন থাকবে।