ঢাকা শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ , ৪ বৈশাখ ১৪৩২ আর্কাইভস ই পেপার

bkash
bkash
udvash
udvash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
bkash
bkash
udvash
udvash

সরকারি তালিকায় নাম নেই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ সাতজনের

জাতীয়

আমাদের বার্তা প্রতিবেদক 

প্রকাশিত: ১৩:০৮, ১১ এপ্রিল ২০২৫

সর্বশেষ

সরকারি তালিকায় নাম নেই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ সাতজনের

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ হওয়ার পরও সরকারি তালিকায় নাম ওঠেনি, এমন সাতজনের খোঁজ পাওয়া গেছে। পিবিআই বলছে, শহীদদের তালিকায় নাম না থাকা এই সাতজন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গণ-অভ্যুত্থানের সময় নিহত হন। তাঁরা তালিকাভুক্ত না হওয়ায় ভুক্তভোগী পরিবারগুলো সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

এই সাতজনের নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়ের হওয়া হত্যা মামলা তদন্ত করছে পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন)। তাঁরা হলেন চা-বিক্রেতা মো. সাব্বির (১২), পথশিশু মো. শামীম (১৩), চুয়াডাঙ্গা সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্র শাকিব আহম্মেদ, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা নিগার সিদ্দিক ডিগ্রি কলেজের মানবিক শাখায় দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সাকিব হোসেন (২৪), বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি সাইম (১৭), চুয়াডাঙ্গার আবদুল ওয়াদুদ ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র তাফিম মিয়া (১৭) ও প্রাইভেট কারচালক কাওসার মিয়া (২৬)।এ পর্যন্ত জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ৮৩৪ জনের নাম সরকারি গেজেটে প্রকাশ করা হয়েছে। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁদের প্রত্যেকের পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা করে সঞ্চয়পত্র দেওয়ার কথা জানান। এ ছাড়া প্রতিটি পরিবার মাসে ২০ হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন বলে জানান তিনি।পিবিআইয়ের প্রধান অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত আইজিপি) মো. মোস্তফা কামাল বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ হয়েছেন, এমন কয়েজনের নাম সরকারি গেজেটে ওঠেনি। বিষয়টি তাঁদের নজরে এসেছে। এসব ঘটনায় হওয়া হত্যা মামলাগুলো পিবিআই তদন্ত করছে। তদন্ত শেষ পর্যায়ে। এ ব্যাপারে পিবিআইয়ের কাছে তালিকা চাইলে সরকারকে সেই তালিকা দেওয়া হবে।

 

ঢাকায় যেভাবে শহীদ দুই শিশু

গত ২০ জুলাই সাত মসজিদ সড়কে গুলিতে নিহত হয় শিশু সাব্বির। সে ফুল বিক্রি করত। এ ঘটনায় তার নানা জয়নাল শেখ ধানমন্ডি থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের ১০ জন নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়।

মামলার বিবরণে বলা হয়, ঘটনার দিন সাব্বির মোহাম্মদপুরের ক্যানসার গলির বাসা থেকে চা ও ফুল বিক্রি করতে বের হয়। সন্ধ্যা ৭টার দিকে মা মাকছুদা বেগম খবর পান, সাব্বিরের লাশ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে আছে। ধানমন্ডি আবাহনী মাঠের উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে মোহাম্মদপুর থানাসংলগ্ন সিটি হাসপাতাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা লাঠিসোঁটা ও অস্ত্র নিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায়। ওই হামলায় সাব্বির গুরুতর আহত হয় এবং পরে হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ময়নাতদন্ত ছাড়াই সাব্বিরের লাশ রায়েরবাজার স্মৃতিসৌধসংলগ্ন কবরস্থানে দাফন করেন স্বজনেরা। মাকছুদা বেগম বলেন, চার সন্তানের মধ্যে সাব্বির বড় ছিল। তাঁর দ্বিতীয় স্বামী রিকশা চালান। বাবা-ছেলের আয়ে পরিবার চলত। এখন স্বামীর একার আয়ে সংসার চলছে না।

জামায়াতে ইসলামের দেওয়া দুই লাখ টাকা পেয়েছেন উল্লেখ করে মাকছুদা বেগম বলেন, আর কারও কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা পাননি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই ঢাকা মেট্রো দক্ষিণের পরিদর্শক এ জেড এম মনিরুজ্জামান বলেন, শিশুটির নাম সরকারি গেজেটে ওঠেনি। লাশ কবর থেকে তুলতে আদালতে আবেদন করা হয়েছে।

গত ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে শামীমকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তার মা জাহানারা বেগম ধানমন্ডি থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় আসামি হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী, সাবেক মন্ত্রী, আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ১২৮ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

শিশু শামীম তার মায়ের সঙ্গে আদাবর থানার সুনিবিড় হাউজিং স্কুলের গলিতে থাকত। ময়নাতদন্ত ছাড়াই শিশুটির লাশ রায়েরবাজার স্মৃতিসৌধসংলগ্ন কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

শামীমের মা জাহানারা বেগম গৃহকর্মী। তার বাবা আগেই মারা গেছেন। জাহানারা বেগম বলেন, দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে শামীম দ্বিতীয়। কারও কাছ থেকে কোনো আর্থিক সহযোগিতা পাননি। জাহানারা বেগম বলেন, সরকারি তালিকায় ছেলের নাম ওঠানোর জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই দক্ষিণের উপপরিদর্শক (এসআই) শাহীন মিয়া বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ৫ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে সন্তুর রেস্তোরাঁ বা কোনো বাড়ির সামনে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল। এতে শিশু শামীম পুড়ে মারা গেছে। তার মৃত্যুসনদেও চিকিৎসক এই মন্তব্য করেছেন। শিশুটির লাশ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গায় শহীদ চারজন

গত ৫ আগস্ট বিকেলে চুয়াডাঙ্গা শহরের কাঠপট্টি মোড়ে শাকিব আহম্মেদসহ চারজনকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় হত্যা মামলা করেন শাকিবের ভাই শাকিল আহম্মেদ।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ঘটনার দিন সরকার পতনের পর আনন্দমিছিল করতে চুয়াডাঙ্গা শহরের কাঠপট্টি মোড়ে জড়ো হয় শাকিব আহম্মেদ, সাইম, তাফিম ফেরদৌস, সাকিব হোসেনসহ ছাত্র-জনতা। এ সময় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা তাদের ধাওয়া দিলে শাকিব আহম্মেদ, তার ফুফাতো ভাই সাকিব হোসেন ও তাদের সঙ্গী সাইম ও তাফিম কাঠপট্টি মোড়ের একটি বাড়িতে ঢুকে পড়ে। পরে সেখানে তাদের মারধর করে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়।

মামলার সাবেক তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক পার্থ প্রতীম ব্রহ্মচারী বলেন, চারজনকে আগুনে পুড়ে মারা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে, আগুনে পুড়ে তাঁরা মারা গেছেন। মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে চুয়াডাঙ্গায় দাফন করা হয়েছে।

শাকিবের ভাই শাকিল আহম্মেদ বলেন, ‘বিজয় মিছিলে যুবলীগ নেতা আরেফিন আলম রঞ্জুর নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়েছিল। আগের দিন তিনি আন্দোলনরত ছাত্রদের মারধর করেছিলেন।’ তিনি বলেন, ‘আমরা চুয়াডাঙ্গায় সদর থানায় দরখাস্ত দিয়েছিলাম। কিন্তু সরকারি গেজেটে তাদের নাম ওঠেনি। কারও কাছ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের আর্থিক সহযোগিতা পাইনি।’

সেদিনের ঘটনায় নিহত সাইম চুয়াডাঙ্গা শহরের শান্তিপাড়ায় থাকত। তার মা নাজমা বেগম বলেন, ৫ আগস্ট মিছিলে গিয়ে সাইম নিখোঁজ হয়। ওই দিন তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরদিন লোকমুখে খবর পেয়ে যুবলীগ নেতা আরেফিন আলমের বাড়ির ছাদে সাইমের পোড়া লাশ দেখতে পান।

নাজমা বেগম বলেন, দুই ভাইয়ের মধ্যে সাইম বড়। তাঁর স্বামী মারা যাওয়ার পর সাইম সংসারের হাল ধরেছিল। এখন কষ্টে দিন কাটছে। কারও কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা পাননি বলে জানান তিনি।

একই ঘটনায় নিহত সাকিব হোসেনের বাড়ি চুয়াডাঙ্গার বেলগাছী ঈদগাহপাড়ায়। তার বাবা মোজাম্মেল হক কৃষিকাজ করেন। সাকিবের ছোট ভাই মো. রাশেদ জানায়, মা-বাবা ও চার ভাই নিয়ে তাদের ছয় সদস্যের পরিবার। নিজেদের জমিজমা নেই। সাকিব বৈদ্যুতিক মিস্ত্রির কাজ করে সংসার চালাত। তারা কারও কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা পায়নি।

আর নিহত তাফিম মা-বাবার সঙ্গে চুয়াডাঙ্গার হাটকালুগঞ্জে থাকত। তার মা নারগিস খাতুন বলেন, তার ছেলে শহীদ হলেও সরকারি গেজেটে নাম ওঠেনি। কারও কাছ থেকে সহায়তাও পাননি।

গাজীপুরে শহীদ হন কাওসার

৫ আগস্ট সন্ধ্যায় গাজীপুরের শ্রীপুর থানার মাওনা পল্লী বিদ্যুৎ মোড়ে গুলিতে কাওসার মিয়া নিহত হন। এ ঘটনায় তাঁর বাবা সাইদুল ইসলাম ফরাজী আদালতে হত্যা মামলা করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় কাওসার ছাত্র-জনতার সঙ্গে মিছিল নিয়ে মাওনা পল্লী বিদ্যুৎ মোড়ে বাজারে যায়। এ সময় আসামিরা ছাত্র-জনতার মিছিলে গুলি চালায়। কাওসার গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান। মামলায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ দলটির ৭৬ জন নেতাকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গাজীপুর পিবিআইয়ের পরিদর্শক মুহাম্মদ মহব্বত কবীর বলেন, সরেজমিনে পরিদর্শনে জানা যায়, কওসার গুলিতে নিহত হয়েছেন। স্বজনেরা ময়নাতদন্ত না করে তাঁর লাশ গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের পূর্ব নড়াইলে দাফন করেছেন। এক ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে কাওসার বড় ছিলেন। তাঁর আয়েই সংসার চলত। বৃদ্ধ মা-বাবা এখন কষ্টে আছেন।

জুলাই গণ-অভুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের বিষয়ে খোঁজখবর রাখছে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন। গত ২৮ মার্চ এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ফাউন্ডেশন এখন পর্যন্ত মোট ৯৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। ৬ হাজার ৩৪১ ব্যক্তি-পরিবার এই সহায়তা পেয়েছে।

জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ বলেন, যেসব শহীদের নাম সরকারি গেজেটে ওঠেনি, সিভিল সার্জনের মাধ্যমে তাঁদের নামের তালিকা করা হবে। সেই তালিকা পরে আবার গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে। মাহবুবুর রহমান বলেন, শহীদদের কারও নাম যেন গেজেট থেকে বাদ না পড়ে, সে ব্যাপারে তাঁরা সজাগ আছেন।

আরও তিন হত্যা মামলা

গত বছরের ২০ জুলাই ঢাকার কাছে আশুলিয়ায় নিজ বাসায় গুলি করে হত্যা করা হয় শেখ শামীম (৫০) নামের একজন শরবত বিক্রেতাকে। এ ঘটনায় জাকারিয়া হোসেন ওরফে সোহান নামের এক ব্যক্তি মামলা করেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, শামীম বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের বিনা মূল্যে শরবত খাওয়াতেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা গত বছরের ২০ জুলাই বেলা তিনটার দিকে আশুলিয়ার ভাড়া বাসায় গিয়ে শামীমের ওপর গুলি চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।

তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই ঢাকা জেলার পরিদর্শক গোবিন্দ লাল দে বলেন, সরেজমিনে পরিদর্শনে জানা যায়, শেখ শামীম সাভার চৌরাস্তায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। মামলার বাদী জাকারিয়া নিহত শেখ শামীমের পরিচিত বলে জানান তিনি।

শেখ শামীমের লাশ তাঁর বাড়ি হবিগঞ্জের মাধবপুর থানার শিমুলগর গ্রামে দাফন করা হয়েছে উল্লেখ করে পিবিআইয়ের এই কর্মকর্তা বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য তাঁর লাশ তুলতে আদালতে আবেদন করা হয়েছে। শেখ শামীমের নাম জাতীয় পরিচয়পত্রে আছে শেখ শফিকুল ইসলাম। শেখ শামীমের নিহত হওয়ায় আশুলিয়া আদালতে করা মামলার তথ্য সরকারি গেজেটে ওঠেনি। তবে আরেকটি মামলায় শেখ শফিকুল ইসলামের নাম সরকারি গেজেটে আছে।

যোগাযোগ করা হলে শেখ শামীমের ভাই শেখ জহিরুল ইসলাম বলেন, তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে শামীম দ্বিতীয় ছিলেন। তাঁর স্ত্রী শ্রবণপ্রতিবন্ধী। তাঁদের সন্তান নেই। এ পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামীর দেওয়া দুই লাখ টাকা পেয়েছেন তাঁরা।

গত ৫ আগস্ট ঢাকার আশুলিয়ার বাইপাইলে তিন রাস্তার মোড়ে অটোরিকশাচালক মো. বাবুলকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় বাবুলের বাবা মো. আবদুল ছালেক মামলা করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, বাবুল প্রতিদিনের মতো অটোরিকশা নিয়ে বের হন। বেলা তিনটার দিকে বাইপাইল তিন রাস্তার মোড়ে যান। এ সময় পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা আন্দোলনকারীদের ওপর আক্রমণ করে। এতে আঘাত পেয়ে বাবুল পড়ে যান। এরপর তাঁকে গুলি করা হয়।

মামলার এজাহার অনুযায়ী, বাবুল আশুলিয়ায় বাতানটেকে থাকতেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি বরিশাল শহরের কাজীপাড়ায়। তবে সেখানে গিয়ে এ নামে কাউকে পায়নি। মামলা তত্ত্বাবধানে যুক্ত পিবিআইয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও জানান, বাদীর ঠিকানায় গিয়ে কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মামলার কাগজপত্রে থাকা আবদুল ছালেকের মুঠোফোনে নম্বরে যোগাযোগ করা হলে আল আমিন নামের এক ব্যক্তি ফোন ধরেন। তিনি বলেন, তিনি বাবুল বা ছালেক নামের কাউকে চেনেন না এবং ঘটনা সম্পর্কেও জানেন না। আল আমিন পেশায় নির্মাণশ্রমিক।

গত বছরের ১৮ জুলাই বিকেলে উত্তরার আজমপুরে কাওছার মিয়া নিহত হওয়ার ঘটনায় তাঁর মা মোছা. পারুল খাতুন আদালতে হত্যা মামলা করেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ঘটনার দিন শরীরে একাধিক গুলি লেগে কাওছার নিহত হন। আসামিরা কাওছারকে হত্যার পর তাঁর লাশ গুম করেছে এবং আলামত ধ্বংস করেছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আবদুল মোত্তালিব হোসেন বলেন, বাদীকে খুঁজে পাননি তিনি। কাওছারের ঠিকানা দেওয়া হয়েছে তুরাগ থানার রানা ভোলা এলাকা। সেখানে তাঁদের কেউ থাকে না। তবে স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, কাওছারের মা গৃহকর্মীর কাজ করেন। পরে একদিন কাওছারের মা তাঁকে ফোন দিয়ে বলেন, অফিসে এসে তাঁর সঙ্গে দেখা করবেন। তিনি বিপদে আছেন। তবে এরপর আর তিনি আসেননি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, কাওছারের লাশ পাওয়া যায়নি। সরকারি গেজেটে তাঁর নাম নেই। আদালত তাঁকে (তদন্ত কর্মকর্তা) এই হত্যা মামলার প্রতিবেদন দিতে বলেছে।

 

 

 

 

messenger sharing button

whatsapp sharing button

জনপ্রিয়