
মুজিবনগর সরকারের নাম পরিবর্তনের কোনো ইচ্ছা অন্তর্বর্তী সরকারের নেই বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম। আজ বৃহস্পতিবার ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসে মেহেরপুরের মুজিবনগরে মুজিবনগর স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি এ কথা জানান।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেন, মুজিবনগর সরকারের নাম পরিবর্তনের কোনো ইচ্ছা এ সরকারের নেই। কারণ ইতিহাস কখন মোছা যায় না। ইতিহাসকে ইতিহাসের জায়গায় রাখতে হয়। পরবর্তী নির্বাচিত সরকার এসে কী করবে সেটি তাদের ব্যাপার।
১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল তৎকালীন মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলা গ্রামের আম্রকাননে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করে। এ আম্রকাননকে পরে ‘মুজিবনগর’ নামকরণ করে বাংলাদেশের অস্থায়ী রাজধানী ঘোষণা করা হয়।
সাংবাদিকদের প্রশ্নে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, মুজিবনগর সরকার প্রবাসী কিংবা অস্থায়ী সরকার নয়। এ সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। তাই এই সরকারই সাংবিধানিক সরকার। ইতিহাসের ওপর কোনো কিছু আরোপ করা যায় না। ইতিহাস ইতিহাসই। এ সরকারের শপথ গ্রহণ একটি গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। এটি চিরকাল শ্রদ্ধা–ভালোবাসার মধ্য দিয়ে সবাইকে স্মরণ রাখা দরকার।
ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বিষয়ে তিনি বলেন, সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধার তালিকা তৈরি করতে সরকার বদ্ধ পরিকর। সেই লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। তবে আদালতে মামলা থাকার কারণে সেটি সম্ভব হচ্ছে না। মামলার রায়ের জন্য অপেক্ষা করছে সরকার। এ ব্যাপারে প্রায় ২ হাজার ৭’শর ওপরে আদালতে মামলা রয়েছে। এ মামলা নিষ্পত্তি হবার পরই মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক তালিকা প্রণয়ন করা হবে।
এদিকে মুজিবনগর আম্রকাননে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ভাস্কর্যগুলো ভাঙচুরের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, পুরো স্থাপনা ঘুরে দেখা হচ্ছে। দ্রুত ভাস্কর্যগুলো স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। তবে ঐতিহাসিক বস্তুনিষ্ঠতার ওপর ভিত্তি করে স্থাপনাগুলো নির্মাণ করা হবে। ভালো কিছু এখানে আরোপিত করা হবে না, সত্যিকার ইতিহাস মোচনও করা হবে না।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণলয়ের সচিব ইসরাত জাহান, মেহেরপুর জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ ও পুলিশ সুপার মাকসুদা আক্তার খানমসহ প্রাশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।
পুষ্পার্ঘ অর্পণ শেষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি কমপ্লেক্স এবং আমবাগানের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেন।