
ভবিষ্যৎ প্রজন্মের আইনজীবীদের প্রতি বার্তা দিয়ে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, ‘জলবায়ু ন্যায়বিচার এখন আর কোনো বিলম্বিত আদর্শ নয়, বরং এটি একটি সংবিধানিক অঙ্গীকার। আইন প্রণয়ন, আইনের প্রয়োগ এবং বিচার প্রক্রিয়ায় পরিবেশ সুরক্ষার প্রতি নতুন প্রজন্মের আইনজীবী ও বিচারকদের সুনির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করতে হবে।’
তিনি আরো বলেছেন, ‘জলবায়ু সংকট কেবল একটি পরিবেশগত জরুরি অবস্থা নয়, বরং এটি একটি ন্যায়বিচার সংশ্লিষ্ট সংকটও বটে। উন্নত দেশগুলো কার্বন নিঃসরণে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ প্রভাবের মুখে পড়েছে তুলনামূলকভাবে কম কার্বন নিঃসরণকারী উন্নয়নশীল দেশগুলো।’
গত সোমবার (২৮ এপ্রিল) আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় জলবায়ু ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদানের সময় এসব কথা বলেন প্রধান বিচারপতি।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেছেন নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি আবুধাবির আইন বিভাগের অধ্যাপক পাবলস এলেফথেরিয়াডিস। অনুষ্ঠানটিতে মূলত বাংলাদেশের মতো পরিবেশগত ঝুঁকির শিকার উন্নয়নশীল দেশগুলির দৃষ্টিকোণ থেকে সংবিধান, মানবাধিকার এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মধ্যকার সম্পর্ককে বিশ্লেষণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাপী জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় প্যারিস চুক্তির কার্যকারিতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি। একইসঙ্গে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর সহায়তায় শক্তিশালী আর্থিক ও আইনি কাঠামো গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার কথা সঙ্গে তুলে ধরেন।
এসময় তিনি পরিবেশ বিপর্যয়ের জন্য দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে একটি বৈশ্বিক নৈতিক মানদণ্ড গঠনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে বাস্তুচ্যুত জনগণের জীবন, আশ্রয় ও জীবিকা সুরক্ষিত রাখতে সক্ষম এমন আইনগত কাঠামো প্রবর্তনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বাংলাদেশের সংবিধানে পরিবেশ সুরক্ষার প্রতি দেশের অঙ্গীকারের কথা উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি আরো বলেছেন, ‘বাংলাদেশের বিচার বিভাগ অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে পরিবেশ রক্ষার জন্য বিভিন্ন স্থায়ী আইনগত উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।’ বিশেষ করে জাহাজ ভাঙা শিল্পে পরিবেশগত মান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশের উচ্চ আদালত কর্তৃক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রায় প্রদানের কথা উল্লেখ করেন তিনি।