ঢাকা রোববার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ আর্কাইভস ই পেপার

nogod
nogod
bkash
bkash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
nogod
nogod
bkash
bkash

‘মাইন্ডসেট কৌশল’ অগ্রযাত্রার অব্যর্থ হাতিয়ার

মতামত

এসএম মোজাম্মেল কবির

প্রকাশিত: ০০:০০, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সর্বশেষ

‘মাইন্ডসেট কৌশল’ অগ্রযাত্রার অব্যর্থ হাতিয়ার

প্রত্যেক মানুষের জীবনে সফলতা অর্জনের পথচলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তার মাইন্ডসেট। মাইন্ডসেট বলতে আমরা মূলত ব্যক্তির মানসিকতা এবং তার জীবন বা কাজের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির কথা বুঝি। একজন ব্যক্তি যেভাবে সমস্যাকে দেখেন, কীভাবে সমাধান খোঁজেন এবং কীভাবে নিজেকে উন্নত করার চেষ্টায় থাকেন, তা অনেকাংশে নির্ভর করে তার মাইন্ডসেটের ওপর। সঠিক মাইন্ডসেট কৌশল মানুষকে লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করে এবং প্রতিকূল পরিস্থিতিতে স্থির থাকতে সাহায্য করে।

সাধারণত মাইন্ডসেট দুই ধরনের হয়ে থাকে। ফিক্সড মাইন্ডসেট: ফিক্সড মাইন্ডসেটের মানুষ বিশ্বাস করেন যে তাদের বুদ্ধিমত্তা, ক্ষমতা এবং প্রতিভা স্থায়ী। তারা নতুন কিছু শেখার ক্ষেত্রে অনাগ্রহী এবং পরিবর্তনকে স্বীকার করতে চায় না। এতে করে তারা সুযোগ হারায় এবং নিজের সম্ভাবনাকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়।

গ্রোথ মাইন্ডসেট: গ্রোথ মাইন্ডসেটের মানুষ বিশ্বাস করেন যে তারা তাদের দক্ষতা, জ্ঞান এবং প্রতিভা চর্চার মাধ্যমে উন্নত করতে পারে। তারা ভুল থেকে শিখতে চায় এবং নতুন চ্যালেঞ্জকে গ্রহণ করতে প্রস্তুত থাকে। এই মাইন্ডসেট সফলতার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত।

সফলতা অর্জনের পথে সঠিক মাইন্ডসেট বিকাশের কিছু কৌশল আছে। ১. নেতিবাচক চিন্তাকে ইতিবাচক করা। নেতিবাচক চিন্তা আমাদের উন্নতির পথে বাধা সৃষ্টি করে। যখনই কোনো কাজ কঠিন মনে হয় বা সাফল্য অসম্ভব মনে হয়, তখন আমাদের মানসিক শক্তি দিয়ে তা ইতিবাচকভাবে ভাবতে হবে। ‘আমি পারবো না’ এর পরিবর্তে ‘আমি শিখে নেবো’ বলার অভ্যাস করতে হবে।

২. লক্ষ্য নির্ধারণ এবং ক্ষুদ্র পদক্ষেপ গ্রহণ করা। বড় লক্ষ্যগুলোকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে কাজ করা উচিত। এতে করে প্রতিটি পদক্ষেপে আমরা সাফল্যের স্বাদ পাই এবং আত্মবিশ্বাস বাড়ে। এটা আমাদের মানসিকতাকে দৃঢ় করে এবং চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করে।

৩. চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করা। জীবনের প্রতিটি চ্যালেঞ্জকে শেখার সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করা উচিত। নতুন কিছু শেখা, দক্ষতা বাড়ানো এবং সমাধান খোঁজা সবকিছুই আমাদের গ্রোথ মাইন্ডসেটকে উৎসাহিত করে।

৪. ব্যর্থতা আসলে সফলতার পথে একটি ধাপ। যদি কোনো কাজে ব্যর্থ হই, তবে তা থেকে শেখার সুযোগ নিতে হবে। নিজের ভুলগুলো বিশ্লেষণ করে তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে, যা পরবর্তীতে সফলতার পথে আমাদের সাহায্য করবে।

৫. অন্যদের সফলতা থেকে অনুপ্রাণিত হওয়া। অন্যের সফলতা দেখে হতাশ না হয়ে অনুপ্রাণিত হতে হবে। তাদের কাছ থেকে শিখতে হবে, কীভাবে তারা সফল হয়েছে এবং সেই কৌশলগুলো নিজ জীবনে প্রয়োগ করতে হবে।

মাইন্ডসেট পরিবর্তনের কিছু কার্যকরী টিপস আছে। যেমন-নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করুন এবং প্রতিদিন অন্তত একবার নিজের সীমানার বাইরে গিয়ে কিছু করুন।

আত্মসমালোচনা থেকে দূরে থাকুন এবং ইতিবাচক আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলুন। ধৈর্য ধরুন এবং দীর্ঘমেয়াদি ফলাফলের দিকে মনোনিবেশ করুন। নিয়মিত নিজের লক্ষ্যগুলো পর্যালোচনা করুন এবং সেগুলো কতোটুকু অর্জিত হয়েছে তা বিবেচনা করুন।

সাফল্যের মূল চাবিকাঠি হলো মাইন্ডসেট। সঠিক মাইন্ডসেট গড়ে তোলার মাধ্যমে আমরা নিজেদের সাফল্যের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। গ্রোথ মাইন্ডসেট অর্জনের জন্য প্রয়োজন ধৈর্য, অধ্যবসায় ও শেখার ইচ্ছা। মাইন্ডসেট পরিবর্তনের মাধ্যমে জীবনের যেকোনো ক্ষেত্রে সফল হওয়া সম্ভব, তা ব্যক্তিগত হোক কিংবা পেশাগত।

লেখক: প্রধান শিক্ষক, রোহিতপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেরানীগঞ্জ, ঢাকা

জনপ্রিয়