ঢাকা শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ , ৬ পৌষ ১৪৩১ আর্কাইভস ই পেপার

bkash
bkash
udvash
udvash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
bkash
bkash
udvash
udvash

অধিভুক্ত ননএমপিও কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগ প্রসঙ্গে 

মতামত

আশরাফুল ইসলাম

প্রকাশিত: ০০:১০, ১৫ অক্টোবর ২০২৪

সর্বশেষ

অধিভুক্ত ননএমপিও কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগ প্রসঙ্গে 

জাতীয় বিশ্ববিদ্যায়ের অধিভুক্ত কলেজের সংখ্যা ২ হাজার ২৫৪টি। এর মধ্যে অন্তত আটশটি কলেজ অধিভুক্ত থাকলেও স্নাতক স্তর এমপিওভুক্ত নয়। উচ্চ মাধ্যমিক কলেজগুলোতে গর্ভনিং বডিদের সংশ্লিষ্ট এলাকার শিক্ষা বোর্ড নিয়ন্ত্রণ করে। স্নাতক অধিভুক্ত কলেজের গর্ভনিংবডিদের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ন্ত্রণ করে। দুই ধরণের প্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামো ভিন্ন। কিন্তু সব ধরনের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন-ভাতা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আর তাদের নিয়ন্ত্রণ করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।

এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষ নিয়োগের নির্দিষ্ট নীতিমালা জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এখানেই সৃষ্টি হয়েছে জটিলতা। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে পরবর্তীতে সংশোধিত জনবল কাঠামো ২৮-০৩-২০২১ এর পরিশিষ্ট-ঘ এ নিয়োগ যোগ্যতায় বলা হয়েছে। 

স্নাতক কলেজের অধ্যক্ষ হতে গেলে প্রার্থীকে উচ্চ মাধ্যমিক কলেজের অধ্যক্ষ অথবা স্নাতক কলেজের উপাধ্যক্ষ হিসেবে ৩ বছরের অভিজ্ঞতাসহ ১৫ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। তাদের বেতন গ্রেড হবে-৪ আর স্কেল হবে ৫০ হাজার টাকা।  

উচ্চ মাধ্যমিক কলেজের অধ্যক্ষ বা স্নাতক কলেজের উপাধ্যক্ষ হতে গেলে প্রার্থীকে এমপিওভুক্ত হিসেবে জ্যেষ্ঠ প্রভাষক/ সহকারী অধ্যাপক হিসেবে ৩ বছরের অভিজ্ঞতাসহ ১২ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা। তাদের বেতন গ্রেড হবে-৫ আর স্কেল হবে -৪৩ হাজার টাকা। এ দুটোই ঠিক আছে।

জটিলতা হলো স্নাতক অধিভুক্ত কিন্তু এমপিওভুক্ত নয় এমন কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগের ক্ষেত্রে। এই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষরা বেতন পাবেন ৫ম গ্রেডে যার স্কেল-৪৩ হাজার। আর উপাধ্যক্ষের বেতন নাই।

স্বতন্ত্র উচ্চ মাধ্যমিক কলেজগুলোতে অধ্যক্ষ নিয়োগে জ্যেষ্ঠ প্রভাষক/ সহকারী অধ্যাপক হিসেবে ৩ বছরের অভিজ্ঞতাসহ ১২ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতায় নিয়োগ দেয়া যাচ্ছে। কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত থাকা কলেজেগুলোর অধ্যক্ষ নিয়োগে ডিগ্রি স্তরের অধিভুক্ত কলেজের নীতিমালা অনুসরণ করতে হয়। তা নাহলে অধ্যক্ষ নিয়োগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যায়ল অনুমতি দেয় না। তাই নিয়োগও দেয়া যায় না। আবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তর থেকেও কোনো নির্দেশনা নাই। 

এখন কথা হলো ডিগ্রি স্তরের যোগ্যতা ৪র্থ গ্রেড নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের কলেজে অধ্যক্ষ হতে হচ্ছে এবং বেতনও পাচ্ছেন উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের অর্থাৎ ৫ম গ্রেডে। এর ফলে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বেতন কমে যাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ- উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের কলেজ বা স্নাতক কলেজের উপাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে ৫ম গ্রেডে এমপিওভুক্ত হন। তিন বছরের অভিজ্ঞতা অর্জনকালীন তারা ৩টি ইনক্রিমেন্ট পাবেন। ফলে তাদের বেতন হবে ১ম ইনক্রিমেন্ট (৪৩০০০+৫% ২১৫০)= ৪৫১৫০/-, ২য় ইনক্রিমেন্ট- ৪৫১৫০+৫% ২২৬০)= ৪৭৪১০/-, ৩য় ইনক্রিমেন্ট (৪৭৪১০+৫% ২৩৮০)= ৪৯৭৯০/- টাকা। এতে তার মাসিক বেতন ঘাটতি হবে অন্তত ছয় হাজার টাকা আর নিয়োগ এবং এমপিওভুক্তি সংক্রান্ত ঝক্কি-ঝামেলাতো আছেই।

তাই এই প্রকার কলেজে কেউ আসছেন না বা আসতে আগ্রহী হচ্ছেন না। দীর্ঘ সময় উক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো অভিভাবক শূন্য হয়ে পড়ছে। ফলে নানা প্রকার জটিলতায় ভুগতে হচ্ছে ওই সব প্রতিষ্ঠানকে। নতুন এই নীতিমালা জারির পর এই ধরণের কলেজের শূন্য হওয়া অধ্যক্ষ পদের বিপরিতে একজনও নিয়োগ নেন নাই বা পান নাই। এই জটিলতা নিরসনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা প্রয়োজন। তা নাহলে এই জটিলতা বাড়বে বৈ কমবে না।

আবার এই বেতন কাঠামো যোগ্যতা থাকলেও ডিগ্রি কলেজের পদোন্নতিপ্রাপ্ত প্রভাষকদের পদবি বলা হয় সহকারী অধ্যাপক অপরদিকে উচ্চ মাধ্যমিক কলেজের পদবি বলা হয় জ্যেষ্ঠ প্রভাষক। এটা নিয়েও লাখো প্রভাষকের রয়েছে চরম মনোকষ্ট।

লেখক: শিক্ষক

জনপ্রিয়