ঢাকা শুক্রবার, ০৩ জানুয়ারি ২০২৫ , ১৯ পৌষ ১৪৩১ আর্কাইভস ই পেপার

bkash
bkash
udvash
udvash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
bkash
bkash
udvash
udvash

শিক্ষক নিবন্ধনের ভাইভা নিয়ে চিন্তার কিছু নেই

মতামত

আমাদের বার্তা ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:১০, ২৮ অক্টোবর ২০২৪

সর্বশেষ

শিক্ষক নিবন্ধনের ভাইভা নিয়ে চিন্তার কিছু নেই

রোববার (২৭ অক্টোবর) থেকে এনটিআরসিএর (বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ) অধীনে ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। শিক্ষক নিবন্ধনের সনদ অর্জনে মৌখিক বা ভাইভা পরীক্ষা হলো সর্বশেষ ধাপ। ভাইভা পরীক্ষা নিয়ে অধিকাংশ চাকরিপ্রত্যাশীদের মধ্যে কিছুটা হলেও দুশ্চিন্তা কাজ করে। একটু সতর্ক থাকলে ভাইভা পরীক্ষায় অনায়াসে ভালো নম্বর নিয়ে উত্তীর্ণ হওয়া সম্ভব। আসন্ন ভাইভা পরীক্ষার প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ও সতর্কতা নিয়ে আলোকপাত করা হলো- 

নম্বর বন্টন: ভাইভা পরীক্ষায় মোট নম্বর ২০। নম্বর দুইভাগে বিভক্ত। এর মধ্যে অর্জিত সার্টিফিকেটে ১২ এবং মৌখিক পরীক্ষায় ৮ নম্বর। স্কুল, স্কুল-২ ও কলেজে প্রতিটি ক্যাটাগরিতে ভাইভায় পাস নম্বর ৪০%। অর্জিত সনদ বলতে এসএসসি বা দাখিল সনদ, এইচএসসি বা আলিম বা ডিপ্লোমা সনদ, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সনদ বোঝাবে। এসব সনদে প্রথম শ্রেণি/দ্বিতীয় শ্রেণি/তৃতীয় শ্রেণি প্রাপ্তির ওপর ১২-এর মধ্যে কত পাওয়া যাবে তা নির্ভর করবে। সব পর্যায়ের সনদে প্রথম শ্রেণি থাকায় ১২-এর মধ্যে অনেক পরীক্ষার্থী পুরো নম্বরই পাবেন। সাধারণ হিসাব অনুযায়ী, অধিকাংশ পরীক্ষার্থীকে ১০-১১ এর কাছাকাছি নম্বর পেতে দেখা যায়। বাদবাকি ৮ নম্বর মৌখিক পরীক্ষায় প্রশ্নের সঠিক উত্তরের ওপর নির্ভর করে। এক্ষেত্রে বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি থাকলে ভালো নম্বর পাওয়া যায়। সত্যি কথা বলতে, শিক্ষক নিবন্ধনের ভাইভা পরীক্ষায় ফেল করার সুযোগ নেই বললেই চলে। সনদসহ বিভিন্ন ডকুমেন্টে তথ্যগত কোনো ভুল না থাকলে এবং অস্বাভাবিক আচরণ না করলে ভাইভা পরীক্ষায় সহজেই উত্তীর্ণ হওয়া সম্ভব। তবে অতি দুঃখের বিষয়, ভাইভা পরীক্ষার নম্বর নিয়োগ পাওয়ার ক্ষেত্রে জাতীয় মেধাতালিকায় অন্তর্ভুক্তি করা হয় না। 

সব পর্যায়ের সনদ যাচাই: ভাইভার দিন আবেদন করার সময় দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই করা হয়। ভাইভার সময় লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মূল প্রবেশপত্র, অর্জিত সব সনদের  মূল কপি, সনদের নম্বরপত্রের মূলকপি, আবেদনে দেখানো কোনো প্রশিক্ষণ সনদের মূল কপি, এনআইডির মূল কপি বা জন্ম নিবন্ধন সনদ ও কর্তৃপক্ষের চাওয়া যেকোনো সনদের কপি যাচাই করা হবে। এছাড়া সব সনদের এক কপি ফটোকপি সঙ্গে রাখলে ভালো হবে। আবেদনের সময় দেয়া তথ্য ও ভাইভার সময় দেখানো তথ্যের মধ্যে অসঙ্গতি হলে পরীক্ষার্থীকে অকৃতকার্য ঘোষণা করা হয়। এমনকি কোনো ধরনের জালিয়াতি কিংবা মিথ্যা তথ্যের প্রমাণ পাওয়া গেলে পরীক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়াও হতে পারে। 

বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি: শিক্ষক নিবন্ধনের ভাইভায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি। ভাইভার প্রস্তুতি বলতে মূলত বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতিকেই বোঝায়। বেশিরভাগ প্রশ্ন করা হয় ঐচ্ছিক বিষয় বা লিখিত বিষয় সংশ্লিষ্ট সিলেবাস থেকে। লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়ার সময় মৌখিক পরীক্ষার প্রস্তুতির অনেকটাই সম্পন্ন হয়ে যায়। স্নাতক পর্যায়ের পঠিত বিষয় বা যে বিষয়ের শিক্ষক হতে ইচ্ছুক সে বিষয়ের ওপর ছোট ছোট প্রশ্নের ভিত্তিতে প্রস্তুতি নিতে হবে। বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি ছাড়া অনেক সময়

নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, নিজ জেলা, নিজ জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি, অতি সাম্প্রতিক বিষয়, সাধারণ জ্ঞান ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হয়।

ফলাফল ঘোষণা: অর্জিত সনদের নম্বর(১২) ও মৌখিক পরীক্ষার(০৮) ওপর পৃথকভাবে কৃতকার্য হলেই কেবল পরীক্ষার্থীকে ভাইভা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ঘোষণা করে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়। ভাইভায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হলে ফলাফল পেতে কিছুটা সময় লাগতে পারে। তবে পুরো ভাইভা প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ২৫ থেকে ৪০ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত ফলাফল পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ফলাফল প্রকাশ সাপেক্ষে এনটিআরসিএ’র ওয়েবসাইটে সরাসরি ফলাফল পাওয়া যাবে। অতঃপর রোল নম্বর দিয়ে মেধাক্রম জানা যাবে। কৃতকার্য হওয়া সম্ভাব্য শিক্ষকদের এনটিআরসিএ থেকে সনদ দেয়া হবে। সনদ জেলা অফিস থেকে সংগ্রহ করতে হবে। চূড়ান্ত ফলাফলের পর সাধারণত জেলা অফিসে শিক্ষক নিবন্ধনের সনদ ৯০ দিনের মধ্যে পাওয়া যায়। সবশেষে মেধাতালিকায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে নাম অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে আসন্ন গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের মাধ্যমে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করা যাবে।

সাধারণ কথা: ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের ভাইভা হতে যাচ্ছে রেকর্ডসংখ্যক প্রার্থীদের ভাইভা পরীক্ষা। স্কুল, স্কুল-২ ও কলেজ মিলিয়ে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৮৩ হাজারের বেশি পরীক্ষার্থী আসন্ন ভাইভা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন। ভাইভায় পোশাক নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। নারী ও পুরুষ পরীক্ষার্থী উভয়ের জন্য মার্জিত, রুচিশীল ও ফরমাল পোশাক হওয়া চাই। পুরুষদের জন্য সাদা ফুলশার্ট ও কালো রঙের প্যান্ট এবং নারীদের জন্য শাড়ি বা সালোয়ার কামিজ ভালো হবে। একটা প্রশ্ন প্রায়ই শোনা যায় যে, ভাইভাতে কয়টা প্রশ্ন এবং কত মিনিট রাখা হয়? ধরাবাধা কোনো নিয়ম না থাকলেও আগের ভাইভা অভিজ্ঞতা ও ধারণা থেকে বলা যায়, একজন পরীক্ষার্থীকে ভাইভা কক্ষে ৪ থেকে ৬ মিনিট রাখার পাশাপাশি এবং ৪ থেকে ৭টি প্রশ্ন করা হতে পারে। মূল সনদসহ কাগজপত্রে তথ্যগত কোনো সমস্যা না থাকলে এবং ভাইভা রুমে বিনয়ী তথা শিক্ষকসুলভ আচরণ করলে কৃতকার্য নিশ্চিত- এতে কোনো সন্দেহ নেই।

লেখক: শিক্ষক ও ১৪তম শিক্ষক নিবন্ধনে কলেজ পর্যায়ে ভাইভা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ

জনপ্রিয়