ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ , ১১ পৌষ ১৪৩১ আর্কাইভস ই পেপার

bkash
bkash
udvash
udvash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
bkash
bkash
udvash
udvash

অ্যারিস্টটলের কাব্যতত্ত্ব বিশ্লেষণ

মতামত

আবুল কালাম আজাদ, আমাদের বার্তা

প্রকাশিত: ০৮:৩০, ৬ ডিসেম্বর ২০২৪

সর্বশেষ

অ্যারিস্টটলের কাব্যতত্ত্ব বিশ্লেষণ

অ্যারিস্টটল (খ্রীষ্টপূর্ব ৩৮৪-৩২২ অব্দ) ছিলেন একজন প্রসিদ্ধ গ্রিক দার্শনিক, সাহিত্যিক, সমাজবিজ্ঞানী ও সমালোচক। পাশ্চাত্য সংস্কৃতির অন্যতম শ্রেষ্ঠ এবং প্রভাবশালী চিন্তাবিদও বলা হয় তাকে। তার সময়ে জ্ঞানের পরিচিত সব শাখাতেই তিনি অবদান রেখেছেন। মেসিডনের রাজবৈদ্যের পুত্র অ্যারিস্টটল। ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন বুদ্ধিদীপ্ত ও মৃদুভাষী এক তরুণ। কিন্তু তার কথাবার্তা, চালচলন ও পোশাক-পরিচ্ছদে ছিলো আভিজাত্যের ছাপ। তার আকর্ষণ ছিলো বিচিত্র।

নগরনীতি, কাব্যতত্ত্ব, চিকিৎসা বিদ্যা, ইতিহাস, তর্কশাস্ত্র, গণিত, ভাষণকলা, প্রাকৃতিক বিজ্ঞান, প্রাণিবিজ্ঞান প্রভৃতিসহ-জ্ঞানের সমস্ত ক্ষেত্রেই তার ছিলো অগাধ বিচরণ। সতেরো বছর বয়সে তিনি অ্যাথেন্স আসেন এবং সেখানে মহামনীষী প্লেটোর অধীনে কুড়ি বছর দীক্ষা গ্রহণ করেন। সে যুগের শ্রেষ্ঠ মনীষী প্লেটোর সঙ্গে অ্যারিস্টটলের সংযোগ হলে প্লেটো পরিহাসের ছলে বলেছিলেন, ‘তার আকাডেমির দুটো ভাগ। অ্যারিস্টটল হলো আকাডেমির মস্তিষ্ক আর অন্য সব ছাত্র তার দেহ।’ 

প্লেটোর মৃত্যুর পর অ্যারিস্টটল কয়েক বছর এশিয়া মাইনরে শিক্ষকতার কাজ করেন। খ্রীষ্টপূর্ব ৩৪২ অব্দে অ্যারিস্টটল মেসিডোনিয়ার রাজা ফিলিপের শিশুপুত্র আলেকজান্ডারের গৃহ শিক্ষক নিযুক্ত হন। প্লেটোর নিকট পড়াশোনা করলেও অ্যারিস্টটল গুরুর বিশ্বজনীনতা তত্ত্বের বিরোধিতা করেন। প্লেটো বলেছিলেন,‘কেবলমাত্র ধারণাই যথার্থ অর্থে বাস্তব।’ আর অ্যারিস্টটল দাবি করেছিলেন যে, ‘কেবল স্বতন্ত্র বস্তুই যথার্থ অর্থে বাস্তব।’ অ্যারিস্টটলকে সাহিত্য সমালোচনার জনক বলা হয়। পোয়েটিক্স (কাব্যতত্ত্ব) তার একটি অনন্য সমালোচনামূলক গ্রন্থ। আমাদের অন্বিষ্ট পোয়েটিক্স (কাব্যতত্ত্ব) গ্রন্থের আলোকে অ্যারিস্টটলের কাব্যচিন্তা ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে একটি আলোচনা উপস্থাপন করা।

অ্যারিস্টটলের ‘কাব্যেরশিল্পরূপ’ সম্পর্কিত প্রবন্ধটি সাধারণত কাব্যতত্ত্ব নামে পরিচিত। অ্যারিস্টটল নিজে কখনো এটিকে প্রবন্ধ হিসেবে উপস্থাপন করতে চাননি। ধারণা করা হয়, ছাত্রদের উদ্দেশে  তিনি যে সব বক্তব্য দিয়েছেন এটিতে কেবল সেইসব বক্তৃতার স্মারকলিপি লিখিত হয়েছে, যা অসংলগ্ন, বিচ্ছিন্ন, অসুবিধাজনকভাবে সংক্ষিপ্ত এবং অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ে পূর্ণ। এতে আবশ্যকীয় ধারণাসমূহ থেকে গেছে অব্যাখ্যাত। এতো সব খুঁত থাকা সত্ত্বেও কাব্যতত্ত্ব একটি চিরায়ত গ্রন্থ। এখানে যুক্তিপ্রণালীর বিকাশ ঘটেছে মহিমাময়ভাবে। যুক্তিপ্রণালিটির গুণে কাব্যতত্ত্ব সাহিত্যের শুধু সর্বপ্রথম পুঙ্খানুপুঙ্খ দার্শনিক আলোচনাই হয়নি, হয়ে উঠেছে পরবর্তী আলোচনাসমূহের ভিত্তি।
দার্শনিক প্লেটো নিজে কবি ছিলেন। তাই তার কবিসত্তা দার্শনিক সত্তায় মিশে গেছে। তিনি কাব্যে বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিলেন। তার বক্তব্য, ‘কাব্য সত্য থেকে বহু দূরে, কাব্য এক ছায়ার ছায়া, কাব্য অসত্য ও অনৈতিক।’ তাই প্লেটোর কল্পিত আদর্শ রাষ্ট্রে কবির স্থান নেই।

অ্যারিস্টটল দীর্ঘকাল ভেবেছেন, প্লেটোর যুক্তিগুলো নিয়ে চিন্তা করেছেন। আর সেই ভাবনাগুলোর পরিণতিই হচ্ছে ‘কাব্যতত্ত্ব’। বিভিন্ন সময় অ্যারিস্টটলের সঙ্গে তর্ক হয়েছে জ্ঞানবৃদ্ধ প্লেটোর। কবিতার সঙ্গে সংগ্রামে যিনি অন্তরে অন্তরে বিক্ষত। কাব্যতত্ত্ব প্লেটোর কাব্য বিরোধিতার বিরোধিতা। হোমার থেকে গ্রীক সাহিত্যের ইতিহাস শুরু। তাকে প্লেটো বন্দনা জানিয়েছেন। অ্যারিস্টটল তাকে বলেছেন কবিশ্রেষ্ঠ। হোমার পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ দু’টি মহাকাব্য ইলিয়াড ও ওডিসির রচয়িতা।

কাব্যতত্ত্বের সূত্রগুলো গ্রিক সাহিত্যজ্ঞান থেকে উদ্ভুত হয়ে বিশ্বজনীনতা লাভ করেছে। তবে এর মূলে অবশ্যই অ্যারিস্টটলের অন্তর্দৃষ্টি, বিশ্লেষণের প্রতিভা এবং সাহিত্যবোধের গভীরতার কথা স্বীকার করতে হবে। কাব্যতত্ত্বে আলোচনার প্রধান বিষয় ট্রাজেডি ও মহাকাব্য। প্লেটোর কথায় কাব্যের বিরোধিতার আভাস পাওয়া যায়। তিনি বলেছেন, কাব্য সত্য থেকে তিন ধাপ দূরে। সত্য হলো কতগুলো ভাব বা আইডিয়া। বস্তুজগৎ তার অনুকরণ। দ্বিতীয়ত, কাব্যের আবেদন মনের দুর্বলতার কাছে, মনের শ্রেষ্ঠত্বে কাছে নয়। সে জন্যেই কাব্য আমাদের বুদ্ধি, যুক্তি ও চিন্তাকে বিনষ্ট করে। তৃতীয়ত: কাব্য সমাজ জীবনের আদর্শের বিরোধী হতে পারে।

অ্যারিস্টটল প্লেটোর প্রতিটি বক্তব্য সম্পর্কে গভীরভাবে ভেবেছেন। প্লেটোর চিন্তাজগতকে আশ্রয় করেই তার কাব্যচিন্তার জগৎ গড়ে উঠেছে। অ্যারিস্টটলের কাছে এই প্রত্যক্ষ জগৎ সত্য, মায়া নয়। অতএব, তার মতে কাব্য মূল থেকে আদৌ তিন ধাপ দূরে নয়। দ্বিতীয়ত, কাব্য আমাদের আবেগকে জাগায়, চিন্তাকে উদ্বেলিত এবং উত্তেজিত করে-এ কথা সত্য। কিন্তু কাব্যের সত্য বিশ্বজনীন সত্য। অর্থাৎ মানুষকে জানবার ও বুঝবার পক্ষে তার মূল্য অপরিসীম। তৃতীয়ত, কাব্য ও বাস্তবজীবনের ভালো মন্দ বিচারের মানদণ্ড হবে স্বতন্ত্র। অ্যারিস্টটলের কাব্যতত্ত্বের বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:

১. শিল্প অনুকরণ; শিল্পে শিল্পে পার্থক্য হয় অনুকরণের মাধ্যমে বিষয়ে অথবা পদ্ধতিতে।
২. কাব্যের উদ্ভব ও বিকাশ থেকেই ট্রাজেডি ও কমেডির সূচনা হয়। 
৩. ট্র্যাজেডি বলা হয় একটি ষড়শিল্প। এর কাহিনি, চরিত্র, অভিপ্রায়, ভাষা, সংগীত ও দৃশ্য-এ ছয়টি তার অঙ্গ। 
৪. ট্রাজেডিতে কাহিনির গঠন, কাহিনির ঐক্য, কাহিনির শ্রেণিবিভাগ, কাহিনি গঠনের আবশ্যিক উপাদান। 
৫. ট্রাজেডি হলো বহিরঙ্গ। 
৬. ট্রাজেডির পরিণামে আবেদন, করুণা ও ভীতির উদ্বোধন ও আবেগের পরিশোধন হয়। 
৭. চরিত্রের লক্ষ্য হয় চরিত্রটিকে সার্থকতায় নিয়ে যাওয়া।
৮. অভিপ্রায়ের সংজ্ঞা নির্ধারণ; অভিপ্রায়ের সঙ্গে ট্র্যাজেডির সম্পর্ক যুক্তকরণ। 
৯. ভাষার সার্থক ব্যবহার ও ভাষারীতি নিয়ে নিরীক্ষা।  
১০. মহাকাব্যের আকৃতি ও প্রকৃতি, ট্রাজেডির সঙ্গে তুলনা ও ট্র্যাজেডির শ্রেষ্ঠত্ব দেখানো । 
১১. মহাকাব্যের সত্য, কাব্য ও ইতিহাসের পার্থক্য নির্ধারণ।  
১২. কাব্যের নিজস্ব নিয়ম প্রতিস্থাপন; কাব্যের সমালোচনা পদ্ধতি নির্ধারণ। 

অ্যারিস্টটল বিভিন্ন শিল্পকর্মের মধ্যে তিনটি উপায়ে পার্থক্য নির্দেশ করেছেন। যেমন: বিষয়, মাধ্যম এবং পদ্ধতি। অ্যারিস্টটলের মতে, সাহিত্য সত্য, আর সত্য থেকেই আনন্দের বিকাশ। অ্যারিস্টটল শুধু আনন্দদায়ক বলেই কাব্যকে সম্মান করেননি, তাকে মূল্য দিয়েছেন তা জীবনের সর্বজনীন সত্যকে প্রকাশ করে বলে। কাব্যতত্ত্বে কমেডি সমন্ধে অল্প কয়েকটি কথা রয়েছে। হয়তো লুপ্ত দ্বিতীয় খণ্ডে কমেডি সমন্ধে বিস্তারিত আলোচনা ছিলো।

গীতিকবিতা সম্পর্কে অ্যারিস্টটল কোনো কথা বলেননি। কাব্যতত্ত্বের অধিকাংশ স্থান জুড়ে উঠে এসেছে ট্র্যাজেডি ও মহাকাব্যের আলোচনা। তবে ধারণা করা হয়, কাব্যতত্ত্ব শুধু ট্রাজেডিরই আলোচনা, মহাকাব্য উঠে এসেছে ট্র্যাজেডির সঙ্গে তার পার্থক্য দেখানোর জন্য।  ট্র্যাজেডি ও মহাকাব্যের গঠন একই। তবে ট্র্যাজেডি নাটকীয়, মহাকাব্য বর্ণনাত্মক। ট্র্যাজেডির আছে দৃশ্যসজ্জা, এটা লেখা হয় বিভিন্ন ছন্দে। মহাকাব্যে ব্যবহার হয় এক ছন্দ। মহাকাব্যের সব অঙ্গ আছে ট্র্যাজেডিতে কিন্তু ট্র্যাজেডির সব অঙ্গ মহাকাব্যে নেই। কাজ্যেই কাব্যতত্ত্ব এক অর্থে ট্র্যাজেডিতত্ত্ব। কিন্তু পোয়েটিকস্ গ্রন্থের মধ্যে অ্যারিস্টটল নানা মন্তব্য করেছেন-যা শিল্পচিন্তার ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সৌন্দর্য সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে অ্যারিস্টটল বলেছেন, ‘সৌন্দর্য নির্ভরশীল আয়তন ও সৌষম্যের ওপর। আয়তনের অতিব্যাপ্তি ও অব্যাপ্তি দুই-ই সৌন্দর্যের অন্তরায়।’

আয়তন সম্পর্কে অ্যারিস্টটল বলেছেন, ‘আয়তন আমাদের ইন্দ্রিয়ের সীমা দ্বারা নিয়ন্ত্রত। আয়তন বলতে বুঝতে হবে সমগ্রতার একটি ধারণা। তিনি শিল্পের বিভিন্ন অঙ্গের মধ্যে জৈবিক ঐক্যের কথাও বলেছেন। যদিও এক অর্থে কাব্যতত্ত্ব ‘ট্রাজেডিতত্ত্ব’ তবে বৃহত্তর অর্থে কাব্যতত্ত্ব শিল্প নির্মাণের কৌশল। কাহিনি ও চরিত্র সম্পর্কে অ্যারিস্টটলের দুইটি সূত্র বিশেষ মূল্যবান: অনিবার্যতা ও সম্ভাব্যতা। কাহিনির প্রত্যেকটি ঘটনা, চরিত্রের প্রত্যেকটি আচরণ কাহিনির ভেতর থেকেই উদ্ভূত হবে। বাইরে থেকে কোনো ভাবেই কিছু চাপিয়ে দেয়া হবে না।

কাহিনির গঠন সম্পর্কেও অ্যারিস্টটলের বক্তব্য বিশেষভাবে অনুধাবনযোগ্য। অ্যারিস্টটল কাহিনির কথা বলতে গিয়ে ‘মুখোস’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন যার অর্থ গল্প। আর আমরা তাকে প্লট বলি। কাহিনিকেই এরিস্টটল ট্র্যাজেডির প্রধান অঙ্গ বলেছেন। কাহিনিই ট্র্যাজেডির আত্মা। তবে আধুনিক সময়ে ট্র্যাজেডির ক্ষেত্রে অনেকেই চরিত্রকে প্রাধান্য দিয়েছেন। সাহিত্য বিচারের ক্ষেত্রে অ্যারিস্টটল একটি ব্যাপারে পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। সেটি হলো ভাষার ব্যবহার। ভাষা সম্পর্কে সচেতন ও সতর্কতা কাব্যতত্ত্বের একটি বড় অংশ জুড়ে আলোচিত হয়েছে। অ্যারিস্টটল ট্রাজেডির ক্রিয়ার মধ্যে একটি গভীর ঐক্য থাকার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছেন। তিনি নাটকে তিনটি ঐক্য থাকার কথা বলেছেন।যেমন: ১. ঘটনার ঐক্য  ২. সময়ের ঐক্য  ৩. স্থানের ঐক্য।

অ্যারিস্টটলের যেসব উক্তির জন্য পরবর্তী কাল বিপন্নবোধ করেছে তারমধ্যে সবচেয়ে জটিল হলো ‘কাথারসিস’। শব্দটির একটি অর্থ হলো চিকিৎসাশাস্ত্রগত: দেহের পরিশোধন। এর আরো একটি অর্থ আছে যা নৈতিক ও ধর্মীয় উপলব্ধি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যা মানুষকে পবিত্রীকরণ, পরিমার্জন বা পরিশুদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। সংগীত সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে অ্যারিস্টটল বলেছেন যে, দেখা যায় অনেক ব্যক্তি ধর্মীয় উন্মাদনার মধ্যে কাটান। এই উন্মাদনাকে জোর করে রুদ্ধ করা ঠিক নয়। তাতে রুদ্ধ আবেগ আরো শক্তিশালী হয়ে ওঠে। অ্যারিস্টটল বলেছেন, অবশ্যই মানুষ নাট্যশালায় যায় আনন্দ পেতে। সেই আনন্দ একটা বিশেষ আনন্দ এবং স্বতন্ত্র আনন্দ। ট্র্যাজেডি ভীতি ও করুণা জাগিয়ে তোলে আর সেই জাগরণেই মনে আসে আনন্দ।

কাব্যতত্ত্বে বহুবিতর্কের মূলে যে শব্দটি রয়েছে তা হলো ‘অনুকরণ’। প্লেটো অনুকরণ বলতে বুঝেছিলেন ‘নকল’ আর অ্যারিস্টটল বুঝেছেন সৃষ্টি। কবিকে প্রতি নিয়ত সৃষ্টি করতে হয়। কবি জীবনকে অনুকরণ করেন-এই কথাটির অর্থ দাঁড়ায় কবি জীবনকে নতুন ছকে গড়ে তোলেন। ট্র্যাজেডির ছয়টি অঙ্গের মধ্যে একটি অঙ্গ হলো দৃশ্য। অ্যারিস্টটল দৃশ্যকে সাহিত্য আলোচনায় খুব একটা গুরুত্ব দেননি। তিনি বলেছেন, দৃশ্য হলো প্রযোজনার অঙ্গ।

পরিশেষে, কাব্যতত্ত্ব গ্রন্থটি নিজস্ব বৈশিষ্ট্যের জন্য কয়েক শতাব্দী ধরে ইউরোপ তথা বিশ্বসাহিত্য সমালোচনার ধারায় শীর্ষস্থানে অবস্থান করছে। অ্যারিস্টটলের মতে, শিল্প আমাদের আনন্দ দেয় কারণ শিল্প সুন্দর। শিল্প একদিকে যেমন ভাবের, বোধের কর্ম, অন্যদিকে শিল্প একটি বৌদ্ধিক কর্ম। শিল্পের বিশ্লেষণের ওপরে অ্যারিস্টটল জোর দিয়েছেন। তবে সব সময় এ কথাটি মনে রেখেছেন, শিল্প একটি অখণ্ড ব্যাপার। এ অখণ্ডতাই তাকে সুন্দর করে সার্থক করে। অ্যারিস্টটলের কাব্যতত্ত্বের গৌরব তাই-এই অখণ্ডতায়।

লেখক: এমফিল গবেষক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়

 

জনপ্রিয়