ঢাকা শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ , ৬ পৌষ ১৪৩১ আর্কাইভস ই পেপার

bkash
bkash
udvash
udvash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
bkash
bkash
udvash
udvash

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটিতে বোর্ডের মনোনয়ন চালু হোক

মতামত

আব্দুল্লাহ ইবনে সাঈদ, আমাদের বার্তা

প্রকাশিত: ১২:৪৫, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪

সর্বশেষ

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটিতে বোর্ডের মনোনয়ন চালু হোক

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি কিংবা গভর্নিং বডি যাইহোক না কেনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দেখভালের সার্বিক দায়িত্ব তাদের ওপর। বিগত দুই যুগের সময়কালে প্রতিষ্ঠানের গুণগত ও মানসম্মত শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে এ কমিটি প্রায় সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে সভাপতি/সদস্য পদের মনোনয়ন জটিলতা, বিরোধ, মামলা, পক্ষ বিপক্ষের দ্বন্দ্ব ইত্যাদি অবস্থায় শিক্ষার উন্নয়নের বিপরীতে ধস নেমে এসেছে। এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সরকার সব সুযোগ সুবিধা যেমন- নিশ্চিত করেছে তেমনি জবাবদিহিতারও ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয় না। সভাপতিসহ কমিটির সদস্যরা কম শিক্ষিত হওয়ায় প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষা-দিক্ষার উন্নয়ন, শিক্ষকদের দুর্বলতা কিংবা প্রতিষ্ঠান প্রধানের দুর্বলতা নিয়ে কোনো ধরনের ভূমিকা রাখা সম্ভব হয় না। তা ছাড়া নিয়োগ বাণিজ্য, অভ্যন্তরীণ অর্থ আত্মসাৎ তো রয়েছেই। এ অবস্থা থেকে মুক্তির লক্ষে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিয়মিত কমিটি গঠনে সংস্কারের কোনো বিকল্প নেই।

এ ছাড়া নিয়মিত কমিটি গঠনে ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডির সদস্য হতে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচনব্যবস্থা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পক্ষ-বিপক্ষ দ্বন্দ্বে শিক্ষার পরিবেশ মারাত্মকভাবে ব্যাহত করেছে। সম্মানী ব্যক্তি, যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যাক্তি কিংবা উচ্চশিক্ষিত শিক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ কখনো নির্বাচনে আসেন না। তাই নির্বাচনব্যবস্থার পরিবর্তে শিক্ষা বোর্ডের মাধ্যম মনোনীত ব্যাক্তিদের সমন্বয়ে নিয়মিত কমিটি গঠনে একটি প্রস্তাবনা তুলে ধরা হলো।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি পদে বসার যোগ্যতম ব্যক্তি তিনি হবেন, যিনি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কারিকুলাম, প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাব্যবস্থা, সরকারি নীতিমালা, চাকরিবিধি ও প্রাতিষ্ঠানিক আয়-ব্যয়ের সম্যক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন। এ ক্ষেত্রে সরকারি বা বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক, সহ-প্রধান শিক্ষক, সুপার, সহ-সুপার, অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রভাষক, সহকারী অধ্যাপক, অধ্যাপক, ১ম ও ২য় শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তা এবং পুলিশ-সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তারা সভাপতি পদের যোগ্য হবেন। সরকারি ও সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তা ছাড়া উল্লিখিত পদবির ব্যক্তিরা চাকরিরত অবস্থায় সভাপতি, অভিভাবক সদস্য কিংবা বিদ্যোৎসাহী সদস্য হতে পারবেন।

অভিভাবক সদস্য নির্বাচন

নিয়মিত কমিটি গঠনের লক্ষ্যে অভিভাবক সদস্য নির্বাচনে ভোটার তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। ভোটার তালিকায় প্রত্যেক অভিভাবক সদস্যের শিক্ষাগত যোগ্যতা, বয়স, পেশা ও বাসা থেকে প্রতিষ্ঠানের দুরত্ব উল্লেখ থাকবে।

সভাপতি ও বিদ্যোৎসাহী সদস্য

প্রতিষ্ঠান এলাকার নিকটতম থেকে ১ কিমি, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ২ কিমি মধ্যে উল্লিখিত সভাপতি ও বিদ্যোৎসাহী সদস্যের যোগ্যতাসম্পন্ন ১০ থেকে সর্বোচ্চ ২০ জন লোকের তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। তালিকায় নাম ঠিকানা শিক্ষাগত যোগ্যতা চাকরিকালীন পদবি বয়স ও দূরত্ব উল্লেখ থাকবে।

তালিকা

১. অভিভাবক তালিকা

২. সভাপতি ও বিদ্যোৎসাহী তালিকা

৩. দাতা সদস্য তালিকা প্রনয়ণ

৪. প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তালিকা প্রনয়ণ

৫. শিক্ষক-শিক্ষিকা তালিকা প্রনয়ণ

উল্লিখিত ৫টি তালিকা প্রস্তুতকরণের পর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি (চেয়ারম্যান বা মেয়র কর্তৃক ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সত্যায়ন করতে হবে। প্রতিষ্ঠানের নোটিশ বোডে ও নিকটবর্তী লোকসমাগম স্থানে এসব সত্যায়িত তালিকা টানিয়ে দিতে হবে। এরপর তালিকার স্ক্যান কপি অনুমোদনের জন্য বোর্ডে পাঠাতে হবে।

সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ড প্রতিষ্ঠানের ধরণ অনুযায়ী ম্যানেজিং/গভর্নি বডিতে অভিভাবক সদস্য তালিকা থেকে পছন্দমতো চারজন--সভাপতি একজন, বিদ্যোৎসাহী সদস্য একজন, দাতা ও প্রতিষ্ঠাতা একজন করে এবং শিক্ষক প্রতিনিধি ৩/৪ জন নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেবে।

অভিভাবক সদস্যদের মধ্য থেকে একজন সিনিয়রকে সভাপতির স্থলাভিষিক্ত সহ-সভাপতি পদ সৃষ্টি করা যেতে পারে।

কমিটির অনুমোদনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান, কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা, জনপ্রতিনিধি কিংবা সংসদ সদস্য কারো কোনোরূপ সুপারিশ গ্রহণযোগ্য হবে না।

লেথক: সহকারী অধ্যাপক, সাতদরগাহ বালিকা সিনিয়র মাদরাসা, কুড়িগ্রাম

(মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন)

 

জনপ্রিয়