মাদরাসা ও কারিগরির এমপিও নীতিমালা উপেক্ষা করে সম্প্রতি জারি হলো বেসরকারি এমপিওভুক্ত মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষকদের বদলি নীতিমালা। এতে শুধু এনটিআরসিএর (বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ) সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বদলির সুযোগ দেয়া হয়েছে, যা বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (মাদরাসা) এবং কারিগরির জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ এর সম্পূর্ণ পরিপন্থি।
সর্বশেষ জারিকৃত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (মাদরাসা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা- ২০১৮ এর ১২ নং ধারার (খ) উপধারায় বলা হয়েছে, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে এক প্রতিষ্ঠান থেকে অন্য প্রতিষ্ঠানে বদলি করতে পারবে।
একই কথা কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ এর ২৩ নং ধারার ৩ নং উপধারায়ও বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে এনটিআরসিএর সুপারিশপ্রাপ্ত ও কমিটির নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে কোনো পার্থক্য করা হয়নি। কিন্তু সম্প্রতি জারি করা নীতিমালায় শুধুমাত্র এনটিআরসিএর সুপারিশপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত করা এমপিও নীতিমালার সম্পূর্ণ পরিপন্থি।
বৈষম্যমূলক এ বদলি নীতিমালা জারি হওয়ার পর শিক্ষকদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। নানা রকম বাক বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ছেন শিক্ষকেরা। বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকেরা কমিটির নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের হেয় প্রতিপন্ন করছে। দ্বন্দ্ব সংঘাতের সৃষ্টি হয়েছে। এক গ্রুপ আরেক গ্রুপকে বিষবাক্য ছুড়ে দিচ্ছেন।
বদলি বঞ্চিত শিক্ষকদের দাবি, ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দের পূর্ব পর্যন্ত বহু শিক্ষক তাদের নিজ উপজেলায় পদ শূন্য না থাকায় দূরবর্তী প্রতিষ্ঠান গুলোতে নিয়োগ নিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে তারা বদলির দাবি করে আসছিলো। পূর্বের সব এমপিও নীতিমালায় বদলির বিষয়টি উল্লেখ থাকলেও বিগত কোনো সরকার তাদের দাবির প্রতি ভ্রুক্ষেপ করেনি। বর্তমান সরকার শিক্ষকদের দাবি আমলে নিলেও একপক্ষীয় বৈষম্যমূলক একটি বদলি চালু করায় তারা চরম ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন।
বদলি নীতিমালা সংশোধন করে এমপিওভুক্ত সব শিক্ষকদের বদলির আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে সর্বজনীন বদলি প্রত্যাশী শিক্ষক সংগঠন বদলি প্রত্যাশী শিক্ষক ফোরাম। দ্রুত সব শিক্ষককে বদলির আওতায় আনা না হলে তারা কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সম্ভাব্য বিশৃঙ্খলা এড়াতে এমপিও নীতিমালার আলোকে সর্বজনীন বদলির জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।
(মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন)
লেখক: শিক্ষক, জিরাইল আজিজিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদরাসা