২০২৪ খিষ্টাব্দ নানা চড়াই উৎরাই এর মধ্য দিয়ে পার হলো। চব্বিশের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হলো দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, যা ছিলো সম্পূর্ণরূপে একপাক্ষিক এবং খুবই বিতর্কিত। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ-এমন ডামি নির্বাচন জাতির ইতিহাসে এবারই প্রথম। জনগণ আবারো হজম করতে শুরু করলো শেখ হাসিনার স্বৈরশাসন। জুলাই মাসে শুরু হলো কোটা সংস্কার আন্দোলন। এই আন্দোলনে জেগে ওঠলো পুরো দেশ, দেশের জনগণ। ঘটলো অভূতপূর্ব এক গণ-বিস্ফোরণ। পুরো মাস জুড়ে আন্দোলন এগিয়ে চললো ছাত্রদের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে। সফলতা এলো ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার সম্মিলিত কৃতিত্বে।
আন্দোলনটি পরিচালিত হয়েছিলো হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে, যে সরকার হত্যা করেছিলো গণতন্ত্র, হরণ করেছিল বাকস্বাধীনতা। কেড়ে নিয়েছিল ভোটাধিকার। নিজেকে পরিচিত করেছিলো অসীম ক্ষমতার অধিকারী হিসেবে, যার কাছে মানুষের জীবনের চেয়ে ক্ষমতাই ছিলো মুখ্য। মানুষের চাওয়া-পাওয়াকে গুরুত্ব দেননি যিনি, বরং ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য যা যা করা দরকার তাই করতেন খুব ন্যক্কারজনকভাবে। ভয়াবহ নৃশংসভাবে। জনগণের বিরুদ্ধে দাবড়ে বেড়িয়েছেন ব্যাপক দমন পীড়ন চালিয়ে। কায়েম করেছিলেন এক স্বৈরতান্ত্রিক পুলিশি রাষ্ট্রতন্ত্র। যে রাষ্ট্র দলীয়করণ, বৈষম্য ও দুর্নীতিতে হয়ে ওঠে অভ্যস্ত। দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন, নাম্বার ওয়ান। যে রাষ্ট্রের পুলিশ, প্রশাসন, আদালত হয়নি জনতার, মানবতার।
জুলাই আন্দোলনে শহীদ দুই হাজার মানুষ। আহত ৩০ হাজারের মতো। পঙ্গু বা অঙ্গহানির শিকার ৫৮৭জন। আংশিক বা সম্পূর্ণ দৃষ্টিশক্তি হারান ৬৮৫ জন। খুব অল্প সময়ে এমন নৃশংস ও বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড এবং হতাহতের নজির বিশ্বে বিরল। সরকারের এমন নৃশংস ও বর্বরোচিত নিপীড়ন নির্যাতনে জনগণ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং একপর্যায়ে গিয়ে ছাত্রদের যৌক্তিক আন্দোলনে যুক্ত হতে থাকে। তাতে এক মাসের মধ্যে আন্দোলন গণ-অভ্যুত্থানে রূপ নেয়। দেশ স্বৈরাচার মুক্ত হয়।
হাসিনার পতনে নতুন আকাঙ্ক্ষার বার্তা ধ্বনিত প্রতিধ্বনিত হতে থাকে চারিদিকে। দেশের আকাশে-বাতাসে, শহর-বন্দরে, গ্রাম-গঞ্জে, মাঠ-ঘাটে, হাটে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মসজিদ, মাদ্রাসা, গির্জা, প্যাগোডা, মন্দির সর্ব জায়গায়, সর্ব মহলে। জনজীবনে ফিরলো স্বস্তি। জনগণ যেনো হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো। ফিরে পেলো বাকস্বাধীনতা। নিজের বা নিজেদের স্বকীয়তা। পরিবেশটা এমন হয় যেনো নতুনভাবে দেশ আবার স্বাধীন হলো। দেশের মানুষ নতুন করে মুক্তির স্বাদ পেলো।
সময়ের ব্যাপ্তিতে আন্দোলনের মেয়াদ ছিলো খুব সংক্ষিপ্ত। এক মাসের মতো। কিন্তু নেতৃত্ব ও নেতৃত্বের ধরন, আন্দোলন সংগঠিত করণ এবং পরিচালন পদ্ধতি ছিলো ভীষণ সুসংগঠিত। অত্যন্ত গোছালো। অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে নেতৃত্ব ছিলো দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। নেতৃত্বের পুরোটা ভাগ জুড়ে ছিলো তারুণ্য, যারা মেধা ও মাননে ছিলো বেশ চৌকস, দৃঢ়চেতা ব্যক্তিত্বের অধিকারী। সত্য, ন্যায়ের পূজারী। নিঃস্বার্থ মনের অধিকারী। হয়ে ওঠেন মুক্তির দিশারী। নির্ভীক এক কান্ডারি। ভয়-ভীতি উপেক্ষা করে রাজপথে থাকা অসীম সাহসী এক ঝাঁক তরুণ বীর সেনানি। যারা সরকারের সব প্রকার অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়ন ভোগ করেও থেকেছেন অকুতোভয়। আন্দোলন সফল করতে ও অভীষ্ট লক্ষ্যে ধাবিত হতে দিয়েছেন দায়িত্বশীলতার পরিচয়। ছাত্ররা আন্দোলনকে নিয়ে যায় এমন পর্যায়ে যেখানে মানুষ ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ দেখতে উদ্বুদ্ধ হয়ে যায়। রক্ত দিতে মানসিক প্রস্তুতি নেয়। স্বৈরাচারী হাসিনাকে হঠাতে মানুষ রক্ত দেয়ার প্রস্তুতি নিয়ে রাস্তায় নেমে আসে। ছাত্র-জনতার সঙ্গে রিকশাচালক-শ্রমিক থেকে শুরু করে সর্বস্তরের পেশাজীবী মানুষ যোগ দেয়। ভয় উপেক্ষা করে সবাই রাজপথ দখলে নেয়। তাতে আন্দোলন গণ-অভ্যুত্থানে রূপ নেয়।
আন্দোলনে গণ-মানুষের অংশগ্রহণের কারণ শেখ হাসিনার সুদীর্ঘ কালের অগণতান্ত্রিক শাসন। অনির্বাচিত হাসিনা সরকারের অনিয়ম, অনাচার, দুঃশাসন, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, নির্যাতন, নিপীড়ন ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে জনতার ক্ষোভ ছিল পাহাড়ের মত উচ্চমান। তাই কোটা সংস্কার ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে সমতা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন শেষমেষ এক দফার আন্দোলনে রূপ নেয়।
এক দফা মানে হাসিনার পদত্যাগ দাবি, যা হয়ে ওঠে ছাত্র জনতা তথা সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মনের দাবি। ফলে আন্দোলনে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়। সারা দেশ শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে জ্বলে ওঠে। এই দাবি মানুষকে রাজপথে নেমে আসতে প্রবলভাবে উদ্বুদ্ধ করে। ছাত্রদের পাশে এসে দাঁড়াতে সাহায্য করে। কারণ, এই দাবি ছিলো মানুষের মনের দাবি, যা দীর্ঘদিন পুষে রেখেছিলো বুকের গভীরে। হাসিনার দমন-পীড়নের ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত জাতি মুখ খুলতে পারেনি সুদীর্ঘকাল ধরে। ছাত্রদের সাহসী ভূমিকায় তাই এতকাল পরে তারাও মৃত্যু ভয় উপেক্ষা করে রাজপথে নামে হাসিনার অপশাসন ও দুঃশাসন থেকে বাঁচতে, দেশ বাঁচাতে। দেশে নতুন রাজনৈতিক পরিষদ গঠন করতে, পুরনো রাজনৈতিক প্রথা ও বন্দোবস্ত পরিবর্তন করে সাম্য, সমতা ও ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা করতে, আইনের শাসন কায়েম করতে, নিজেদের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার করতে, দেশের প্রতিটি অঙ্গন থেকে ফ্যাসিবাদের মুলোৎপাটন করে জনগণের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে। শাসন ব্যবস্থায় নতুন বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা করতে।
পুলিশি বুলেটে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের অটল বিশ্বাসে ভরা বুকটার নিঃশ্বাস আটকে যায়। তার বিরোচিত মৃত্যু আন্দোলনে ক্লাইম্যাক্স তৈরি করে। শুরু হয় বাংলা বসন্ত। বিক্ষোভে ফুঁসে উঠলো পুরো দেশ, দেশের জনগণ। অকুতোভয় ছাত্র–জনতা আলিঙ্গন করতে শিখে নিল মৃত্যুকে। দিনে ও রাতের আন্দোলনে শহীদের তালিকা বাড়তে থাকে। মুগ্ধ, ফারহান, ইয়ামিন, জুলফিকার, শিশু রিয়া, কিশোরী নাইমাসহ অসংখ্য শিশু, কিশোর, নারী পুরুষ এই তালিকায় যুক্ত হলেন। জাতির কল্যাণে তারা প্রাণ বিসর্জন দিলেন।
৫ আগস্ট মানে ৩৬ জুলাই ছাত্রদের ভাষায় ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতার’ দিন। তাদের যুক্তি তারা একটি স্বাধীনতাকে স্বাধীন করেছে। যে স্বাধীনতা এতদিন শুধু পুস্তক আর সাহিত্যে বাক্সবন্দি ছিলো সেই স্বাধীনতাকে রক্তের বিনিময়ে উন্মুক্ত করেছে। জনগণের রাষ্ট্র বানানোর জন্য দেশ আবার নতুন করে স্বাধীন করেছে। তাদের ভাষ্য তারা আর পুরনো বন্দোবস্তে ফিরে যেতে চায় না। সত্যিকারের একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণ করতে চায়। যেখানে বিরাজ করবে সাম্য, সমতা, ন্যায় ও স্বাধীনতা। থাকবে ভোটাধিকারের সুরক্ষা, আইনের স্বাধীনতা। থাকবে না বিবেকের উদাসীনতা। রাষ্ট্র হবে জনগণের।
জুলাই আন্দোলন 'বিপ্লব' না ‘অভ্যুত্থান’ এ নিয়ে ইতোমধ্যে যথেষ্ট বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। কেউ বলছেন, এটা বিপ্লব। তাদের যুক্তি 'এই আন্দোলন কোনও বিশেষ এলাকায় বা বিশেষ সময়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলো না, এটা মানুষের মনোজগৎকে নাড়া দিয়েছে সার্বিকভাবে, অন্যায়কে রুখে দিতে প্রেরণা জুগিয়েছে, প্রতিবাদী মানুষকে রাজপথে ডেকে এনেছে, ঢিল আর গুলতি নিয়ে বন্দুকের নলের সামনে দাঁড়িয়ে যাবার সাহস জুগিয়েছে। বিপ্লবীরা একের পর এক তাদের পদ্ধতি পাল্টিয়েছে, যাবতীয় রাষ্ট্রশক্তির সামনে তারা হয়ে ওঠে অকুতোভয়'। তাদের মত হলো, যে আন্দোলন মৃত্যুকে তুচ্ছ ভাবতে শেখায়-সেই রীতি কেবল বিপ্লবেই দেখা যায়। জুলাই আন্দোলনে ছাত্ররা যখন সরকারি বাহিনীর গুলিকে বুকে ধারণ করার সাহস দেখিয়েছে তখন নিঃসন্দেহে এটি বিপ্লব।
প্রবীণ শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ভিন্নমত পোষণ করে বলেন, এটা না দ্বিতীয় স্বাধীনতা, না বিপ্লব না গণ-অভ্যুত্থান। এটা নৃশংস একটি সরকারের পতন। যে সরকারটির মতো স্বদেশি সরকার আগে কেউ কখনো দেখেনি। এমন নিষ্ঠুর ও বধির সরকার অতীতে কখনো দেখা যায়নি। এই সরকার কোনো আইনকানুন মানেনি, নিষ্পেষণের জন্য নতুন নতুন আইন ও বিধি জারি করেছে, গুম করেছে, হামলা, মামলা দিয়ে হয়রানির একশেষ ঘটিয়েছে এবং কতোটা যে নির্মম হতে পারে, তার প্রমাণ দিয়েছে পতনের আগের কয়েকটি দিনে'। তিনি বলেন, 'ইহুদিবাদী ইসরায়েলিরা গাজাকে শৈশবশূন্য করেছে, হাসিনা সরকারও মনে হয়েছিলো বাংলাদেশ থেকে তারুণ্য মুছে ফেলবে। যা আগে কখনো ঘটেনি, তা হলো হেলিকপ্টার থেকে গুলিবর্ষণ। এবার সেটাও ঘটল।
অন্য সব আন্দোলন থেকে জুলাই আন্দোলন একটু ব্যতিক্রম। প্রথমত: আন্দোলনটি সংগঠিত ও পরিচালিত হয়েছিলো তরুণ ছাত্র-ছাত্রীদের নেতৃত্বে। আন্দোলনের বিজয় এবং সাফল্যও এসেছে তাদের হাত ধরে। তাদের কৌশল ও বুদ্ধিভিত্তিক চিন্তাভাবনার কাছে পরাস্ত হয় সরকারের সকল রণকৌশল ও নীতি। সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক নেতৃত্বের নেতৃত্বে সংঘটিত ও পরিচালিত হয়েছিলো এই আন্দোলন। অথচ পৃথিবীর সব আন্দোলন পরিচালিত হয়েছিলো কোনো না কোনো রাজনৈতিক নেতৃত্বের অধীনে। জুলাই বিপ্লব ব্যতিক্রম এই দিক থেকে।
দ্বিতীয়ত: আন্দোলনের স্থায়িত্বকাল খুব সংক্ষিপ্ত, এক মাসের মতো। কিন্তু অনেক বেশি রক্তাক্ত। এক মাসে এতো বেশি জীবন দান ও হতাহতের ঘটনা শুধু দেশের ইতিহাসে নয় বিশ্বেও বিরল।
তৃতীয়ত: আন্দোলনের বড় দিকটা হলো তরুণ সমাজের রাষ্ট্রচিন্তা ও হাল না ছাড়ার মানসিকতা। ধনী-দরিদ্র-মধ্যবিত্ত সব শ্রেণি থেকে উঠে আসা যুবসমাজ যাদের কেউ সেক্যুলার প্রতিষ্ঠানে পড়ে, আবার কেউ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত, এমন সবাই এককাতারে এসে লড়েছে এই জনযুদ্ধে। সব ধর্মের, সব বর্ণের, সব পেশার, সব লিঙ্গের মানুষের অন্তর্ভুক্তি এই বিপ্লবকে অনন্য করে তোলে। এমন অভূতপূর্ব মিলন ইতিহাস দেখেনি আগে।
চতুর্থত: কোটা সংস্কার থেকে এক দফা-সব পর্যায়েই তারা ছিলো সমান অংশীদার। রাজপথে শোনা গেছে তাদের কণ্ঠ; হয়েছেন রক্তাক্ত, দিয়েছেন প্রাণ। সন্তান ও স্বজন হারানোর বেদনায় কেঁদেছেন। আপোষহীন ও লড়াকু ভূমিকায় ছিলেন। আন্দোলন–পরবর্তী সময়ে সড়কে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বেও মেয়েরা ছিলেন সক্রিয়। দেশময় দেয়ালে দেয়ালে রঙিন গ্রাফিতি এঁকেছেন তারা। সব মিলিয়ে আন্দোলনের সব পর্যায়েই মেয়েদের উপস্থিতি ছিলো স্বতঃস্ফূর্ত।
পঞ্চমত: কোনো গণ-অভ্যুত্থানের পর এই প্রথম দেশের সরকার প্রধান থেকে সরকারের মন্ত্রী, এমপি, সরকারি দলের নেতা-কর্মী, চাকর-বাকর, পুলিশ, সরকারি, কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, অধ্যক্ষ, হেড মাস্টারসহ মসজিদের ইমাম জনরোষ থেকে বাঁচার জন্য পালিয়ে যেতে বাধ্য হলো, যা ইতিহাসে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো।
জুলাই বিপ্লবের চেতনা অনুযায়ী রাষ্ট্রকে কতোটুকু বিনির্মাণ করা যাবে বা রাষ্ট্রের কতোটুকু সংস্কার করা যাবে, আবার সংস্কার করা গেলে তা কতোদিন পর্যন্ত এ জাতি ধরে রাখতে পারবে সেটা সময়ই বলে দেবে। একাত্তরে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা এনেছি, সার্বভৌম একটি দেশ পেয়েছি এটা যেমন ঠিক তেমনি এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজাও সঠিক কতটুকু স্বাধীনতা পেয়েছি, রাষ্ট্রকে কতোটুকু সার্বভৌম রাখতে পেরেছি? ৯০ এ স্বৈরাচার হটিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি, আবার সেই গণতন্ত্রের কবর রচনা করে পতিত স্বৈরাচারকে আমরাই রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করেছি। সত্যিই সেলুকাস কী বিচিত্র এই দেশ!
এ দেশের রাজনীতি, রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক পরিবেশ। দীর্ঘ ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জুলাই-আগস্টে যে গণ-অভ্যুত্থান সৃষ্টি হয়েছে, তা নিঃসন্দেহে দেশে নতুন এক সম্ভাবনার সূচনা করেছে। আগামীর বাংলাদেশ কীভাবে চলবে, তার একটি গতিমুখ ঠিক করে দিয়েছে। এই গতিমুখের সঙ্গে জন-আকাঙ্ক্ষার প্রকাশ ঘটেছে। সেজন্য ফ্যাসিস্ট শাসনের বিপরীতে নতুন গণতান্ত্রিক বন্দোবস্ত গড়ে তুলতে রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
লেখক: অধ্যাপক, রাজনীতি ও উন্নয়ন বিভাগ, ইউডা