‘পিতা গড়েন দেহ শিক্ষক দিয়েছেন মন; পিতা বড়, না শিক্ষক বড়, বলিবে কোনজন?’ কবির এ ধরনের লাইনগুলো শিক্ষকের পাহাড়সম সম্মানের কথাই বোঝানো হয়েছে। এ দেশের গুণী ও নেতৃত্ব দানকারীরাও এ ধরনের অনেক বাক্য লিখে থাকেন কিন্তু তা খাতা-কলম বা বইয়ের পাতায় সীমাবদ্ধ। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পার হয়ে গেলো, শিক্ষক সমাজ পেয়েছে কি তার কিছুটা সম্মান? রাজনীতির কাতারে দাঁড়িয়ে অনেকেই এই সম্মানের কথা মুখে উচ্চারণ করলেও কখনো তার প্রতিফলন ঘটানোর চেষ্টাও করেননি। বরং সম্মানের জায়গায় এদেশের শিক্ষক সমাজ হয়েছে লাঞ্ছিত, বঞ্চিত। এমনকি হত্যার মতো ঘটনারও শিকার হতে হয়েছে।
ভেবেছিলাম ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের বৈষম্যবিরোধী চেতনা হয়তো আমাদের স্বস্তি দেবে, ফিরে পাবো অধিকার। কিন্তু কোথায়? আগের সব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে আমাদেরকে করলো বিভাজিত। যেখানে প্রতিফলন হয়েছে একাংশের হাসি এবং একাংশের কান্না। কী দোষ ছিলো আমাদের? সরকারের যখন যে নিয়ম ছিলো সেই নিয়ম মেনেই তো প্রতিটি শিক্ষকের নিয়োগ হয়েছে।
কেউ নিয়মের বাইরে যায়নি। সবাই নির্ধারিত একই সিলেবাসে পাঠদান করেন। একই টেবিলে বসেন। পাঠদানে একে অপরের সহযোগী হিসেবে কাজ করেন। তাহলে এই বিভাজন কেনো? আছে কি কোনো অদৃশ্য শক্তি? শিক্ষক সমাজের সবাই মানুষ। সবার চাহিদা আছে, সবাই সুপারিশ প্রাপ্ত, কেউ ডিজির প্রতিনিধি বা এনটিআরসিএর সুপারিশে নিয়োগ, সবাই নিয়মের শিকার। তাই শিক্ষক হিসেবে বদলিতে প্রাপ্যতা সবার আছে। বদলি সবার জন্যই হওয়া উচিত। যেখানে সবাই হাসি-খুশি সহযোগিতা, আর প্রফুল্লতা ভাগ করে চালাবে শিক্ষা কার্যক্রম। পক্ষান্তরে হাজার হাজার শিক্ষকের আর্তনাদ ভেসে ওঠে সমগ্র বাংলায়। নীতি নির্ধারকদের এ কেমন বিচার?
আমাদের আকুল আবেদন, আমাদের দিকে শুভ দৃষ্টি দিন। দেখুন আমাদের হৃদয়ের রক্তক্ষরণ। লাঘব করুন আমাদের আর্তনাদ।
লেখক: শিক্ষক, তেতৈয়া দাওয়াতুল ইসলাম দাখিল মাদরাসা, চট্টগ্রাম
(মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন)