ইএফটির মাধ্যমে এমপিওভুক্ত শিক্ষকেরা বেতন-ভাতাদি পাচ্ছেন খবর প্রকাশিত হওয়ার পর শিক্ষকেরা আনন্দিত ও উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন। আশান্বিত হয়েছিলেন, বেতনের জন্য পরবর্তী মাসের ১০-১৫ তারিখ পর্যন্ত তীর্থের কাকের মতো অপেক্ষা করতে হবে না। কিন্তু সে আশা গুড়ে বালি।
জানুয়ারি মাস শেষ হওয়ার পথে এখনো ডিসেম্বর মাসের বেতন পাননি অধিকাংশ শিক্ষক-কর্মচারী! ডিসেম্বরের বেতন ভাতাদি না পেয়ে শিক্ষক কর্মচারীরা সীমাহীন দুর্দশায় পতিত হয়েছেন। ইএফটিতে বেতন দেয়ার কার্যক্রম চালুর পর এখন বলা হচ্ছে শিক্ষকদের তথ্যগত ভুল থাকায় ইএফটিতে বেতন প্রেরণ করা যাচ্ছে না। পতিত সরকারের আমল থেকে ইএফটিতে বেতন দেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাজ করছে ইএমআইএস। এতোদিন দিন ঘোড়ার ঘাস কাটলো ইএমআইএস?
শিক্ষা উপদেষ্টা ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের কাছে শিক্ষকেরা জানতে চান-১. ইএফটিতে বেতন দেয়ার জন্য পরীক্ষামূলক বা পাইলটিং প্রোগ্রাম করা হয়েছিলো। পাইলটিংয়ে প্রোগ্রামে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা হয়েছিলো কিনা?
২. পাইলটিং এ সমস্যাগুলো দূরীকরণে কী কী সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিলো এবং আদৌ সমস্যাগুলো সমাধান করা হয়েছিলো কি না?
৩. শিক্ষকদের ইএমআইএস সেলে তথ্যের সঙ্গে এনআইডি ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য গরমিল আগে সংশোধন না করে কেন ইএফটিতে বেতন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হলো?
৪. নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে দৈনিক শিক্ষাসহ ও বিভিন্ন পত্রিকার খবরে বলা হলো জানুয়ারি বেতন ইএফটিতে দেয়া হবে। পরে হঠাৎ করে ডিসেম্বরের বেতন ইএফটিতে প্রেরণ শুরু করে কিছু সংখ্যক শিক্ষকের বেতন দিয়ে এখন বলা হচ্ছে, এই সমস্যা সেই সমস্যার জন্য ইএফটিতে প্রেরণ করা যাচ্ছে না। ইএফটিতে বেতন দেয়ার জন্য তাড়াহুড়ো করা হলো কেনো?
৫. স্বল্প বেতনের শিক্ষকদের সন্তানের শিক্ষা ব্যয় ও বয়োবৃদ্ধ বাবা মায়ের চিকিৎসায় মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে এর দায় কে নেবে?
৬. সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন ও শিক্ষকদের রাজপথে নামার ক্ষেত্র সৃষ্টি করা হচ্ছে কেনো? ইএফটিতে বেতন, শিক্ষকদের বদলি, অ্যাডহক কমিটি গঠনসহ বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় একের পর এক বির্তক সৃষ্টি করছে। শিক্ষা উপদেষ্টা এর দায় এড়াতে পারেন না। জনগণের কাছে স্পষ্ট, উপদেষ্টারা আমলাদের কাজের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। উপদেষ্টারা, আপনারা রক্তের বিনিময়ে দায়িত্ব নিয়েছেন। কাজেই ব্যর্থ হওয়ার সুযোগ নেই। যদি একান্তই অক্ষম হন, স্বেচ্ছায় সরে যান। যারা আপনাদের নিয়োগ দিয়েছেন তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন জনগণের কল্যাণে কী করতে হবে। স্বৈরতন্ত্রের সহায়ক আমলাতন্ত্র। স্বৈরতন্ত্রের পাশাপাশি আমলাতন্ত্র থেকেও মুক্ত হতে হবে। তা না হলে বার বার স্বৈরতন্ত্র ফিরে আসবে।
কালবিলম্ব না করে শিক্ষকদের ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসের বেতন পাওয়ার ব্যবস্থা করতে জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার প্রত্যাশা রইলো।