ঢাকা বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি ২০২৫ , ১৬ মাঘ ১৪৩১ আর্কাইভস ই পেপার

bkash
bkash
udvash
udvash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
bkash
bkash
udvash
udvash

প্রকৃতিকে রক্ষা করতে হবে

মতামত

শুভাশিস ব্যানার্জি শুভ, আমাদের বার্তা

প্রকাশিত: ১২:০০, ২৯ জানুয়ারি ২০২৫

সর্বশেষ

প্রকৃতিকে রক্ষা করতে হবে

পরিবেশের রং বদলের সঙ্গে সঙ্গে বদলেছে মানুষ ও জীবজগতের জীবন। পরিবেশ প্রতিকূল হলে জীবের ধ্বংস ও বিনাশ অবশ্যম্ভাবী। পরিবেশের ওপর নির্ভর করে মানুষ, অন্যান্য উদ্ভিদ ও প্রাণি-জীবনের বিকাশ ঘটে। পৃথিবীর বয়স বাড়ছে আর আস্তে আস্তে যৌবন হারাচ্ছে পরিবেশ। এ পরিবেশই প্রাণের ধারক, জীবনীশক্তির বাহক। সৃষ্টির শুরু থেকেই মানুষ ও প্রাণীর অস্তিত্ব নির্ভর করেছে পরিবেশের ওপর। পরিবেশ ও মানুষের মধ্যে রয়েছে অঙ্গাঙ্গি সম্পর্ক। কিন্তু মানুষের চরম অবহলো ও অসচেতনতার কারণে পৃথিবীর পরিবেশ এখন হুমকির মুখে। আর পরিবেশ হুমকির মুখে হলে মানবসভ্যতাও হুমকির কবল থেকে বাঁচবে না।

প্রকৃতির এক অনবদ্য উপহারের নাম রেমা-কালেঙ্গা বণ্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। সৌন্দর্যে, সৌকর্যে, সম্পদে, প্রাচুর্যে, জীববৈচিত্র্যে ও নান্দনিকতায় পরিপূর্ণ এক বনখণ্ডের নাম রেমা-কালেঙ্গা বণ্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। এটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বণ্যপ্রাণী অভয়ারণ্য এবং জীব ও উদ্ভিদবৈচিত্র্যে দেশের সবচেয়ে সমৃদ্ধ বনাঞ্চল। এটি তরপ হিলো রিজার্ভের অন্তর্গত একটি সংরক্ষিত বনাঞ্চল এবং বন্যপ্রাণের অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষিত, শুষ্ক ও চিরহরিৎ বন।

সুন্দরবনের পর এটিই এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক বনভূমি। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সীমান্ত সংলগ্ন এ অভয়ারণ্যের একদিকে ভারতীয় সীমান্ত ও অন্য তিন দিকে বিস্তৃর্ণ চা বাগানে ঘেরা। চা-বাগানের সৌন্দর্যময়তা যেমন বিরল মাধুর্যমণ্ডিত করেছে এ বনকে, তেমনি এর বৈচিত্র্যময় উপাদান সমুহের আলংকারিক নান্দনিকতা অনন্য। সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলায় ভারত সীমান্তের উঁচু-নিচু টিলা সমৃদ্ধ ভূমিরুপ এ বনের গঠন ও জীববৈচিত্র্যে যোগ করেছে অনন্য মাত্রা। সীমান্তেই এর অবস্থান।

প্রকৃতিকে রক্ষা করতে হবে

রেমা–কালেঙ্গা অভয়ারণ্য ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং পরবর্তীতে ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে এটির আরো সম্প্রসারণ করা হয়। বর্তমানে এই অভয়ারণ্যের আয়তন প্রায় ১৭৯৫.৫৪ হেক্টর। ব্যবস্থাপনার কারণে বন বিভাগ এ বনাঞ্চলকে রেমা, কালেঙ্গা, ছনবাড়ি ও রশিদপুর-নামক চারটি বিটে ভাগ করা হয়েছে। বিস্তীর্ণ এ অঞ্চলটি যেহেতু প্রাকৃতিক বনাঞ্চল, এজন্য বনের দেখভালের জন্য রয়েছে ১১টি ইউনিট ও ৭টি ক্যাম্প। বাংলাদেশের যে কয়েকটি প্রাকৃতিক বনভূমি এখনো মোটামু্টি ভালো অবস্থায় টিকে আছে, রেমা-কালেঙ্গা তার মধ্যে অন্যতম।

রেমা–কালেঙ্গা অভয়ারণ্য বেশ কিছু বিরল ও বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতির বন্যপ্রাণী, উদ্ভিদ ও জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ। বর্তমানে এই বনে ৩৭ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ১৬৭ প্রজাতির পাখি, সাত প্রজাতির উভচর, ১৮ প্রজাতির সরীসৃপ ও ৬৩৮ প্রজাতির গাছপালা-লতাগুল্ম পাওয়া যায়। বিভিন্ন বিরল প্রজাতির পাখির জন্য এই বন সুপরিচিত এবং এদের মধ্যে রয়েছে-ভীমরাজ, টিয়া, পাতি ময়না, লালমাথা কুচকুচি, সিপাহি বুলবুল, রাজ ধনেশ, শকুন, কালো মথুরা, লাল বনমোরগ, প্যাঁচা, মাছরাঙ্গা, ঈগল, চিল প্রভৃতি।

এই বনে তিন প্রজাতির বানরের বাস, এগুলো হলো-উল্টোলেজি বানর, লাল বানর ও নিশাচর লজ্জাবতী বানর। তা ছাড়া এখানে পাঁচ প্রজাতির কাঠবিড়ালী দেখা যায়। এর মধ্যে বিরল প্রজাতির মালয়ান বড় কাঠবিড়ালি একমাত্র এ বনেই পাওয়া যায়। বন্যপ্রাণীর মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য আরো রয়েছে কালোমুখ হনুমান, চশমাপরা হনুমান, উল্লুক, মায়া হরিণ, মেছোবাঘ, দেশি বন শুকর, গন্ধগোকুল, বেজি, সজারু ইত্যাদি। শঙ্খচূড়, দুধরাজ, দাঁড়াশ, লাউডগাসহ এ বনে আঠারো প্রজাতির সাপের দেখা পাওয়া যায়। এ বনের সৌন্দর্যের আরেকটা অলংকার হলো এর পরাশ্রয়ী উদ্ভিদ। বৈচিত্র্যময় নান্দনিক গঠনশৈলী ও বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ অর্কিড প্রজাতির উদ্ভিদসমূহ বনের সৌন্দর্যে যোগ করেছে নতুন পালক। বিশেষ করে গ্রীষ্মে যখন অর্কিডের ফুল ফোটে তখন মন উতলা হয় বনে বনে। পতঙ্গ ও পাখিরা তখন খুঁজে পায় বিনোদনের নতুন উৎস। এ বনে প্রায় ২০ প্রজাতির অর্কিড তথা পরাশ্রয়ী উদ্ভিদের সমৃদ্ধ উপস্থিতি এর ইকোসিস্টেমকে দিয়েছে বর্ণিল মাত্রা।

মানুষের অপরিণামদর্শী কর্মকাণ্ডে প্রকৃতি হতে বিলুপ্তীর পথ ধরেছে প্রকৃতি বান্ধব এ বন্যপ্রাণী। বিলুপ্তীর প্রায় বিলুপ্ত প্রায় প্রাণীদের মধ্যে অন্যতম হলো ‘শকুন’। শকুনকে মানুষ ঘৃনার চোখে দেখলেও প্রকৃতিতে রয়েছে শকুনের অপরিসীম প্রয়োজনীয়তা। বাংলা সাহিত্যে ও বিনোদন মাধ্যমে শকুনিকে চিহ্নিত করা হয়েছে নেতিবাচক দৃষ্টিতে। মানুষকে দাড় করানো শকুন তথা প্রকৃতির বিপক্ষে। তবুও থেমে যাইনি আমরা। সময়ের লাগাম টেনে ধরতে সরকারি ব্যবস্থাপনায় শকুন সংরক্ষণে ‘বাংলাদেশ জাতীয় শকুন সংরক্ষণ কমিটি’ গঠন করা হয়েছে। ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে দেশের দুটি অঞ্চলকে শকুনের জন্য নিরাপদ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দ থেকে শকুনের প্রজননকালীন সময়ে বাড়তি খাবারের চাহিদা মেটানোর জন্য হবিগঞ্জের রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে ও সুন্দরবনে দুটি ফিডিং ষ্টেশন স্থাপন করা হয়েছে।

জানা যায়, বাংলাদেশে সাত প্রজাতির শকুন আছে। এরা সবাই হুমকির মুখে। লাল মাথা শকুন ইতোমধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এখন দেশে শকুনের সংখ্যা মাত্র ২৬০টির কাছাকাছি আছে বলে ধারণা করা হয়। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা গেলে শকুনের সংখ্যা আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

শকুনের জন্য হবিগঞ্জের রেমা-কালেঙ্গা ও সুন্দরবনে সরকারি উদ্যোগে দুটি সেভ জোন ঘোষণা করা হয়েছে। শকুনের জন্য ক্ষতিকর ‘কিটোপ্রোফেন’ নামক একটি ওষুধ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর আগের ‘ডাইক্লোফেনাক’ নিষিদ্ধ করা হয়েছিলো। শকুন সংরক্ষণের দিক থেকে এখন এশিয়ায় আমরা তথা বাংলাদেশ লিডিং পজিশনে আছি বলে দাবি করেন বন বিভাগ। শকুন সংরক্ষণের বিষয়ে আমাদের দেশে তিনটি জরিপ করা হয়েছে। এদিকে শকুনের জন্য খুব উপকারী দুইটি ওষুধ বাজারে এসেছে। বন অধিদপ্তর দিনাজপুরের সিঙড়া ন্যাশনাল পার্কে শকুনের জন্য রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার স্থাপন করেছে। পরিবেশবাদীরা বলছেন, বিপুল পরিমাণ শকুনের উপস্থিতি সচরাচর দেখা যেত মাত্র কয়েক বছর আগেও। কিন্তু হঠাৎ করেই হারিয়ে গেছে প্রকৃতিতে বিরাজমান প্রায় ৯০ শতাংশ শকুন।

বাংলাদেশের অন্যতম গহীন বন রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়াশ্রমে শকুনের আবাস ও সংরক্ষণ ব্যবস্থা করেছে বন বিভাগ। বাংলাদেশের হারিয়ে যেতে বসা শকুনের নিরাপদ আবাস্থল ও প্রজনন এলাকা হিসেবে এ বনকে তফশিলভুক্ত করা হয়েছে। এখানে এখনো প্রায় ৬৫-৭০ টির মতো শকুন বসবাস করছে। IUCN বাংলাদেশ ও বনবিভাগ যৌথভাবে এ শকুন সংরক্ষণের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।

লোভ আর হিংস্রতা বোঝাতে যে প্রাণীটির উদাহরণ দেয়া হয়, সেটা ‘হায়েনা’। রাজশাহীর বরেন্দ্র এলাকার ঊষর লাল মাটিতে উনিশ শতকের শেষের দিকেও ঘুরে বেড়াত ধূসর হায়েনার দল। তবে এখন বরেন্দ্র তো বটেই, বাংলাদেশের কোথাও হায়েনা নেই। একসময় এ দেশে গন্ডারও ছিলো। গত ১০০ বছরে বাংলাদেশ ভুখণ্ড থেকে চিরতরে হারিয়ে গেছে এমন ৩১ প্রজাতির প্রাণী। বাংলাদেশের ১ হাজার ৬১৯ প্রজাতির বন্য প্রাণীর কোনটির কী অবস্থা, সে বিষয়ক লাল তালিকা বা রেড লিস্টের হালনাগাদ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। এটি যৌথভাবে তৈরি করেছে সরকারের বন বিভাগ এবং প্রকৃতি সংরক্ষণ-বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন)। ১৫ বছর পর করা এই প্রতিবেদনে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক স্বীকৃত পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। নতুন তালিকায় দেখা যায়, দেশের ৩৯০টি বন্য প্রাণী কোনো না কোনোভাবে বিপন্ন। তবে তালিকায় ১৪টি নতুন প্রজাতিও যুক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে পাঁচটি ইঁদুরের ও পাঁচটি প্রজাপতি বর্গের প্রজাতি।

২০০০ খ্রিষ্টাব্দের প্রথম তালিকায় ২৬৬ প্রজাতির মাছ, ২২ প্রজাতির উভচর, ১০৯ প্রজাতির সরীসৃপ, ৩৮৮ প্রজাতির পাখি, ১১০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণীর ওপর জরিপ চালানো হয়েছিলো। তাতে তারা এর আগের ১০০ বছরের মধ্যে ১৩ প্রজাতির প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার প্রমাণ পায়। আইইউসিএন বিশ্বব্যাপী একই পদ্ধতি ব্যবহার করে এবারই প্রথম প্রাণিকুলের অবস্থা-বিষয়ক প্রতিবেদন বা রেড লিস্ট তৈরি করছে। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাংলাদেশে এই তালিকা দুই বছর ধরে ২০০ জন বিজ্ঞানী মিলে চূড়ান্ত করেছেন। ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের জুন মাসের শেষার্ধে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রাণিকুলের অবস্থার একটি হালনাগাদ তালিকা প্রকাশ করা হয়। তালিকায় দেখা যায়, গত ১৫ বছরে পাখি প্রজাতি সবচেয়ে বেশি বিলুপ্ত হয়েছে। দেশের ৫৬৬ প্রজাতির পাখির মধ্যে ১৯টি গত ১০০ বছরের বেশি সময়ে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বিলুপ্তির দৌড়ে দ্বিতীয় অবস্থান স্তন্যপায়ী প্রাণীদের। ১১ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী হারিয়ে গেছে এই সময়ে। আর সরীসৃপজাতীয় প্রাণী বিলুপ্ত হয়েছে একটি।

প্রতিবেদনটিতে বিপন্ন প্রাণীর তালিকাকে মূলত তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। মহাবিপন্ন প্রাণী ৫৬টি, বিপন্ন ১৮১টি এবং ঝুঁকিতে আছে ১৫৩টি প্রজাতি। আর ঝুঁকির কাছাকাছি রয়েছে ৯০ প্রজাতির প্রাণী। তবে ৮০৩ প্রজাতির প্রাণী নিয়ে এখন পর্যন্ত দুশ্চিন্তার কিছু নেই। বিলুপ্ত প্রাণীদের মধ্যে রয়েছে; ডোরাকাটা হায়েনা, ধূসর নেকড়ে বান্টিং বা বনগরু, বনমহিষ, তিন ধরনের গন্ডার-- সুমাত্রা গন্ডার, জাভা গন্ডার ও ভারতীয় গন্ডার। বারো শিঙা হরিণ কৃষ্ণষাঁড়, মন্থর হরিণ। মন্থর হরিণকে প্রজাতিতে ভাগ করা হয়। এগুলোর প্রায় সবগুলোই বিলুপ্ত হয়ে গেছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এর মধ্যে একমাত্র মন্থর ভালুক নামে ভালুকের একটি প্রজাতি গত ৪০ বছরে বাংলাদেশ থেকে হারিয়ে গেছে। মহাবিপন্ন প্রাণীদের তালিকায় রয়েছে; বেঙ্গল টাইগার, হাতি, ভোঁদড়, লামচিতা, চিতা, বনরুই, উল্লুক, চশমা পরা হনুমান, বনগরু, সাম্বার হরিণ, প্যারাইল্লা বানর, হিমালয়ান ডোরা কাঠবিড়ালি ও কালো ভালুক।

বর্তমান সময়ে পরিবেশ বিরাট একটা ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের জীবনের যা কিছু সুখ, দুঃখ, ব্যক্তিগত, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক সবকিছুর মধ্যেই পরিবেশের বিরাট একটা ভূমিকা রয়েছে। আমরা সেটা হয়তো অনেক সময় দেখতে ও শুনতে পাই না। দেখতে ও শুনতে চাইলেও অনেক সময় বিশ্বাস করতে চাই না। বিশ্বাস করলেও আমারা সেইভাবে কাজ করতে চাই না। পরিবেশ রক্ষা এবং পরিবেশকে প্রতিপালন, লালন-পালন করে নিয়ে যাওয়া আমাদের প্রতিটা মানুষের ব্যক্তিগত, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক দায়িত্ব রয়েছে। সেই দায়িত্ববোধটা জাগ্রত করা অতি জরুরি। বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ দশটি অধ্যায় এবং ৫৪টি ধারায় বিভক্ত। আইনের সঙ্গে চারটি তফসিল যুক্ত করা হয়েছে এবং সেসব তফসিলে রক্ষিত বন্যপ্রাণী ও উদ্ভিদের প্রজাতিসমূহের বাংলা নাম, ইংরেজি নাম ও বৈজ্ঞানিক নাম দেয়া হয়েছে। নিজের এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জীবন বাঁচানোর তাগিদেই প্রকৃতি এবং পরিবেশকে রক্ষা করতে হবে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বাস্তুতন্ত্রে জীববৈচিত্র্যের গুরুত্ব অপরিসীম।

পৃথিবীতে খাদ্য, পানি ও খনিজ দ্রব্যাদির জোগান ঠিক রাখে যেই জীববৈচিত্র্য, তাকে ধ্বংস না করে রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের সকলের। একইসঙ্গে জলবায়ুর পরিবর্তন, দূষণ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। গাছপালা নিধন না করে বেশি বেশি গাছ লাগানো থেকে শুরু করে প্রকৃতিকে শান্ত করতে যা যা করণীয়, সবই করতে হবে। মনে রাখতে হবে, আমরা এই প্রকৃতির অংশ। প্রকৃতি ঠিক থাকলে আমরাও ঠিক থাকবো।

লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক

জনপ্রিয়