ঢাকা রোববার, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ , ১৯ মাঘ ১৪৩১ আর্কাইভস ই পেপার

bkash
bkash
udvash
udvash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
bkash
bkash
udvash
udvash

সার নিয়ে ভাবার এখনই সময়

মতামত

মনোয়ার হোসেন, আমাদের বার্তা

প্রকাশিত: ০৭:০০, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সর্বশেষ

সার নিয়ে ভাবার এখনই সময়

সারের সরবরাহ কি কমেছে? বোরো মওসুমের প্রারম্ভেই এই প্রশ্ন উঠেছে কৃষক এবং কৃষি পর্যবেক্ষকদের তরফ থেকে।

ধান উৎপাদন এলাকা হিসেবে পরিচিত দেশের কয়েকটি এলাকায় কৃষকদেরকে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চাইতে কেজি প্রতি ৩ থেকে ৮ টাকা বেশি মূল্য দিয়ে সার কিনতে হচ্ছে। বোরো চাষের মৌসুম এখনো পুরোপুরি শুরু হয় নাই। কিন্তু ইতোমধ্যেই দেশের কয়েকটি এলাকায় সারের মূল্যবৃদ্ধিতে আশংকা করা হচ্ছে, ভরা মওসুমের সারের কেজি প্রতি খুচরা মূল্য ৫ থেকে ৮ টাকা বৃদ্ধি পাবে। [inside-ad]

অনুসন্ধানে জানা গেছে, সারের ডিলাররা নিজস্ব কারণে এখন পর্যন্ত কোটা অনুযায়ী সার উত্তেলন করেন নাই। ফলে স্বাভাবিক কারণেই প্রান্তিক পর্যায়ে সরবরাহ কিছুটা কম রয়েছে। এই সুযোগ খুচরা বিক্রেতারা কাজে লাগাচ্ছেন।

বিভিন্ন সুত্রে সংগৃহিত তথ্যে জানা যায়, সার ডিলার এবং খুচরা সার বিক্রেতা উভয়েই ধারণা করছেন, চলতি অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে সার আমদানি কম হবে। কারণ প্রয়োজনীয় সময় হাতে রেখে পূর্বের মত সার আমদানির উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এর প্রভাব স্বাভাবিকভাবেই সার্বিক সরবরাহ ব্যবস্থার ওপর পড়বে।

ইউরিয়া, টিএসপি, ড্যপ এবং এমওপি এই চার ধরনের সার দেশের কৃষকরা ব্যবহার করে থাকেন। এর মধ্যে ইউরিয়া এবং টিএসপি সার বেশি ব্যবহৃত হয় এবং দেশাভ্যন্তরে এই দুই প্রকার সার উৎপাদিত হয়। তবে এই দুই প্রকার সারের মধ্যে টিএসপি এবং ড্যাপ ও এমওপি আমদানিও হয়। বাৎসরিক চাহিদার নিরিখে প্রতিবছরই আমদানির পরিমাণ এবং কোন সময়ের মধ্যে আমদানি করতে হবে তা সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো নির্ধারণ করে পরবর্তী পদক্ষেপ অর্থাৎ আমদানির জন্য মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে টেন্ডার আহ্বান করা হয়। আমদানি সংক্রান্ত সকল প্রক্রিয়া সাধারণত আগস্ট-নভেম্বর মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ করা হয় যাতে বোরো মওসুমের শুরু থেকেই কৃষকরা সার পেতে পারেন। কিন্তু এবারে এখন পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া শুরু হয়নি বলে জানা গেছে।

একটি সূত্রমতে, চলতি বছর প্রায় ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকার সার আমদানির পরিকল্পনা নেয়া হয়েছিলো এবং প্রয়োজনীয় অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব অর্থমন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছিলো। কিন্তু সে প্রস্তাব অনুমোদন হয়নি। সম্ভবত অতিরিক্তি মূল্য ধরার কারণে। বিষয়টি আমদানিকারক মহলে জানাজানি হয়ে যায় এবং সেখান থেকে সার ডিলার মহলে তা ছড়িয়ে পরে। ফলে সার বিক্রেতা মহলে খুচরা এবং ডিলার উভয় স্তরেই, ‘বিভিন্ন হিসাব নিকাশ’ শুরু হয়ে যায়। প্রশ্ন দাঁড়ায়, ভরা মওসুমে অর্থাৎ জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাসে যে পরিমাণ সার প্রয়োজন হবে তা বর্তমান মজুত থেকে মেটানো সম্ভব হবে কিনা?[inside-ad-2]

কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মতে, ইউরিয়া সারের সরবরাহ বা মজুত ডিলার পর্যায়ে ঠিকই আছে। টিএসপি, ড্যাপ এবং এমওপিতে কিছু সরবরাহ ঘাটতি থাকতে পারে। সরবরাহ পর্যবেক্ষণে রয়েছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে। তবে আমদানি ঘাটতি কিভাবে পূরণ হবে সে বিষয়ে তারাও কিছু বলতে পারছেন না। সূত্রমতে, বর্তমানে টিএসপি সারের মজুতের পরিমাণ ৪৫ হাজার টন, ড্যাপ ৮৩ হাজার টন এবং এমওপি ৬০ হাজার টন। পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় এই সবগুলো মজুতের পরিমাণই কম।

বর্তমানে অর্ন্তবর্তী সরকার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হিমসিম খাচ্ছে এ কথা নির্ধিদ্বায় বলা যায়। অতি মনোযোগ দিয়েও আর্থিক পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নয়ন হচ্ছে না। সম্ভবত: আর্থিক খাতের উন্নতির জন্য আরো সময়ের প্রয়োজন হবে। কৃষি এখনো অর্থনীতির মেরুদণ্ড। সারের সরবরাহ এবং বিতরণ অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয়। এই খাতে কোনো রকম ‘ঝামেলা’ সার্বিক পরিস্থিতিতে দারুণভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে- এই মতামত/আশংকা সর্বমহলের।

লেখক : উপদেষ্টা সম্পাদক, দৈনিক আমাদের বার্তা

জনপ্রিয়