
আরবি বার মাসের মধ্যে রমজান পূণ্যময় একটি মাস। এ মাসে মুসলিম উম্মাহ রহমত, নাজাত ও মাগফিরাতের সুযোগ লাভ করে থাকে। এ মোবারক মাসে জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে রাখা হয় এবং শয়তানদেরকে শিকল দিয়ে বন্দী করে রাখা হয়। জান্নাতের সবগুলোদরজা খুলে দেওয়া হয়। সেই মাসটি প্রতি বছরের ন্যায় কল্যাণের বার্তা নিয়ে আমাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছে।
কোরআনে রোজার হুকুম : রোজা মানুষের চিন্তা-চেতনা এবং অনুভূতিতে মহান আল্লাহর সার্বভৌমত্বের স্বীকারোক্তি ও অঙ্গীকারকে সুদৃঢ় করে। রোজার মাধ্যমে বান্দা স্বেচ্ছায় আল্লাহর ইবাদতের প্রতি গভীর মনোযোগী হয়। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মাহে রমজানের রোজাকে মুসলিম উম্মাহর জন্য ফরজ করে দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে মুমিনগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল। যাতে তোমরা পরহেজগার হও। (সুরা বাকারা, আয়াত নং ১৩৮)
হাদিসে রমজানের গুরুত্ব : রমজান অনন্য মর্যাদার অধিকারী মাস। এ মাসে পবিত্র কোরআন নাজিল হয়েছে। রমজান মাসে প্রত্যেক ইবাদতের সওয়াব বৃদ্ধি করে দেওয়া হয়। প্রত্যেক ফরজ ইবাদতের বিনিময়ে সত্তর ফরজের সওয়াব দান করা হয়। আর প্রত্যেক নফল ইবাদতে ফরজের সওয়াব প্রদান করা হয়। রমজানে ঈমানদার বান্দার গুনাহ ক্ষমা করা হয়। রোজার প্রতিদান আল্লাহ তায়ালা নিজ কুদরতি হাতে প্রদান করবেন। এ মর্মে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, রমজান মাস আগমনের সাথে সাথে একজন ফেরেশতা এই বলে ঘোষণা করতে থাকেন : হে কল্যাণ-সন্ধানী! অগ্রসর হও। হে পাপাসক্ত! বিরত হও। আল্লাহ তায়ালা এই মাসে বহু লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। রমজান শেষ হওয়া পর্যন্ত প্রতি রাতে এ ঘোষণা করতে থাকে। (তিরমিজি শরিফ, হাদিস নং ৬৮১)
হাদিসে রোজার ফজিলত : হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আদম সন্তানের প্রতিটি ভালো কাজের প্রতিদান দশ গুণ থেকে সাতশ গুণ পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। কিন্তু মহান আল্লাহ বলেন, রোজা ব্যতীত। কেননা, রোজা আমার জন্য, আমি নিজে তার প্রতিদান দিব। সে আমার সন্তুষ্টির জন্য যৌন বাসনা ও পানাহার থেকে বিরত থেকেছে। রোজাদারের দুটি আনন্দ রয়েছে। একটি আনন্দ ইফতারের সময়, একটি আনন্দ আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ লাভের সময়। (মুসলিম শরিফ, হাদিস নং ১১৫১)
আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে মাহে রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করার তাওফিক দিন। আমীন।
লেখক : শিক্ষক, নাজিরহাট বড় মাদরাসা, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম।