ঢাকা শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫ , ২৯ ফাল্গুন ১৪৩১ আর্কাইভস ই পেপার

bkash
bkash
udvash
udvash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
bkash
bkash
udvash
udvash

আমলে সমৃদ্ধ হোক রমজান

মতামত

রাসেল মাহমুদ হাবিবী, আমাদের বার্তা

প্রকাশিত: ১৭:২৮, ১৪ মার্চ ২০২৫

সর্বশেষ

আমলে সমৃদ্ধ হোক রমজান

রহমত, বরকত ও নাজাতের মাস রমজান। মুসলিম উম্মাহর জন্য এই মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে এক বিশেষ নেয়ামত। রোজা তাকওয়া অর্জনের মাধ্যম। তাকওয়া মানে আল্লাহর ভয়। এই মাস শুধু উপবাস পালনের মাস নয়, বরং আত্ম-সংযম, আধ্যাত্মিক উন্নতি এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাস।

রমজান মাসে প্রত্যেক মুসলমানের উচিত বেশি বেশি ইবাদত ও নেক আমল করা। এই মাসে কিছু বিশেষ আমল রয়েছে, যা রমজানের গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দেয়। রমজান মাস হলো নেক আমলের বসন্তকাল।

তারাবিহ: রমজান মাসের বিশেষ নামাজ হলো তারাবিহ। তারাবিহ নামাজ জামাতের সাথে আদায় করা সুন্নত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তারাবিহ নামাজ আদায় করেছেন এবং সাহাবায়ে কেরামকেও উৎসাহিত করেছেন। তারাবিহ নামাজে দীর্ঘ কিয়াম, রুকু ও সিজদা এবং কোরআন তেলাওয়াত করা হয়, যা মুমিনের অন্তরকে আল্লাহর দিকে আকৃষ্ট করে।

হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সওয়াবের আশায় রমজানে রাত জেগে ইদাদত করে তার অতীতের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। (সহিহ বুখারি: ৩৭)

সাহরি: রোজার আগে শেষ রাতে খাবার খাওয়া সুন্নত। এটাকে সাহরি বলা হয়। সাহরিতে বরকত রয়েছে। সাহরি খাওয়ার মাধ্যমে রোজাদার দিনের বেলায় ক্ষুধা ও পিপাসার কষ্ট সহ্য করার শক্তি পায়।

ইফতার: দিনের শেষে সূযাস্তের পর রোজা ভাঙাকে ইফতার বলা হয়। ইফতারের সময় দোয়া কবুল হয়। ইফতার হলো আল্লাহর পক্ষ থেকে রোজাদারের জন্য একটি বিশেষ পুরস্কার। ইফতারের সময় আল্লাহ তায়ালা রোজাদারের দোয়া কবুল করেন এবং তাকে আনন্দিত করেন।

কুরআন তিলাওয়াত: রমজান মাস কোরআন নাজিলের মাস। তাই এই মাসে বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত করা উচিত। কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহর সাথে সম্পর্ক গভীর হয় এবং আত্মিক প্রশান্তি লাভ করা যায়। রমজানে প্রতি রাতে তারাবির নামাজে কোরআন তিলাওয়াত করা হয়। এছাড়াও ব্যক্তিগতভাবে কোরআন তিলাওয়াত করা এবং কোরআনের অর্থ ও ব্যাখ্যা শেখা উচিত। কোরআন তিলাওয়াত শুধু একটি ইবাদত নয়, বরং এটি জীবন পথের দিশা এবং আত্মিক উন্নতির চাবিকাঠি।

দান-সাদকা: রমজান মাসে দান-সাদকার গুরুত্ব অনেক বেশি। এই মাসে বেশি বেশি দান করা উচিত। দান-সাদকা করার মাধ্যমে সমাজের গরিব ও দুস্থ মানুষের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করা হয় এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়।

হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজান মাসে বেশি বেশি দান করতেন। তিনি ছিলেন উদারহস্ত। দান-সাদকা আত্মার পরিশুদ্ধি এবং সমাজের কল্যাণ সাধনের একটি মাধ্যম।

ইতিকাফ: রমজানের শেষ দশ দিন মসজিদে ইতিকাফ করা সুন্নত। ইতিকাফ মানে হলো আল্লাহর ইবাদতের জন্য মসজিদে অবস্থান করা। ইতিকাফের মাধ্যমে বান্দা নিজেকে দুনিয়াবি কাজকর্ম থেকে দূরে রেখে আল্লাহর ইবাদতে সম্পূর্ণরূপে নিমগ্ন করে। ইতিকাফ হলো আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের এক বিশেষ সুযোগ এবং আত্মশুদ্ধির অনন্য উপায়।

লাইলাতুল কদর: রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোর মধ্যে কোনো এক রাতে লাইলাতুল কদর বা কদরের রাত রয়েছে। এই রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।

কোরআন মাজিদে আল্লাহ তায়ালা বলেন, নিশ্চয়ই আমি কদর রাতে কোরআন নাজিল করেছি। আপনি কি জানেন কদর রাত কী? কদর রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। (সুরা কদর: ১-৩) লাইলাতুল কদরে ইবাদত করলে হাজার মাসের ইবাদতের সমান সওয়াব পাওয়া যায়। তাই এই রাতে বেশি বেশি ইবাদত করা উচিত।

লেখক : সংবাদকর্মী

জনপ্রিয়