ঢাকা মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫ , ১ বৈশাখ ১৪৩২ আর্কাইভস ই পেপার

bkash
bkash
udvash
udvash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
bkash
bkash
udvash
udvash

শাওয়ালের ছয় রোজার তাৎপয ও ফজিলত

মতামত

শামসুদ্দীন সাদী, আমাদের বার্তা

প্রকাশিত: ০৯:৩৯, ১১ এপ্রিল ২০২৫

সর্বশেষ

শাওয়ালের ছয় রোজার তাৎপয ও ফজিলত

মহিমান্বিত মাস পবিত্র রমজান শেষ হয়েছে। এখন চলছে শাওয়াল মাস। শাওয়াল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস। এই মাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো ছয়টি বিশেষ রোজা রাখা, যা শাওয়ালের ছয় রোজা নামে পরিচিত। শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখা মুস্তাহাব। এই রোজার অনেক ফজিলত রয়েছে, যা হাদিস শরিফ দ্বারা প্রমাণিত।

সারা বছর রোজা রাখার সাওয়াব

হজরত উবাইদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ, আমি কি সারা বছর রোজা রাখতে পারব? তখন রাসুল (সা.) বললেন, তোমার ওপর তোমার পরিবারের হক রয়েছে, কাজেই তুমি সারা বছর রোজা না রেখে রমজানের ফরজ রোজা রাখো এবং রমজানেরর পরবর্তী মাস শাওয়ালের ছয় রোজা রাখো, তাহলেই তুমি সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব পাবে। (জামে তিরমিজি: ১ম খণ্ড, 

পৃ-১৫৭)

হজরত আবু আইয়ুব আনসারি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি রমজান মাসের ফরজ রোজাগুলো রাখল, অতঃপর শাওয়াল মাসে আরো ছয়টি রোজা রাখল, সে যেন সারা বছর ধরেই রোজা রাখল। (সহিহ মুসলিম: ১১৬৪)।

বস্তুত ওপরিউক্ত হাদিসের সঙ্গে পবিত্র কোরআনুল কারিমের একটি আয়াতের মিল রয়েছে। মহান আল্লাহ বলেছেন, কেউ কোনো নেক আমল করলে, তাকে তার দশ গুণ সওয়াব প্রদান করা হবে। (সুরা আনআম: ১৬০)

রমজানের এক মাসের দশ গুণ হলো ১০ মাস আর শাওয়াল মাসের ছয় দিনের দশ গুণ হলো ৬০ দিন, অর্থাৎ দুই মাস। সুতরাং ৩৬টি রোজায় ৩৬০ দিন তথা পূর্ণ এক বছর রোজা রাখার সওয়াব পাওয়া যায়।

রোজা কবুলের আলামত

মাহে রমজানের ফরজ রোজা রাখার পর পুনরায় রোজা রাখা রমজানের রোজা কবুল হওয়ার একটি লক্ষণ। যেহেতু মহান আল্লাহ যখন কোনো বান্দার নেক আমল কবুল করেন, তখন তাকে আরো নেক আমল করার তওফিক দান করে থাকেন। নফল ইবাদতের অধিক গুরুত্ব বর্ণনায় পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, যখন তুমি (ফরজ) দায়িত্ব সম্পন্ন করবে, তখন উঠে দাঁড়াবে এবং তুমি (নফলের মাধ্যমে) তোমার রবের প্রতি অনুরাগী হবে। (সুরা ইনশিরা: ৭-৮)

এক সঙ্গে রাখা জরুরি নয়

শাওয়ালের ছয়টি রোজা একত্রে ধারাবাহিকভাবে রাখা জরুরি নয়। একত্রে রাখা যায়, পৃথকভাবেও রাখা যায়। তবে যত দ্রুত আদায় করা যায়, তত কল্যাণ। অতএব, ঈদুল ফিতরের দিন বাদ দিয়ে মাসের যে কোনো ছয় দিন রোজা রাখলেই উল্লিখিত সওয়াব লাভ করা যাবে।

আগে কাজা রোজা পরে শাওয়ালের রোজা

আর যাদের কাজা রোজা রয়েছে, বিশেষ করে অসুস্থতা কিংবা নারীদের হায়েজ-নেফাসের কারণে রমজানের রোজা অপূর্ণ থাকতে পারে, তাদের করণীয় হলো প্রথমে কাজা রোজাগুলা পূর্ণ করবে, তারপর শাওয়ালের ছয় রোজা পালন করবে। কেননা, রমজানের ছুটে যাওয়া রোজাসমসূহ কাজা করা ফরজ, শাওয়ালের ছয় রোজা রাখা মুস্তাহাব। মুস্তাহাব আদায়ের চেয়ে ফরজ আদায় করা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখার তাওফিক দান করুন।

লেখক: প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক

জনপ্রিয়