ঢাকা বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫ , ২ বৈশাখ ১৪৩২ আর্কাইভস ই পেপার

bkash
bkash
udvash
udvash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
bkash
bkash
udvash
udvash

হাসপাতালে প্রবীণদের পৃথক চিকিৎসাব্যবস্থা জরুরি

মতামত

মো. সিদ্দিকুর রহমান, আমাদের বার্তা

প্রকাশিত: ০৮:৩০, ১৫ এপ্রিল ২০২৫

সর্বশেষ

হাসপাতালে প্রবীণদের পৃথক চিকিৎসাব্যবস্থা জরুরি

বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও বৃহৎ হাসপাতাল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ। সারাদেশের গরিব, সাধারণ মানুষের চিকিৎসার অন্যতম চিকিৎসা কেন্দ্র হিসেবে খ্যাত এ হাসপাতাল। অসংখ্য রোগীকে কক্ষের বাইরে সিটবিহীন অবস্থায় যুগের পর যুগ চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে।

সারাদেশের সব সরকারি হাসপাতালের মধ্যে রোগীর চাপ এ হাসপাতালে অত্যাধিক। মারাত্মক অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় চলে আসছে জন্মলগ্ন থেকে এ চিকিৎসা কেন্দ্রটি। বর্তমানে নার্স ও ডাক্তারদের চিকিৎসা ব্যবস্থা আগের তুলনায় অনেকটা ভালো।

জল থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা সবকিছু অর্থের বিনিময়ে ক্রয় করতে হচ্ছে। চিকিৎসা সেবা বিনামূল্যে বিধায় সাধারণ মানুষের নিকট অনেকটা স্বস্তি। হাসপাতালের খাবারের মানও আগের তুলনায় অনেক ভালো।

সকালে রোগীকে দেয়া হয়, ডিম, দুধ, কলা ও রুটি। বিকালে ডিম, কলা ও বিস্কুট। দুবেলা ভাত, মাছ, মাংস ও ডাল। যারা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়ে থাকেন তারা সবাই তুলনামূলক বেশি অসুস্থ। তাদের আরো বেশি অসুস্থ ও যন্ত্রণা দেয় হাসপাতালে বিছানায় অবস্থানরত অগণিত ছারপোকা।

আশা করি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তথা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিষয়টি সুনজরে নেবে। হাসপাতালে রয়েছে শিশু ওয়ার্ড, গাইনি ওয়ার্ডসহ পৃথক পৃথক ওয়ার্ড। নেই কেবল প্রবীণদের সুচিকিৎসা দেয়ার জন্য আলাদা ব্যবস্থা।

চিকিৎসা যানবাহনসহ নানা ক্ষেত্রে প্রবীণদের আলাদা কোনো ব্যবস্থা না থাকায় যুবক, যুবতিদের সঙ্গে প্রবীণরা একই লাইনে, মর্যাদাহীনভাবে সবার সঙ্গে হুমড়ি খেয়ে সেবা গ্রহণ করতে হয়। আজকের শিশু যেমন আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ।

প্রবীণরাও দেশের সম্পদ ও দিকনির্দেশক। তাদের শ্রম ও মেধায় প্রতিষ্ঠিত আজকের এ সুন্দর বাংলাদেশ। দেশের স্বাধীনতা অর্জনে প্রবীণদের আত্মত্যাগ স্বীকার করতে হবে। এদিক বিবেচনা করে সব সরকারি হাসপাতালে প্রবীণদের শিশুদের মতো পৃথক প্রবীণ ওয়ার্ড থাকা জরুরি।

প্রবীণদের জন্য চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে নিম্নের সুবিধাগুলো থাকা প্রয়োজন।

১. জরুরি বিভাগসহ সর্বত্র প্রবীণদের আলাদা লাইনসহ প্রবীণ ওয়ার্ড থাকা। ২. প্রবীণদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে জরুরি বিভাগের মতো ডাক্তারসহ জনবল থাকা। প্রবীণদের ওয়াশ রুমে কমোট থাকা। এ ছাড়াও পর্যাপ্ত আলো, বাতাস ও বৈদ্যুতিক সুবিধা নিশ্চিত করা।

৩. বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা প্রবীণদের চিকিৎসা সেবা দেয়া। আমাদের দেশের অধিকাংশ প্রবীণরা ডায়েবেটিস ও হৃদরোগে আক্রান্ত। এ দিকে বিবেচনা করে তাদের ডায়বেটিস ও হৃদরোগ মুক্ত আলাদা খাবার পরিবেশন করা প্রয়োজন। জাতি গড়ার অন্যতম কর্ণধার আজকের প্রবীণ। তাদের যত্নে নেয়া পরিবার, সমাজ, দেশ ও জাতির কর্তব্য। অথচ অনেক ক্ষেত্রে তারা পরিবার ও সমাজের মাঝে অবহেলিত।

রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে প্রবীণদের জন্য নেই আলাদা বিশেষ কোনো ভাবনা। যানবাহনে শিশু, মহিলা ও প্রতিবন্ধীদের জন্য আসন থাকলে নেই, প্রবীণদের জন্য সংরক্ষিত ব্যবস্থা। হাসপাতালসহ সভা-সমাবেশ কোনো স্থানেই নেই, প্রবীণদের জন্য সংরক্ষিত ব্যবস্থা। সরকারি কর্মচারী হিসেবে প্রবীণরা ৬৫ বছরের নিচে পেয়ে থাকেন ১৫০০ টাকা ও ৬৫ বছরের উপরে পেয়ে থাকেন ২৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা। অনেক প্রবীণ শতভাগ পেনশন সমর্পন করে আজ ২৫০০ টাকাই তাদের একমাত্র ভরসা। 

বিগত আওয়াসী লাগ সরকারের আমলে শুভঙ্করের ফাঁকি ১৫ বছর পেনশন প্রতিস্থাপন। মৃত্যুবরণ করে প্রতিস্থাপন আদেশ কার্যকর হয় না। অনেকেই ১৫ বছরের আগেই বেশিরভাগের পরপারে চলে যায়। এ প্রেক্ষাপটে বিষয়টি ১০ বছর পর পেনশন পুনস্থাপনের সুযোগ পেলে সিনিয়র পেনশনভোগীরা উপকৃত হবেন। হাসপাতালসহ সর্বক্ষেত্রে প্রবীণদের জন্য আলাদা সুযোগ নিশ্চিত হোক। হাসপাতালের বিছানা থেকে ছারপোকা দূর নিশ্চিত করা হোক। এমন প্রত্যাশাই রইলো।

লেখক: শিক্ষাবিদ

 

জনপ্রিয়