ঢাকা রোববার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ , ১৩ বৈশাখ ১৪৩২ আর্কাইভস ই পেপার

bkash
bkash
udvash
udvash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
bkash
bkash
udvash
udvash

কারিগরি শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা

মতামত

অধ্যাপক ড. মো. লোকমান হোসেন, আমাদের বার্তা

প্রকাশিত: ০৮:০০, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

সর্বশেষ

কারিগরি শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা

কারিগরি শিক্ষা বলতে বিভিন্ন ট্রেডভিত্তিক নির্দিষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানের উপযোগী শিক্ষা ও প্রশিক্ষণকে বোঝায়। তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক কার্যক্রমের মাধ্যমে এই শিক্ষা অর্জন করতে হয়। কোনো দেশে দক্ষ কর্মী তৈরি করতে কারিগরি শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।

এই শিক্ষা একটি বাস্তবধর্মী শিক্ষাব্যবস্থা যার মাধ্যমে মানুষ হাতেকলমে কাজ করে দক্ষ ও যোগ্য কর্মী হিসেবে গড়ে উঠতে পারে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে কারিগরি শিক্ষার ব্যাপ্তি অনেক বেশি ফলে তাদের দক্ষ জনশক্তির সংখ্যাও বেশি। আর্থ-সামাজিক মানোন্নয়ন নিশ্চিত করে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই।

উন্নত দেশগুলোর দিকে তাকালে দেখা যায় তারা সাধারণ শিক্ষায় যতোটা না উন্নত, তার চেয়ে বেশি উন্নত যুগোপযোগী কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায়। জার্মানিতে শতকরা ৭৩ জন, জাপানে ৬৬, সিঙ্গাপুরে ৬৫, অস্ট্রেলিয়ায় ৬০, চীনে ৫৫, দক্ষিণ কোরিয়ায় শতকরা ৫০ জন মানুষ কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত ও দক্ষ। উন্নত সবদেশেই যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষাব্যবস্থা বাস্তবায়নের জন্য কারিকুলাম তৈরি করে থাকে।

অনেক দেরিতে হলেও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষার প্রতি অধিক গুরুত্ব দিয়েছে। ব্যানবেইসের ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৬,৮৬৫টি, যার মধ্যে সরকারি ৮৬৬টি ও বেসরকারি ৫ হাজার ৯৯৯টি। শিক্ষার্থী ১০ লাখ ৬৭ হাজার ৪৮৪ জন। কারিগরি শিক্ষায় নারী শিক্ষার্থীদের অবস্থান অনেকটাই পিছিয়ে।

মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২ লাখ ৬৪ হাজার ২৬২ জন; মাত্র ২৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ নারী শিক্ষার্থী। আর মোট শিক্ষকের সংখ্যা ৫০ হাজার ৯৩১ জন, নারী শিক্ষকের সংখ্যা ১০ হাজার ২১২ জন। নবম থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত কারিগরি শিক্ষার আওতায় অধ্যয়ন করে এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যা দেখানো হয়েছে ১৪ শতাংশ। বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এ হার মূলত ৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কারিগরি শিক্ষার প্রসারে বিভিন্ন ট্রেডে শিক্ষার্থী ভর্তি চালু করা হয়। ২০০৮-০৯ খ্রিষ্টাব্দেও কারিগরি শিক্ষায় এনরোলমেন্ট ছিল ৫ শতাংশের নিচে। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে এ শিক্ষাকে ২০ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনা নিয়ে এগোলেও সরকার লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে পারেনি।

২০২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে সব মাধ্যমিক স্কুল ও মাদরাসায় কারিগরি বিষয় চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কারিগরি বিষয় অন্তর্ভুক্তিকরণ বিষয়ক সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে যুগোপযোগী। ধীরে ধীরে প্রাথমিকস্তর থেকে কারিগরি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হলে আরো দ্রুত এ শিক্ষার প্রসার ঘটবে। বর্তমান সরকার কারিগরি শিক্ষাকে উন্নতির প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ঘোষণা দিয়ে এ শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে আসছে।

২০৩০ খ্রিষ্টাব্দে এ হার ৩০ শতাংশে উন্নিত করার লক্ষ্য নিয়ে সরকার নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে এখন কতোটুকু বাস্তবায়ন সম্ভব হবে তা দেখার বিষয়। কারিগরি শিক্ষার প্রসারে একটিমাত্র শিক্ষা বোর্ড দ্বারা পরিচালিত যুগোপযোগী সিলেবাস প্রণয়নে ও গুণগত মান রক্ষা করে পাঠদানে ঘাটতি রয়েছে বলে মনে করা হয়।

বর্তমান বিশ্বে চাকরির বাজারে উৎপাদনশীল খাতই সবচেয়ে বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে থাকে। বর্তমানে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে শিল্পায়নের ফলে নতুন নতুন শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠছে আর তাতে বিনিয়োগ করছে পৃথিবীর সব বড় বড় পণ্য ও সেবা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। এসব কারণেই আমাদের দেশে বর্তমানে কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থায় উন্নত দেশগুলো কারিগরি শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে উৎপাদনমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে দেশের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি, আধুনিক যন্ত্রপাতি ও উপকরণ ব্যবহার ও কৌশল প্রয়োগ করে শিল্প ও কৃষিতে বিপ্লব ঘটিয়েছে। কারিগরি শিক্ষা একটি উৎপাদনভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা, যা দেশের জাতীয় আয় বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

কারিগরি শিক্ষা শ্রমিকের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে, এতে করে শ্রমিক সহজেই দেশীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রম বাজারে প্রবেশ করে দক্ষ জনশক্তি ও বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ বৃদ্ধি করে। কারিগরি শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পায়, প্রয়োজনীয় মূলধন অর্জন করে জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন করা সম্ভব হয়। কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে চীন তার বিশাল জনগোষ্ঠীকে মানবসম্পদে রূপান্তর করে শিল্পায়নে ইউরোপের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে। দারিদ্র্য বিমোচনে, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে, আত্মকর্মসংস্থান, উদ্যোক্তা উন্নয়ন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম।

দেশের দ্রুত উন্নতির জন্য কারিগরি শিক্ষায় গুরুত্ব বাড়ানোর বিকল্প নেই। দেশে-বিদেশে কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন কর্মীর চাহিদা থাকা সত্ত্বেও এক সময় আমাদের দেশে কারিগরি শিক্ষাকে গুরুত্ব দেয়া হতো না। পঞ্চাশের দশকে প্রথম ঢাকায় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয় পরে ধীরে ধীরে এদেশের বিভিন্নস্থানে কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। কারিগরি শিক্ষাকে দেশের উন্নতির প্রধান হাতিয়ার হিসেবে পরিণত করতে সরকার ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দেও থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করার কারণে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত কর্মীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।

এ শিক্ষার প্রতি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানোর ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে কারিগরি শিক্ষার কারিকুলাম এগিয়ে নেয়ার জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। নতুন কারিকুলামে ন্যানো টেকনোলজি, বায়োটেকনোলজি, রোবোটিকস, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স, ইন্টারনেট অব থিংস, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, ব্লকচেইন টেকনোলজিসহ আধুনিক বিষয়গুলোর ওপর জোর দেয়া হয়েছে। তবে রোবোটিক্স মেইনটেন্যান্স, কন্ট্রোল সিস্টেম মেইনটেন্যান্স সাপোর্ট, ওয়েস্ট রি-সাইক্লিং, সোলার এনার্জি ও রিনিউয়্যাবল এনার্জির মতো বহু নতুন বিষয়ের ওপর তেমনটি গুরুত্ব দেয়া হয়নি।

তবে অনেকক্ষেত্রে পুরোনো কোর্স থেকে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা বর্তমান চাকরির বাজারে বঞ্চিত হচ্ছে। যেমন- প্লোমা ইন মাইনিং বিষয়ে অধ্যয়ন করে খনিজ সম্পদ আহরণে এই প্রশিক্ষিত শিক্ষার্থীরা চাকরির বাজারে নিজেদের কোনো কাজে লাগাতে পারছে না। এসব বিষয়ে বিদেশে শ্রমবাজার খোঁজার চেষ্টাও নেই। এর মাধ্যমে বুঝা যায়, কর্মসংস্থানমুখী বিষয় চালু করতে আরো সতর্ক এবং দায়িত্বশীল হওয়া প্রয়োজন। অন্যদিকে ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট’-বিষয়ে দেশে ও দেশের বাহিরে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

সারাবিশ্বই উৎপাদনমুখী কারিগরি শিক্ষাকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। চীন কারিগরি শিক্ষার ব্যাপারে খুবই তৎপর । ২০০১ খ্রিষ্টাব্দে চীনে ১৭ হাজার ৭৭০টি কারিগরি প্রতিষ্ঠান ছিলো; যাতে অধ্যয়নরত ছিলেন ১ কোটি ১৬ লাখ ৪২ হাজার ৩০০ শিক্ষার্থী। তাদের কারিগরি শিক্ষার প্রসারের ফলে তাদের পণ্য সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে।

বাংলাদেশে লেদার, প্লাস্টিক, মোবাইল ফোন, ইলেকট্রনিক্স, অটোমোবাইল, এয়ারলাইনস, নার্সিং এসবে চাহিদা থাকলেও আসন সংখ্যার অভাবে এই খাতগুলোতে কারিগরিভাবে দক্ষ পর্যাপ্ত মানবসম্পদ তৈরি হচ্ছে না। ফলে বিশ্বে বাংলাদেশে থেকে দক্ষ শ্রমিক জোগান দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।

বাংলাদেশি অদক্ষ ও স্বল্প দক্ষ শ্রমিক বিদেশে গিয়েই কাজ শেখেন। কিন্তু অন্যান্য দেশ থেকে যারা শ্রমবাজারে যান তারা কাজ শিখে, সার্টিফিকেট নিয়ে দক্ষ হয়েই বিদেশে যান। ফলে তাদের বেতন বাংলাদেশি শ্রমিকদের তুলনায় অনেক বেশি। ফলে একই পরিমাণ রেমিট্যান্স অর্জনের জন্য বাংলাদেশ থেকে প্রায় দ্বিগুণেরও বেশি অদক্ষ শ্রমিক বিদেশে পাঠাতে হয়।

বাংলাদেশের বৈদেশিক শ্রমবাজার ও আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। মানসম্মত কারিগরি শিক্ষা ছাড়া জনশক্তিকে দক্ষ জনসম্পদে রূপান্তর করা সম্ভব নয়। উন্নত বিশ্বের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নিজেদের দক্ষভাবে গড়ে তুলতে এবং দেশকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী করতে হলে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই।

এ জন্য কারগিরি শিক্ষার মান উন্নয়নে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। কারিগরি শিক্ষার উন্নয়ন করতে হলে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব মডেল পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকারি বাজেট সুনির্দিষ্ট করতে হবে; কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে দক্ষ জনবল সৃষ্টিতে আরো বেশি বিনিয়োগ করতে হবে; শ্রমিকদের পর্যাপ্ত মজুরি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে কাজে আগ্রহী করে তুলতে হবে; কারিগরি শিক্ষায় শিল্পকারখানার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ শিক্ষানীতি প্রণয়ন ও শ্রমিকের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ বজায় রাখতে হবে; সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব মডেলের আওতায় প্রশিক্ষণ প্রদানের পর সনদ প্রদান করতে হবে। বাংলাদেশের বিশাল জনগোষ্ঠীকে দক্ষ জনসম্পদে পরিণত করতে পারলেই তারা হবে দেশের উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি।

বস্তত উন্নত বিশ্বের দেশগুলো যেমন চীন, জাপান, জার্মানি এমনকি প্রতিবেশী দেশ ভারত কারিগরি শিক্ষার ওপর জোর দিয়ে সর্বোচ্চ ফলাফল নিশ্চিত করতে পেরেছে। আমাদের দেশেও প্রথাগত শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষায় জোর দেয়ার সময় এসেছে। বর্তমান সময়ে পৃথিবী যেভাবে এগোচ্ছে, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। এজন্য তাত্ত্বিক জ্ঞানের পাশাপাশি ব্যবহারিক জ্ঞানের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে।

শিক্ষাসংশ্লিষ্টদের মতে, সরকারি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধার ঘাটতি, কারিকুলামের দুর্বলতা, প্রচারণার অভাব, শিক্ষক সংকট ও ব্যবস্থাপনাগত ত্রুটি, ইত্যাদি কারণে বিপুলসংখ্যক আসন ফাঁকা থাকছে। সর্বশেষ গত ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষেও দেশের সরকারি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় প্রায় ৩৭ শতাংশ আসন ফাঁকা ছিলো।

কোনো কোনো কোর্সে ফাঁকা আসনের হার ৯০ শতাংশও ছাড়িয়েছে। একদিকে আসন ফাঁকা অন্যদিকে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ থেকে আপত্তি জানানো হলেও ফাঁকা আসন পূরণের উদ্যোগ না নিয়েই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগ নতুন কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করে চলেছে।

শিক্ষাবিদদের মতে, দেশে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের ভর্তির হার বাড়ানোর জন্য নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণের চেয়ে বিদ্যমান প্রতিষ্ঠানগুলোর সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতে বেশি গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। কারণ, বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানগুলোর মান তেমনটা ভালো নয়। টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারগুলোও পর্যাপ্ত ও প্রয়োজনীয় দক্ষতাসম্পন্ন জনবল তৈরি করতে পারছে না। বাংলাদেশের বিভিন্ন শিল্পকারখানা ও গার্মেন্ট শিল্পে ভারতের লোকজন উচ্চ বেতনে কাজ করছে। সেখানে আমাদের অদক্ষ শ্রমিকরা তাদের অধীনে চাকরি করছে খুবই কম বেতনে।

দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে একটি বিশ্বমানের কারিকুলাম প্রণয়ন করা হয়েছে। যেই কারিকুলাম শিক্ষার্থীদের স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে নিয়ে যাবে। দক্ষ ও মানসম্মত কারিগরি শিক্ষাই ঠিক করে দেবে কর্মসংস্থান এবং এই শিক্ষার সাফল্য। কারিগরি শিক্ষার প্রসারের মাধ্যমে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।

কারিগরি শিক্ষার প্রসার ও উন্নয়নে পুরনো কারিগরি শিক্ষা আইন, ১৯৬৭ এ পরিবর্তন এনে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ড আইন, ২০১৮ প্রণয়ন করেছে সরকার। বর্তমানে দেশের ‘১০০টি উপজেলায় ১টি করে টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপন’ নামে একটি প্রকল্প চালু আছে।

এ ছাড়া উপজেলা পর্যায়ে আরো ৩২৯টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপন প্রকল্পও হাতে নেয়া হয়েছে। দেশে এরই মধ্যে টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজগুলোতে কারিগরি শিক্ষায় ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দেশে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে চায় সরকার।

লেখক: সাবেক মহাপরিচালক, নায়েম

লেখক: সাবেক মহাপরিচালক, জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমি (নায়েম), শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

জনপ্রিয়