প্রাবন্ধিক ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার ফরহাদ মজহার বলেছেন, মাজার-দরবারে হামলা করে ফৌজদারি অপরাধ করা হয়েছে। এই কাজ কখন শুরু হয়েছে, যখন শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, ‘আমি যে কোনো সময় চট করে বাংলাদেশে ঢুকে পড়তে পারি।’ এই অপরাধের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে, গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে সরকার এসেছে, তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা ও উৎখাত করা।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) মাজার-দরবারে হামলার প্রতিবাদে দুপুরে রাজধানীর হাইকোর্ট মাজার প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হওয়া গণপ্রতিরোধ যাত্রা শেষে এ কথা বলেন তিনি।
পীর-ফকিরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা এই গণপ্রতিরোধ যাত্রায় অংশ নেন। হাইকোর্ট মাজার প্রাঙ্গণ থেকে এই যাত্রা সচিবালয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও তা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখান থেকে গণপ্রতিরোধ যাত্রার আয়োজকদের একটি প্রতিনিধিদল সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কার্যালয়ে যান। তারা সেখানে পাঁচ দফা দাবি সংবলিত একটি স্মারকলিপি জমা দেন।
গণপ্রতিরোধ যাত্রায় অংশ নিয়ে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মাজার-দরবারে হামলা করা হচ্ছে। এসব হামলা জনগণের অর্জনকে নস্যাৎ করে অস্থিতিশীল করে রাখে। সহনশীলতা ধর্ম ও রাষ্ট্রের জন্য জরুরি উল্লেখ করে জোনায়েদ সাকি বলেন, এই অভ্যুত্থান এমন একটি বাংলাদেশ চায়, যেখানে প্রত্যেক মানুষ তার পরিচয়, রাজনৈতিক বিশ্বাস—সবকিছু নিয়ে মাথা উঁচু করে থাকতে পারবে।
গণপ্রতিরোধ যাত্রা শুরুর আগে হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে এক সমাবেশে দাবি সংবলিত একটি লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান সংগীতশিল্পী বীথি ঘোষ। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জানানো দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—মাজার ও দরবারগুলোর ওপর চালানো প্রতিটি হামলায় জড়িতদের অনতিবিলম্বে খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনা; মাজারকে মাজারের মতো থাকতে দিয়ে সরকারকে সব মাজার ও দরবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, ভেঙে ফেলা প্রতিটি মাজার সরকারের পক্ষ থেকে পুনর্নির্মাণ করে দিতে হবে; মাজারের ওপর হামলায় আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার ব্যয়ভার সরকারকে নিতে হবে; সব ধরনের মব জাস্টিস, মোরাল পুলিশিং, নারীবিদ্বেষী প্রচারণা বন্ধে সরকারকে কঠোর হওয়া।