ঢাকা সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ৭ আশ্বিন ১৪৩১ আর্কাইভস ই পেপার

nogod
nogod
bkash
bkash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
nogod
nogod
bkash
bkash

১০ ঘণ্টা অপারেশনে আলাদা হলো শিফা ও রিফা

বিবিধ

আমাদের বার্তা প্রতিবেদক 

প্রকাশিত: ১৭:২৪, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সর্বশেষ

১০ ঘণ্টা অপারেশনে আলাদা হলো শিফা ও রিফা

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পেটে বুকে জোড়া লাগানো শিফা ও রিফার অপারেশন সফল হয়েছে। ১০ ঘণ্টার অপারেশনে শিফা ও রিফাকে আলাদা করা হয়। প্রায় দেড় বছর বয়সী শিফা ভালো থাকলেও কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হওয়ায় রিফা পিআইসিইউতে রয়েছে।

আজ সোমবার দুপুরে ঢামেক হাসপাতালের প্রশাসনিক ব্লকের সভা কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান পেডিয়েট্রিক সার্জারি বিভাগের প্রফেসর ডা.শাহানূর ইসলাম। তিনি বলেন, বরগুনা জেলার বেতাগী থানার মাহমুদা ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ৭ জুন বুক-পেটে জোড়া লাগানো অবস্থায় জমজ কন্যা শিশুর জন্ম দেন।

প্রফেসর ডা.শাহানূর ইসলাম আরো বলেন, ‘চলতি বছরের ১৪ জুন আমাদের পেডিয়েট্রিক সার্জারি বিভাগে যোগাযোগ করেন মাহমুদা। পরে চলতি বছরের ২১ জুন ঢাকা মেডিক্যাল ভর্তি করা হয় শিফা ও রিফা। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মেডিক্যাল বোর্ড এক মাস পরে তাদেরকে আবার আসতে বলেন। এক মাস পর ভর্তি করা হয় এবং পুষ্টিজনিত সমাধান দিয়ে একমাস পর পুনরায় দেখা করতে বলা হয়। এর ছয় মাস পর অপারেশনের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়। তাদের শরীরে সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ঠিক থাকলেও বুক ও পেট জোড়া লাগানো অবস্থায় ছিল। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা যায়, দুজনের হৃদপিণ্ডের পর্দা, সাধারণ যকৃত নালী, পোর্টাল শিরা, ক্ষুদ্রান্ত্রের কিছু অংশ এক অন্যের সঙ্গে জোড়া লাগানো রয়েছে।’

৩ আগস্ট দুজনের অপারেশনের পরে শরীরের চামড়া স্বল্পতা যাতে না হয় সে জন্য টিস্যু এক্সপান্ডার বসানো হয়। টিস্যু বর্ধিতকরণের পর মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ৭ সেপ্টেম্বর ১০ ঘণ্টাব্যাপী সফল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। অপারেশন শেষে দুজনকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) ভেন্টিলেশন দিয়ে রাখা হয়। ৮ সেপ্টেম্বর রিফাকে ভেন্টিলেটর থেকে বের করা হয়। ৯ সেপ্টেম্বর শিফাকেও ভেন্টিলেটর থেকে বের করা হয়। পরে ১১ সেপ্টেম্বর সকালে শিফার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হলে কার্ডিয়াক অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে ভর্তি করা হয়। তবে তার অবস্থা বর্তমানে উন্নতি হওয়ায় আজকেই কেবিনে দেওয়া হতে পারে।

ডা শাহানূর ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এই অপারেশনে ৮০ জনের একটি টিম ছিল। পরিবারটি অনেক গরিব তাই তাদের চিকিৎসা ব্যয় বহন করা সম্ভব হচ্ছিল না। চিকিৎসার খরচ বহন করে ঢামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, সমাজসেবা অধিদপ্তর, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ, আকিজ গ্রুপ, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট, বিএসএমএমইউ, বারডেম, ট্র্যান্সফিউশন মেডিসিন ও ল্যাবরেটরি মেডিসিন।’

হাসপাতালে চিকিৎসার বিষয়ে শিফা ও রিফার বাবা বাদশা বলেন, ‘আমার জোড়া লাগানো মেয়েদের চিকিৎসায় সকল ধরনের সেবা আমি ফ্রি পেয়েছি। এক বছর ধরে শাহানূর ম্যাডাম নিজের পকেট থেকে অনেক টাকা-পয়সা খরচ করেছেন এবং আমার মেয়েদের চিকিৎসা করে যাচ্ছেন। আমার মেয়েকে যারা চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন আমি সবাইকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই।’

এ সময় হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘১৫ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চিকিৎসা সেবা নিয়ে আমি অনেক ব্যস্ত ছিলাম। এর মধ্যেও শিফা ও রিফার চিকিৎসার বিষয় নিয়ে আমার সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ করতেন পেডিয়েট্রিক সার্জারি বিভাগের প্রফেসর ডা. শাহানূর ইসলাম।  এর আগেও ঢাকা মেডিক্যাল জোড়া লাগানো তোফা তহুরা লাবিবা ও লামিসার সফল অপারেশন এই ঢাকা মেডিক্যালই করা হয়েছে।’

এই জটিল এবং দীর্ঘমেয়াদি অপারেশনে ছিলেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. মো. মোজাফফর হোসেন, অধ্যাপক ডা. শুব্রত কুমার মন্ডল, সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোসলেমা বেগম, সহযোগী অধ্যাপক ডা. সিদ্দিকুর রহমান, ঢাকা শিশু হাসপাতাল থেকে সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. মোঃ মকবুল হোসেন, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন থেকে সহকারী অধ্যাপক ডা. শামীম উল হাসনাইন ও অন্যান্য।

এ ছাড়াও ছিলেন বার্ন, প্লাস্টিক ও রিকনস্ট্রাকটিভ সার্জন হিসেবে ছিলেন জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউট থেকে অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ নোয়াজেস খান, সহযোগী অধ্যাপক ডা. কাজী ইমরান, সহকারী অধ্যাপক ডা. মাজহারুল হক ইমরান, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ডা. বিধান সরকার, বিভাগীয় প্রধান, হেপাটোবিলিয়ারী সার্জন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে অধ্যাপক ডা. নূর হোসেন ভুইয়া, সহযোগী অধ্যাপক ডা. এইচ এ নাজমুল হাকিম, সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাওন শাহরিয়ার, কার্ডিয়াক সার্জন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন থেকে প্রধান কার্ডিয়াক সার্জন অধ্যাপক শরিফুজ্জামান, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. ইসতিয়াক, আহমেদ দিপু,

আরো ছিলেন ভাস্কুলার সার্জন ন্যাশনাল হৃদরোগ ইন্সটিটিউট থেকে বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. আবুল হাসান মুহাম্মদ বাসার, সহকারী অধ্যাপক ডা. মো মোকলেসুর রহমান, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে আবাসিক সার্জন ডা. রওনক খুরশিদ, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে থোরাসিক সার্জন অধ্যক্ষ ডা. মো কামরুল আলম, সহকারী অধ্যাপক ডা. ওসমান গনি, আবাসিক সার্জন ডা. গোলাম মুরসালিন, শিশু সার্জারি থেকে অধ্যাপক ও ইউনিট প্রধান ডা. শাহনূর ইসলাম (টিম লিডার), সহকারী অধ্যাপক ডা. এ কে এম খায়রুল বাশার, আবাসিক সার্জন ডা. কামরুন্নাহার, সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. এন এ এম নাহিদুজ্জামান, ডা. তাসনিয়া তারান্নুম, বারডেম থেকে অধ্যাপক ডা. নুসরাত গফুর, বিএসএমএমইউ থেকে সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফারজানা আলম,

ছিলেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে অধ্যাপক ডা. সাহারা হক জেরিন, সহকারী অধ্যাপক ডা. সাজিদা নাহিদ, নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন থেকে সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. নূরুল আকতার হাসান, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. অমিত সোম, ডা. মাসুরা মোশাররফ, ট্রান্সফিউশান মেডিসিন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. কাসফিয়া আলম, ল্যাবরেটরি মেডিসিন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে সিনিয়র ক্লিনিক্যাল প্যাথলজিষ্ট শায়লা সারমিন, মাইক্রোবায়োলজিস্ট ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে অধ্যাপক সাজ্জাদ বিন শাহিদ, কার্ডিওলজিস্ট ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. আজিজুল হক, নার্সবৃন্দ ও অন‍্যান‍্যরা।

জনপ্রিয়