ঢাকা শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪ , ১৬ কার্তিক ১৪৩১ আর্কাইভস ই পেপার

bkash
bkash
udvash
udvash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
bkash
bkash
udvash
udvash

কালীপূজা দীপাবলি উৎসব আজ

বিবিধ

আমাদের বার্তা ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:০২, ৩১ অক্টোবর ২০২৪

সর্বশেষ

কালীপূজা দীপাবলি উৎসব আজ

শিশির ঝরা হেমন্তের ঘন ঘোর অমাবস্যা তিথিতে আজ বৃহস্পতিবার হিন্দু সম্প্রদায়ের শ্যামাপূজা। তারা দীপাবলির আলোকে উদ্ভাসিত করে তুলবেন চারদিক। হিন্দুরা মনে করেন, এ মাহেন্দ্রলগনে আবির্ভাব ঘটবে কালী দেবীর। ভূ-ভারত হয়ে এ দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ পালন করবে দীপাবলি উৎসব। ন্যায়ের জয় আর পারলৌকিক আঁধার সরিয়ে ফেলার কামনায় তারা নৈবেদ্য দেবে তাদের কালীমাতার পাদপদ্মে। মঙ্গল শিখায় হিন্দু গৃহগুলো আলোকিত করে রাখা হবে। নিশি উপবাসের পর আগামীকাল অন্নকূট মহোত্সব আর সন্ধ্যা আরতি দেওয়া হবে। 

বিশুদ্ধ পঞ্জিকামতে, আজ সন্ধ্যায় দীপাবলি ও মঙ্গল শিখা প্রজ্বালন এবং দিবাগত রাতে শ্যামাপূজা, প্রসাদ বিতরণ, এক দিন পরই ভাইফোঁটা, অতিথি আপ্যায়ন ও আরতি। শ্যামাপূজা উপলক্ষে ঢাকেশ্বরী মন্দিরসহ দেশের পূজামণ্ডপগুলোতে প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। এদিকে কলকাতার বাইরে বিশাল ভারতে হিন্দুদের প্রধান ধর্মীয় পার্বণ এই ‘দিওয়ালি’। ‘ধনতেরাস’ ঘিরে সেখানে চলছে উৎসবের বহুমাত্রিক মহাযজ্ঞ। ভারতীয় স্যাটেলাইট টেলিভিশনগুলোতে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালা সাজানো হয়েছে। কালীপূজা উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন নানা ধর্মীয় উৎসব কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

সংগঠনসমূহ হলো মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ, রমনা কালীমন্দির ও মা আনন্দময়ী আশ্রম, শ্রীশ্রী বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির ও শশ্মান কমিটি, রাধা গোবিন্দ জিও ঠাকুর মন্দির, শ্রীশ্রী শিবমন্দির। দীপাবলি বা দিওয়ালি উৎসব নিয়ে হিন্দু পুরাণ কাহিনী ও ইতিহাস থেকে হরেক রকম তথ্য পাওয়া যায়। পুরাণ কাহিনী মতে, ক্ষীরসাগর মন্থনের পর কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের ত্রয়োদশী তিথিতে অমৃতভান্ড হাতে সমুদ্র থেকে ধন্বন্তরি উঠে এসেছিলেন। সেজন্য তিথির নাম ধন্বন্তরি ত্রয়োদশী (ধনতেরাস)। ঐ দিন একই সঙ্গে স্বর্গচ্যুত দেবী লক্ষ্মীও সমুদ্র থেকে উঠে আসেন। তারপর অমৃতের ভাগ নিয়ে দেবাসুরের লড়াইয়ের পরে, লক্ষ্মীদেবী পুনরায় স্বর্গে ফিরে যান এ কার্তিকী অমাবস্যার রাতেই। সে ঘটনার স্মরণেই ঐ অমাবস্যার রাত সাজানো হয় প্রদীপ জ্বালিয়ে। আবার অন্য হিন্দু পুরাণ মতে, দেবতাদের পরাজিত করে বলি রাজা লক্ষ্মীকে পাতালে লুকিয়ে রাখেন। এ কার্তিকী অমাবস্যার রাতেই নারায়ণ বলিরাজাকে পরাজিত করে পাতাল থেকে লক্ষ্মীকে উদ্ধার করে আনেন। রামায়ণ কথন অনুসারে রাবণ বধের পর সীতাকে উদ্ধার করে রাম যেদিন অযোধ্যায় ফিরেছিলেন, সে দিনটি ছিল কার্তিকী-অমাবস্যা। পুরো অযোধ্যা সেদিন রাম-সীতাকে বরণ করার জন্য আলোকসজ্জায় সেজে উঠেছিল। আবার মহাভারতে অনুসারে, নবকাসুরকে বধ করে কৃষ্ণ অসুরের বন্দিনী ৬০ হাজার গোপিনীকে উদ্ধার করেন এ অমাবস্যার রাতেই। পরে তাদের সবাইকে কৃষ্ণ বিবাহও করেন। কৃষ্ণের ভক্ত-অনুগামীদের কাছে ঐ গোপিনীদের মুক্তির স্মরণ উৎসবই দীপাবলি। হিন্দু পুরাণ মতে, দেবী কালী-দুর্গারই একটি রূপ। সংস্কৃত ভাষার ‘কাল’ শব্দ থেকে কালী নামের উৎপত্তি। কালীপূজা হচ্ছে শক্তির পূজা। জগতের সব অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে শুভশক্তির বিজয়ের মধ্যেই রয়েছে কালীপূজার মাহাত্ম্য। কালীদেবী তার ভক্তদের কাছে শ্যামা, আদ্য মা, তারা মা, চামুণ্ডী, ভদ্রকালী, দেবী মহামায়াসহ বিভিন্ন নামে পরিচিত। অন্য হিন্দু পুরাণ অনুসারে ১৪ বছর বনবাসের পর এ রাম অযোধ্যায় ফেরেন। সেদিন পুরো অযোধ্যা সেজে উঠেছিল আলোয়। তেলের প্রদীপ জ্বালিয়ে, ফুলের রঙ্গোলি সাজিয়ে রামচন্দ্রকে স্বাগত জানিয়েছিল গোটা অযোধ্যাবাসী। সেই থেকেই এদিন দেশ জুড়ে পালিত হয় দীপাবলি উৎসব। প্রথা অনুসারে দীপাবলির সন্ধ্যায় তেল দিয়ে সহস্র মাটির প্রদীপ জ্বালানো হয়। এখনো অনেক স্থানে এই প্রথা চালু আছে। তবে বর্তমানে শহরাঞ্চলে অনেকে তেলের প্রদীপের পরিবর্তে মোমবাতি ব্যবহার করেন। হিন্দুমতে,দীপান্বিতা অমাবস্যার প্রধান আরাধ্য দেবী হলেন দক্ষিণা কালী। কালী করলাবন্দনা, মুক্তকেশী, মহামেঘের মতো তার বর্ণ। মুখে বিকশিত দন্তপঙক্তি। দুই অধরপ্রাপ্ত বেয়ে পড়ছে রক্তধারা। গলায় মুক্তমালা, কর্ণে শিশুশবের কর্ণভূষণ। মা কালীর চার হাত। বাঁ-দিকে ওপরের হাতে রক্তমাখা খোপানসী খড়গ, নিচের হাতের সদচ্ছন্দ মুণ্ড। ডানদিকের হাতে দুটিতে অভয় ও বর। মহাদেবের বুকে পা রেখে কালী যেন নৃত্য করছেন। আপাতদৃষ্টিতে কালী ভীষণ ভয়ঙ্করী।

নির্ঘণ্ট: বেণী মাধব শীলের পঞ্জিকা অনুসারে, কার্তিক অমাবস্যা তিথি পড়বে আজ ৩১ অক্টোবর বেলা ৩টা ৫২ মিনিটে। অমাবস্যা তিথির অবসান হবে আগামীকাল ১ নভেম্বর দুপুর ১২টা ৪৮ মিনিটে। পুজোর জন্য শুভ সময় থাকবে আজ রাত ১১টা ৪৮ মিনিট থেকে রাত ১২টা ৪৮ মিনিট পর্যন্ত। কালীর পুজো সারা রাত ধরে চললেও এই এক ঘণ্টা সময়ের মধ্যেই কালীর আরাধনার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় থাকবে।

জনপ্রিয়