ঢাকা বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪ , ২৮ কার্তিক ১৪৩১ আর্কাইভস ই পেপার

bkash
bkash
udvash
udvash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
bkash
bkash
udvash
udvash

মেজর এম এ গনির মৃত্যুবার্ষিকী আজ

বিবিধ

আমাদের বার্তা ডেস্ক

প্রকাশিত: ০০:০০, ১১ নভেম্বর ২০২৪

সর্বশেষ

মেজর এম এ গনির মৃত্যুবার্ষিকী আজ

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা মেজর এম এ গনির মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ছিলেন একজন কিংবদন্তি জন নেতা ছিলেন যার কীর্তি এখনও নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে।

পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে বাঙালি মুসলমানদের জন্য আলাদা নিয়মিত বাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা মেজর এম এ গনি ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দের ১ ডিসেম্বর কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার নাগাইশ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি খুলনা থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করেন এবং উচ্চ শিক্ষার জন্য কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে যোগ দেন। কিন্তু তার চাচা ডা. এম এ সোবহান মারা যাওয়ায় তার পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়।

১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বরে পড়াশোনা ছেড়ে কলকাতায বেঙ্গল ফায়ার সার্ভিসে যোগ দেন। ২য় বিশ্বযুদ্ধের শুরুতে ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দের ৮ জানুযারি ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কমিশন সার্ভিসে যোগ দেন। ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দের ৮ আগস্ট পদাতিক বাহিনীতে কমিশন লাভ করেন এবং ইন্ডিয়ান পাইওনিযার কোরে নিযোজিত হন।

যুদ্ধকালীন তিনি উত্তরে ব্রহ্মপুত্র নদীর পূর্ব পাশের এলাকা থেকে দক্ষিণে বার্মার আকিয়াব পর্যন্ত পাইওনিয়ার কোরের সেনাদের নিয়ে শত্রুদের সঙ্গে লড়াই করে আগ্রাসন প্রতিহত করেছিলেন। বার্মা অভিযানের সমযই তৎকালীন ব্রিটিশ সেনা কতৃর্পক্ষ তার অধীনে যুদ্ধ করা বাঙালি মুসলিম সৈন্যদের বীরত্ব, সাহসিকতা এবং যুদ্ধের ক্ষমতা পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। তাদের দক্ষতা ও সাহসিকতা ব্রিটিশ সেনা অধিনায়কদেরও নজর কাড়ে।

যুদ্ধের ভয়াবহতার সঙ্গে অভিজ্ঞ পাইওনিয়ার কোরের সৈন্যদের নিয়ে নিয়মিত সেনাবাহিনী গঠনের জন্যে ঊর্ধ্বতন কমান্ডারদের কাছে ক্যাপ্টেন গনির প্রস্তাব পূর্ব বাংলার সৈনিকদের নতুন আশার জন্ম দেয়। যুদ্ধ শেষে ভারত বিভক্তির পূর্বেই পাইওনিয়ার কোরের সৈন্যদের যাদের রাখা হবে তাদের ২ টি কোম্পানি নিযে ভারতের যালনা শহর থেকে রওয়ানা দিয়ে ১৭ সেপ্টম্বর ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ট্রেন যোগে ঢাকার ফুলবাড়িয়া এসে পৌঁছায়। পরবর্তীতে কুর্মিটোলায় সেনাছাউনি গড়ে তোলার আদেশ আসে। ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট কুর্মিটোলায আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়।

সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ অপরাজেয় এই রেজিমেন্ট প্রথম সক্রিয় যুদ্ধ দেখেছিলো ১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দে পাক ভারত যুদ্ধে। এতে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অফিসার ও সৈন্যরা সাহসিকতার সঙ্গে লড়াই করে।

 ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে মুক্তিযুদ্ধের আগে ৮টি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ইউনিট গড়ে উঠেছিলো যার মধ্যে ৫টি ছিলো তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট তার বীরত্ব গৌরব দেখায় কারণ এটি ছিলো ঐতিহাসিক রেজিমেন্ট, যেটি ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সমরাঙ্গনে নেতৃত্ব দিয়েছিলো ও মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক এবং পথপ্রদর্শক ছিলো।
এখানে বলা বাহুল্য যে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট অনুরূপ আরেকটি বাহিনী হলো বাংলাদেশ ইনফ্যাট্রি রেজিমেন্ট।

ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কিছু ইউনিট দিযে ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে যাত্রা শুরু করানো হল একটি পদাতিক রেজিমেন্ট হিসাবে বাংলাদেশ ইনফেনট্রি রেজিমেন্টের। সুতরাং নিরপেক্ষভাবে বললে সমগ্র পদাতিক বাহিনী যা সেনাবাহিনীর মূল ফাউন্ডেশন এক দেশপ্রেমিক সন্তান মেজর এ গনির দূরদৃষ্টি ও কর্মের ফসল যা অনেকে ভাবতে ও স্বীকার করে মূল্যায়ন করতে চান না।
মেজর এম এ গনি ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে বার্লিনে হৃদরোগে আক্রান্ত হযে মারা যান। তাকে কুমিল্লা সেনানিবাসে দাফন করা হয।

আজ বাদ মাগরিব অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের সংগঠন রাওয়া ক্লাবে মেজর গনির স্মরণে এক দোয়া মাহফিলের আযোজন করা হযেছে। সকালে কুমিল্লা সেনানিবাসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তার সমাধিতে আনুষ্ঠানিকভাবে শ্রদ্ধা জানানো হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিটি ইউনিটে মেজর গণির আত্মার মাগফেরাত ও পরিবারের কল্যাণ চেয়ে দোয়া অনুষ্ঠিত হবে।

জনপ্রিয়