ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪ , ২৯ কার্তিক ১৪৩১ আর্কাইভস ই পেপার

bkash
bkash
udvash
udvash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
bkash
bkash
udvash
udvash

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের পরামর্শ

বিবিধ

আমাদের বার্তা পতিবেদক

প্রকাশিত: ১০:৫৩, ১৪ নভেম্বর ২০২৪

সর্বশেষ

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের পরামর্শ

সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল; ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ; সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা; এক ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না, এমন বিধান করা; বিভিন্ন জাতি, ধর্ম ও ভাষার স্বীকৃতির দেওয়া; দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের বিধান করাসহ বিভিন্ন পরামর্শ এসেছে বিশিষ্ট নাগরিকদের কাছ থেকে। এ ছাড়া সংসদের আসনসংখ্যা অন্তত ৪০০ করা এবং এর মধ্যে ১০০টি নারীদের জন্য ঘূর্ণমান পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা, সব আসনেই প্রত্যক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা পরামর্শ  দেন তারা।

গতকাল বুধবার সংবিধান সংস্কার নিয়ে  বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে বৈঠক করে সংবিধান সংস্কার কমিশন। সেখানে এসব প্রস্তাব, পরামর্শ উঠে আসে বলে সভা সূত্রে জানা গেছে।

ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ১০টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। এর মধ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশনসহ ৬টি কমিশন কাজ শুরু করেছে। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ৬টি কমিশনের সরকারের কাছে তাদের সংস্কার প্রস্তাব জমা দেওয়ার কথা।

অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বাধীন সংবিধান সংস্কার কমিশন সোমবার অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় শুরু করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গতকাল একাধিক পর্বে বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করা হয়। সংবিধান সংস্কার কমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গতকালের মতবিনিময় সভায় সংস্কারের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্‌ফুজ আনাম, অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) প্রধান সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য জাহেদ উর রহমান, মুফতি সাইফুল ইসলাম ও মুফতি আবদুল্লাহ মাসুম।

বৈঠক শেষে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, তিনি ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ, স্থানীয় সরকারব্যবস্থা শক্তিশালী করা, সব স্তরে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের শাসন প্রতিষ্ঠা, সংসদে নারী প্রতিনিধিত্বের বর্তমান পদ্ধতি পরিবর্তন করার প্রস্তাব দিয়েছেন।

ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্‌ফুজ আনাম বলেন, তিনি সংবিধান পুনর্লিখন নয়, সংশোধন করার পক্ষে মত দিয়েছেন। তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল করা; এক ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না, এমন বিধান করা; প্রধানমন্ত্রীর একচ্ছত্র ক্ষমতা কমানো; কিছু ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির হাতে ক্ষমতা দেওয়া; জাতীয় সংসদকে নির্বাহী বিভাগের জবাবদিহির জায়গায় প্রতিষ্ঠিত করা; সংবিধান যথাযথভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে কি না, তা দেখার জন্য একটি স্বাধীন সংবিধান কমিশন গঠন করা; দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ করা; বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণভাবে স্বাধীন করার প্রস্তাব করেছেন। বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন থাকবে, তবে তারা যথাযথভাবে কাজ করছে কি না, তা তদারক করার একটি পদ্ধতি তৈরি করার কথাও তিনি বলেছেন।

এ ছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশন, মানবাধিকার কমিশন, তথ্য কমিশনসহ সব কমিশনকে সাংবিধানিক সংস্থা করা এবং এসব সংস্থার প্রধানের পদে নিয়োগের প্রক্রিয়া সংবিধানে উল্লেখ করার কথা বলেছেন ডেইলি স্টার সম্পাদক।

সংবিধানে মতপ্রকাশ এবং সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করারও প্রস্তাব দিয়েছেন ডেইলি স্টার সম্পাদক। বর্তমান সংবিধানে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার কথা বলা আছে। তবে সেখানে এই স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে ‘রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, বিদেশি রাষ্ট্রসমূহের সহিত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, জনশৃঙ্খলা, শালীনতা ও নৈতিকতার স্বার্থে কিংবা আদালত-অবমাননা, মানহানি বা অপরাধ-সংঘটনে প্ররোচনা সম্পর্কে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসংগত বাধানিষেধ সাপেক্ষে’। এখানে জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টি বাদে বাকি বিষয়গুলো বাদ দেওয়া এবং জাতীয় নিরাপত্তার সংজ্ঞা সুনির্দিষ্ট করার প্রস্তাব দিয়েছেন মাহ্‌ফুজ আনাম। এ ছাড়া তিনি ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ, নির্বাহী বিভাগ, আইন সভা ও বিচার বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য পুনঃপ্রতিষ্ঠার ওপর জোর দেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গতকাল সকালে সংবিধান সংস্কার কমিশনের সঙ্গে সভায় সুজনের পক্ষ থেকে বেশ কিছু লিখিত প্রস্তাব দেওয়া হয়। তারা নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তনের প্রস্তাব দিয়েছে। তবে সেখানে বিচার বিভাগকে যুক্ত না করা, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ ছয় মাস করা এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কার্যপরিধি রুটিন কাজের বাইরেও বিস্তৃত করার কথা বলেছে সুজন।

 রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য সৃষ্টি, বিদ্যমান সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের সংস্কার (আস্থা ভোট ও বাজেট পাসের ক্ষেত্রে ফ্লোর ক্রসিং নিষিদ্ধ করা এবং অন্য সব ক্ষেত্রে দলের প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার সুযোগ রাখা), সব জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের স্বীকৃতিসহ সংবিধানকে প্রকৃত অর্থেই অসাম্প্রদায়িক বৈশিষ্ট্যের দলিলে পরিণত করা, জাতীয় সংসদের মেয়াদ চার বছর করার প্রস্তাব দেওয়া হয়।

জনপ্রিয়