ফল স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ উপকারী। ফল খেলে ছোট-বড় বিভিন্ন অসুখ থেকে মুক্ত থাকা যায়। ওজন কমাতেও ফলের জুড়ি মেলা ভার। ত্বক ভালো রাখতেও রূপবিশেষজ্ঞরা নিয়মিত ফল খাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু ফল কখন খাবেন? কখন ফল খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়?
কোনো কোনো পুষ্টিবিদ বলেন ফল খাওয়ার আদর্শ সময় সকাল। আবার কেউ কেউ বলেন সকাল ও দুপুরের মাঝামাঝি সময়ে ফল খাওয়া ভালো। কেউ কেউ মনে করেন সূর্যাস্তের পর ফল খাওয়া ঠিক নয়। তবে সূর্যাস্তের পর ফল না খাওয়ার বিপক্ষে ভারতীয় পুষ্টিবিদ শিখা আগরওয়াল। তার মতে, “প্রচলিত এই ধারণা আসলে প্রকৃতির নিয়ম মেনে তৈরি হয়েছে। দেহঘড়ি বা শরীরের নিজস্ব ছন্দের সঙ্গে তা মিলে যায়। তবে ফলের পুষ্টিগুণ সঠিক ভাবে পেতে ফলের ধরন বুঝে ফল খাওয়ার সময় নির্বাচন করতে হবে।”
শিখা বলেন, “খালি পেটে ফল খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে। বরং দিনের শুরুতে প্রোটিন ও ফ্যাটের সমন্বয়ে তৈরি খাবার খাওয়া যেতে পারে। এর ফলে রক্তে বাড়তি শর্করা যেমন নিয়ন্ত্রণে থাকবে, তেমনই সারা দিন কাজ করার মতো এনার্জিও পাওয়া যাবে।”
আবার খুব ভরা পেটে ফল খেতে নিষেধ করছেন পুষ্টিবিদ। কারণ, ফলে থাকা ফ্রুক্টোজ় অর্থাৎ বাড়তি ক্যালোরি জমতে জমতে ফ্যাটে রূপান্তরিত হয়ে যেতে পারে।
কখন ফল খাবেন?
সকালে ঘুম থেকে উঠে
ফল খাওয়ার আদর্শ সময় হলো সকাল। কিন্তু একেবারে খালি পেটে ফল খাওয়া যাবে না। সামান্য কিছু খেয়ে তারপর ফল খাওয়া যেতে পারে। ঘুম থেকে উঠার পর ফল খেলে তা দ্রুত হজম হয়ে যায়। ফলে থাকা গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন এবং এনজ়াইমগুলি সঠিক ভাবে কাজ করতে পারে। দিনের শুরুতে ভিটামিন সি জাতীয় ফল, যেমন কলা, আতা ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে।
সকালের নাশতা এবং মধ্যাহ্নভোজের মাঝে
সকালের নাশতা এবং মধ্যাহ্নভোজের মাঝে হালকা ক্ষুধা পেলে ফল খেতে পারেন। এতে দুপুরের খাবার সহজে হজম হয়ে যায়। হজমশক্তি বাড়াতে ফাইবার সমৃদ্ধ ফল, যেমন আপেল, পেয়ারা, নাশপাতি খেতে পারেন।
রাতে শুতে যাওয়ার আগে ফল নয়
ঘুমাতে যাওয়ার আগে ফল খাওয়ার অভ্যাস রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে। শুধু তা-ই নয়, ফলে থাকা অ্যাসিডের কারণে পাকস্থলীর অস্বস্তি বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এতে ঘুমের সমস্যা হয়। তাই রাতে ফল না খাওয়াই ভালো। একান্তই যদি ফল খেতে হয়, তাহলে এমন ফল বেছে নিন, যেগুলোতে মেলাটোনিনের পরিমাণ বেশি। কারণ, মেলাটোনিন চোখের পাতায় ঘুম আনতে সাহায্য করে।