ঢাকা সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪ , ১৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১ আর্কাইভস ই পেপার

bkash
bkash
udvash
udvash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
bkash
bkash
udvash
udvash

চিত্রশিল্পী কামরুল হাসানের জন্মদিন আজ

বিবিধ

আমাদের বার্তা ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৮:৩০, ২ ডিসেম্বর ২০২৪

আপডেট: ১১:১৩, ২ ডিসেম্বর ২০২৪

সর্বশেষ

চিত্রশিল্পী কামরুল হাসানের জন্মদিন আজ

বিখ্যাত চিত্রশিল্পী কামরুল হাসানের জন্মদিন আজ। তার পুরো নাম আবু শরাফ মোহাম্মদ কামরুল হাসান। ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে তিনি পিতার কর্মস্থল কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস ছিলো পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার নারেঙ্গা গ্রামে। পিতা মোহাম্মদ হাশিম ছিলেন তিলজলা গোরস্থানের সুপারিনটেন্ডেন্ট।

কামরুল হাসানের শিক্ষাজীবন কাটে কলকাতায়। তিনি কলকাতার মডেল এম ই স্কুল এবং কলকাতা মাদরাসায় প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কলকাতার গভর্নমেন্ট স্কুল অব আর্টস-এ ভর্তি হন এবং ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে চিত্রকলায় স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ছাত্রজীবনে চিত্রাঙ্কনের পাশাপাশি তিনি বয়েজ-স্কাউট, শরীরচর্চা,  ব্রতচারী আন্দোলন, শিশু সংগঠন মণিমেলা, মুকুল ফৌজ ইত্যাদি কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন। ১৯৪৫ খ্রিষ্টাব্দে শরীরচর্চা প্রতিযোগিতায় তিনি বেঙ্গল চ্যাম্পিয়ন হন।

দেশবিভাগের পর কামরুল হাসান ঢাকা চলে আসেন এবং শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের সঙ্গে মিলিত হয়ে ঢাকায় একটি আর্ট স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। ঢাকায় চিত্রকলার চর্চা ও প্রসারের লক্ষ্যে ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন আর্ট গ্রুপ। ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প কর্পোরেশনের নকশা কেন্দ্রের প্রধান নকশাবিদ নিযুক্ত হন এবং ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দে উক্ত পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

কামরুল হাসান বাংলাদেশের স্বাধিকার ও অসহযোগ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও বেতার দপ্তরের শিল্প বিভাগের পরিচালকের দায়িত্বও পালন করেন। এ সময় পাকিস্তানের সামরিক প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের রক্তপায়ী, হিংস্র মুখমন্ডল সম্বলিত একটি পোস্টার এঁকে আলোড়ন সৃষ্টি করেন। পোস্টারটির শিরোনাম: ‘এই জানোয়ারদের হত্যা করতে হবে।’ কামরুল হাসানের চিত্রকলার প্রধান উপাদান নর-নারী (বিশেষত রমণীর শরীর), পশুপাখি (প্রধানত গরু ও শৃগাল), সাপ ও প্রকৃতি। এসবের মধ্য দিয়ে তিনি আবহমান বাংলার গ্রামীণ সমাজের সামগ্রিক রূপ, বাংলার নিসর্গ, স্বৈরশাসকদের অত্যাচার, বাংলাদেশের  মুক্তিযুদ্ধ এবং হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যার চিত্র চমৎকারভাবে তুলে ধরেন। তার অঙ্কিত চিত্রকলা ষাটের দশকে বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশের আন্দোলনে, সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলনে এবং ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে মুক্তিযুদ্ধে জনসাধারণকে দারুণভাবে উজ্জীবিত করেছে।

কামরুল হাসানের চিত্রকলায় লৌকিক ও আধুনিক রীতির মিশ্রণ ঘটায় তিনি ‘পটুয়া কামরুল হাসান’ নামে পরিচিতি লাভ করেন। তিনি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার চূড়ান্ত নকশা ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সরকারি মনোগ্রাম তৈরি করার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। 

চিত্রকলায় অসাধারণ অবদানের জন্য কামরুল হাসান বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত হন। সেসবের মধ্যে প্রেসিডেন্ট পুরস্কার, কুমিল্লা ফাউন্ডেশন স্বর্ণপদক, স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার, চারুশিল্পী সংসদ সম্মান, বাংলা একাডেমির ফেলো এবং কাজী মাহবুবউল্লাহ ফাউন্ডেশন পুরস্কার উল্লেখযোগ্য। তার ‘তিনকন্যা’ ও ‘নাইওর’ চিত্রকর্ম অবলম্বনে যথাক্রমে যুগোশ্লাভিয়া সরকার ও বাংলাদেশ সরকার দুটি স্মারক ডাকটিকেট প্রকাশ করেছে। ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দের ২ ফেব্রুয়ারি তিনি হৃদরোগে মৃত্যুবরণ করেন। 

 

জনপ্রিয়