কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ছিলেন ত্রিশোত্তর বাংলা কথাসাহিত্যের শক্তিমান লেখক।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ মে বাবার কর্মস্থল বিহারের সাঁওতাল পরগনার দুমকা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস ছিলো তৎকালীন ঢাকা জেলার বিক্রমপুরের কাছে মালবদিয়া গ্রামে। তার প্রকৃত নাম প্রবোধকুমার। তার বাবার নাম হরিহর বন্দ্যোপাধ্যায়।
১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দে মেদিনীপুর জিলা স্কুল থেকে তিনি এন্ট্রান্স পাস করেন। পরে বাঁকুড়া ওয়েসলিয়ন মিশন কলেজ থেকে ১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দে আইএসসি পাস করে তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে বিএসসিতে ভর্তি হন; কিন্তু পাঠ অসমাপ্ত রেখেই পেশাগত জীবনে প্রবেশ করেন।
১৯৩৪ থেকে ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি উদয়াচল প্রিন্টিং অ্যান্ড পাবলিশিং হাউজ পরিচালনা করেন। একই সঙ্গে তিনি বঙ্গশ্রী পত্রিকার সহকারী সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন। কিছুদিন ভারত সরকারের ন্যাশনাল ওয়ার ফ্রন্টের প্রভিন্সিয়াল অর্গানাইজার এবং বেঙ্গল দপ্তরে প্রচার সহকারী পদেও কর্মরত ছিলেন।
স্নাতক শ্রেণিতে অধ্যয়নের সময় বিচিত্রা পত্রিকায় তার প্রথম গল্প ‘অতসী মামী’ প্রকাশিত হলে পাঠক মহলে সাড়া ফেলে। নিষ্ঠা ও অধ্যবসায়ের ফলে তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত লেখকের মর্যাদা লাভ করেন।
জীবনের প্রথম পর্বে তিনি মার্কসবাদে দীক্ষা নেন। ১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সক্রিয় সদস্য হন।
ফ্যাসিবাদবিরোধী লেখক ও শিল্পী সংঘের সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন। মানুষের মনোরহস্যের জটিলতা উন্মোচনে তিনি ছিলেন দক্ষ শিল্পী। শহরের পাশাপাশি গ্রামজীবনের দ্বন্দ্বসংকুল পটভূমিও তার উপন্যাস ও গল্পে গুরুত্ব পেয়েছে। তিনি অর্ধশতাধিক উপন্যাস ও ২২৪টি গল্প রচনা করেছেন। তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাস : ‘জননী’, ‘দিবারাত্রির কাব্য’, ‘পদ্মানদীর মাঝি’, ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’। ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।