‘আমাদের দেশ তারে কত ভালোবাসি/সবুজ ঘাসের বুকে শেফালির হাসি/মাঠে মাঠে চরে গরু/নদী বয়ে যায়/জেলে ভাই ধরে মাছ মেঘের ছায়ায়।’ ‘আমাদের দেশ’ ছড়ার রচয়িতা প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ ও নাট্যকার, কবি, ঔপন্যাসিক আ ন ম বজলুর রশীদের মৃত্যুবার্ষিকী আজ।
শিক্ষা, সাহিত্য এবং নাটকে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার এবং ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দে তমঘা-ই-ইমতিয়াজ পুরস্কারে ভূষিত হন। আ ন ম বজলুর রশীদ ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দের ৮ মে ফরিদপুর জেলাশহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পুরো নাম আবু নয়ীম মুহম্মদ বজলুর রশীদ।
তিনি ফরিদপুর জি.টি স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। তারপর তিনি ফরিদপুর জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক, রাজেন্দ্র কলেজ থেকে আইএ, বিএ এবং ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে বিটি পাস করেন। পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। বজলুর রশীদ ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা সরকারি মুসলিম হাইস্কুলে শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। বিভিন্ন সরকারি স্কুলে চাকরি করার পর ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজে প্রভাষক পদে যোগদান করেন এবং ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে অধ্যাপক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে খণ্ডকালীন অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। আ ন ম বজলুর রশীদ দশম শ্রেণির ছাত্র থাকাকালে প্রবন্ধ লিখে ‘ভগবতীচরণ স্মৃতিপদক’ লাভ করেন। এটিই তার সাহিত্যের প্রথম স্বীকৃতি। পাকিস্তান শাসনামলে নাটকের ওপর যে ধরনের বাধা-নিষেধ ছিলো, সেসব উপেক্ষা করেই তিনি নাট্যচর্চা করেছেন। বাংলাদেশের সমাজ ও প্রকৃতি তার রচনার প্রধান বিষয়। বিভিন্ন আঙ্গিকে সাহিত্যচর্চা করতেন বজলুর রশীদ। গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, ভ্রমণকাহিনি, নাটকসহ প্রায় ২০টি গ্রন্থ তিনি রচনা করেন। ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দে বাংলা একাডেমি পুরস্কার এবং ঢাকা বেতারের শ্রেষ্ঠ নাট্যকার ও শ্রেষ্ঠ গীতিকারের পুরস্কারও লাভ করেন তিনি। ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।