তুমি যে গিয়াছ বকুল বিছানো পথে/একটি পয়সা দাও গো বাবু/
দুঃখে যাদের জীবন গড়া তাদের আবার দুঃখ কি রে?
উল্লেখিত গানসহ অনেক জনপ্রিয় গানের রচয়িতা অজয় ভট্টাচার্যের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ১৯০৬ খ্রিষ্টাব্দের ৬ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার শ্যামগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা রাজকুমার ভট্টাচার্য । মায়ের নাম শশীমুখী দেবী। রাজকুমার ভট্টাচার্য ছিলেন পেশায় উকিল। তিনি উকালতি করতেন ত্রিপুরা জেলার সদর কুমিল্লায়।
পিতার ওকালতির সূত্রে তার শৈশব কেটেছে ত্রিপুরা জেলা সদর কুমিল্লায়। প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন কুমিল্লার ঈশ্বর পাঠশালায়। তিনি ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এম এ পাস করেন।
তার গানে সুর দিয়েছেন সে কালের বিখ্যাত সব সুরকাররা। বিশেষভাবে তার গানের সুরকারদের তালিকায় পাওয়া যায়- শচীন দেব বর্মণ, পঙ্কজ মল্লিক, রাইচাঁদ বড়াল, অনুপম ঘটক, ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। তার গানগুলো গেয়েছেন শচীনদেব বর্মণ, কে এল সায়গল, পঙ্কজ মল্লিক, কানন দেবী, হেমন্ত মুখোপাধ্যায় প্রমুখ খ্যাতিমান শিল্পীরা।
চলচ্চিত্র ও গ্রামোফোন রেকর্ড—উভয় ক্ষেত্রেই সে সময়ে তার লেখা গানগুলো সাড়া জাগিয়েছিলো। বাংলা সবাক চলচ্চিত্রের শুরু থেকেই তার গান অনেক প্রচলিত ছিলো। তিনি দুই হাজারেরও বেশি গান লিখেছেন। পরে কয়েকটি সংকলন আকারে প্রকাশিত হয়। চিত্র পরিচালনায় তিনি দক্ষতার ছাপ রেখেছেন।
গীতিকার অজয় ভট্টাচার্য ছাত্রজীবনে কবি কাজী নজরুল ইসলামের সাথে পরিচিত হয়েছিলেন। সেই সূত্রে নজরুল সম্পাদিত ‘ধূমকেতু’ কাগজে তার প্রথম কবিতা ‘উল্কা’ প্রকাশিত হয়েছিলো। এরপর তিনি অজস্র কবিতাও রচনা করেন।
প্রথম জীবনে তিনি রোমান্টিক গান রচনা করলেও, শেষ জীবনে জীবনঘনিষ্ঠ গান রচনা করেছিলেন। ‘এই পেয়েছি অনল জ্বালা’, ‘একটি পয়সা দাও গো বাবু’, ‘দুঃখে যাদের জীবন গড়া’, ‘বাংলার বধূ’ গান তখনকার লোকের মুখে মুখে ফিরতো। অজয় ভট্টাচার্য ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে পরলোকগমন করেন।