ঢাকা শুক্রবার, ০৩ জানুয়ারি ২০২৫ , ১৯ পৌষ ১৪৩১ আর্কাইভস ই পেপার

bkash
bkash
udvash
udvash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
bkash
bkash
udvash
udvash

ভাষা সৈনিক মোহাম্মদ সুলতানের আজ মৃত্যুবার্ষিকী

বিবিধ

আমাদের বার্তা ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৮:৩০, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

সর্বশেষ

ভাষা সৈনিক মোহাম্মদ সুলতানের আজ মৃত্যুবার্ষিকী

ভাষা সৈনিক মোহাম্মদ সুলতানের আজ মৃত্যুবার্ষিকী । তিনি ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দের ভাষা আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী ও সংগঠক ছিলেন।

মোহাম্মদ সুলতান ১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ ডিসেম্বর পঞ্চগড় জেলার (তৎকালীন দিনাজপুর জেলা) বোদা উপজেলার অন্তর্গত মাঝগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মোহাম্মদ শমসের আলী ছিলেন ব্রিটিশ আমলের পুলিশ বিভাগের ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ।

সুলতান ছিলেন বাবা-মায়ের আট সন্তানের মধ্যে পঞ্চম। মোহাম্মদ সুলতান যশোর জেলা স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

সুলতান অল্প বয়সেই ভারত ছাড় ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে রাজনীতিতে আকৃষ্ট হন। ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে পাকিস্তানবিরোধী আন্দোলনে সামিল হন। ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে রাজশাহী ভাষা আন্দোলন ও ছাত্রআন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ১৯৫১ খ্রিষ্টাব্দে যুবলীগে যোগ দিলে তিনি যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক নির্বাচিত হন। মোহাম্মদ সুলতান ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দের বাংলা ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক। তিনিই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম কালো পতাকা উত্তোলনকারী শিক্ষার্থী। ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের জন্ম হলে তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের প্রথম সভাপতি নির্বাচিত হন।

রাজনৈতিক কারণে মোহাম্মদ সুলতান দীর্ঘদিন কারাভোগ করেন। ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে ৯২(ক) ধারা প্রবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সুলতানকে গ্রেফতার করা হয় এবং বিনাবিচারে প্রায় এক বছর কারাভোগ করেন। ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দে সামরিক শাসন জারি হলে মোহাম্মদ সুলতান আবারো গ্রেফতার হন এবং বিনাবিচারে চার বছর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি হিসেবে তাকে আটক রাখা হয়। এছাড়া পাকিস্তান সরকার বিভিন্ন সময়ে তার নামে হুলিয়া জারি করলে আত্মগোপন করে তিনি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যান। ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসর নিয়ে প্রকাশনার কাজে যুক্ত হন।

মোহাম্মদ সুলতান প্রধানত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এম আর আখতার মুকুলের সঙ্গে পুস্তক প্রকাশনা এবং বিক্রয়কেন্দ্র পুঁথিঘর প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসে কবি হাসান হাফিজুর রহমানের সম্পাদনায় ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক সংকলন একুশে ফেব্রুয়ারি প্রকাশ করেন। প্রকাশনার কিছুদিনের মধ্যে তৎকালীন মুসলিম লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার একুশে ফেব্রুয়ারি বইটি বাজেয়াপ্ত করে।

মোহাম্মদ সুলতান প্রগতিশীল পুস্তক প্রকাশনার গুরুত্ব উপলব্ধি করে তার শেষ সম্বলটুকু দিয়ে প্রগতিশীল পুস্তক প্রকাশনার চেষ্টা করেন। পুস্তক প্রকাশকদের সংগঠিত করে দেশে সৃজনশীল ও প্রগতিশীল সাহিত্য পুস্তক প্রকাশনার জন্য এক গঠনমূলক আন্দোলন গড়ে তোলেন। তিনি বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক সমিতির সহ-সভাপতি এবং বাংলা একাডেমির আজীবন সদস্য ছিলেন।

১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে তিনি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে মৃত্যুবরণ করেন। তাকে জুরাইন কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে মোহাম্মদ সুলতানের স্মরণে ঢাকা শহরের কেন্দ্রে ধানমন্ডির ৩ নম্বর সড়কটি ভাষাসৈনিক মোহাম্মদ সুলতান সড়ক হিসেবে নামকরণ করা হয়।

 

জনপ্রিয়