অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গ ও প্রতারণার দায়ে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রাসেল ও তার স্ত্রী চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের দুই বছরের কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আদালত।
গতকাল বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্রের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডের পাশাপাশি তাদের ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরো দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
মামলার শুরু থেকে এই আসামিরা পলাতক ছিলেন। রায়ে তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেঢতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. তৌসিফ মাহমুদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ইভ্যালি ডট কমের ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজের মাধ্যমর চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন দিয়ে বিভিন্ন পণ্য বিক্রয় করে। এতে আকৃষ্ট হয়ে তৌফিক মাহমুদ তাদের প্রতিষ্ঠান থেকে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ২০ মার্চ ইয়ামাহা আর ওয়ান ফাইভ বাইক অর্ডার করেন। যার মূল্যবাবদ দুই লাখ ৪৫ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। ৩ এপ্রিল তিনি আর ওয়ান ফাইভের আরো দুটি বাইক অর্ডার করেন। যার মূল্যবাবদ ৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। তবে কর্তৃপক্ষ ৪৫ দিনের মধ্যে বাইক তিনটি সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়।
আরো বলা হয়, পরবর্তী তিনি ধানমন্ডি অফিসে যোগাযোগ করেন। কর্তৃপক্ষ দুটি চেক দেন। তবে ব্যাংক হিসেবে পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা না থাকায় চেকটি নির্ধারিত তারিখে ব্যাংকে জমা না দিতে অনুরোধ করেন। আসামিদের কথা বিশ্বাস করে তিনি চেকটি ব্যাংকে জমা দেননি। পরবর্তীতে তৌফিক মাহমুদ ১৪ লাখ ১০ হাজার টাকা আদায়ের জন্য তাগাদা দিতে থাকেন। তবে তারা কোনো টাকা তাকে ফেরত দেননি। পরবর্তীতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েও কাজ হয়নি। এ ঘটনায় তৌফিক মাহমুদ গত বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি আদালতে রাসেল ও শামীমার বিরুদ্ধে মামলা করেন।
গত বছরের ২৮ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরু হয়। মামলাটির বিচার চলাকালীন সময়ে আদালত দুই জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন।
২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের ২ জুন চট্টগ্রামে চেক প্রতারণার একটি মামলায় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল ও প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনকে এক বছর করে কারাদণ্ড দেন সপ্তম যুগ্ম চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মহিউদ্দিনের আদালত।
২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ সেপ্টেম্বর প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে করা এক মামলায় ঢাকার মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে রাসেল ও শামীমাকে গ্রেফতার করা হয়। ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিলে জামিনে মুক্তি পান শামীমা। পরে গত ১৯ ডিসেম্বর রাসেল জামিনে মুক্তি পান।
