
১৬ কোটি ৪২ লাখ ৭৯ হাজার ৮৮৩ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব-১ মুহাম্মদ আশরাফুল আলম খোকন ও তার স্ত্রী মিসেস রিজওয়ানা নুরের নামে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে।
এজাহারে জানানো হয়, আশরাফুল আলমের বিরুদ্ধে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ১৩ কোটি ৩৩ লাখ ৯৮ হাজার ৮শ’ ২৭ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। আর তার ৩টি ব্যাংক হিসাবে ১ কোটি ৩৪ লাখ ৩৯ হাজার ৫৭২ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ এনেছে দুদক।
মানিলন্ডারিংয়ের মাধ্যমে খোকন আমেরিকায় নিউ ইয়র্ক শহরে বাড়ি ক্রয় করেছেন বলে জানায় দুদক। আসামির বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর ২৭ (১), ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
অন্যদিকে দ্বিতীয় মামলায় খোকনের স্ত্রীর বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৮ লাখ ৮১ হাজার ৫৬ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। তার ৩টি ব্যাংক হিসাবে ৬ কোটি ১২ লাখ ৪৯ হাজার ৮৩৭ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর গত বছরের আগস্টে খোকনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। ৯ই অক্টোবর তার বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয় আদালত। দুদক সূত্রে জানা গেছে, আশরাফুল আলম খোকনের বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশের নাগরিকত্ব রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হিসেবে ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে দায়িত্ব গ্রহণ করেন আশরাফুল আলম খোকন। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারিতে আশরাফুল আলম খোকন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিবের পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
এদিকে আশরাফুল আলম খোকন তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লিখেছেন, শুনলাম, দুদক আমার বিরুদ্ধে ১৩ কোটি টাকার দুর্নীতির মামলা করেছে! অভিযোগের ভিত্তিতে আমেরিকায় আমার বাড়ির বর্তমান বাজারমূল্য ১৩ কোটি টাকা।
কিন্তু তারা কী জানে, আমেরিকাতে আমি বাড়ির মালিক ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে, আর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যোগ দিয়েছি ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে? তাছাড়া, আমেরিকায় মাত্র ১০% ডাউনপেমেন্ট দিয়ে বাড়ি কেনা যায়, বাকি টাকা বাড়ি ভাড়ার মতো করে ৩০ বছরে শোধ করতে হয়। আর মজার বিষয় হলো, আমার বাড়ির সব তথ্য ও কাগজপত্র আমিই দুদককে দিয়েছি! ওরা আমার কাছে চেয়েছিল।
তারা আরো বলেছে, তিনটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে ১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা! কিন্তু এই হিসাব কীভাবে বানিয়েছে? ৬৭+ লাখ টাকা জমা হয়েছে, ৬৬+ লাখ উত্তোলন হয়েছে-আর এই দুই যোগ করেই বলছে ১ কোটি ৩৪ লাখ! তার ওপর, এই পুরো ৬৭ লাখ টাকাই আমার বেতনের টাকা, আর প্রবাসে থাকাকালীন রেমিট্যান্স পাঠানোর টাকা।