ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫ , ৩ বৈশাখ ১৪৩২ আর্কাইভস ই পেপার

bkash
bkash
udvash
udvash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
bkash
bkash
udvash
udvash

বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফ এর মৃত্যুবার্ষিকী আজ

বিবিধ

আমাদের বার্তা ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৮:৩০, ৮ এপ্রিল ২০২৫

সর্বশেষ

বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফ এর মৃত্যুবার্ষিকী আজ

পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলসের ল্যান্স নায়েক, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফ এর মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দের ৮ মে ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী থানার সালামতপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

পিতা মুন্সী মেহেদী হাসান ছিলেন স্থানীয় মসজিদের ইমাম। মাতা মকিদুন্নেসা। আবদুর রউফ গ্রামের স্কুলে পড়াশুনা করেন। শৈশবেই তিনি পিতৃহারা হন। সংসারের অভাব দেখে আবদুর রউফ ১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দের ৮ মে পূর্ব পাকিস্তান রাইফেল্সে যোগ দেন। প্রশিক্ষণ শেষে নিয়োগ পান পূর্ব পাকিস্তানের সীমান্ত রক্ষার দায়িত্বে।

১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসে আবদুর রউফ ইপিআর-এর ১১নং উইং চট্টগ্রামে কর্মরত ছিলেন। ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি সৈন্যরা সারা দেশে ব্যাপক গণহত্যা চালায়। চট্টগ্রাম ইপিআর-এর বাঙালি সদস্যদের পূর্ব সচেতনতা এবং সময়োচিত পদক্ষেপের কারণে তারা রুখে দাঁড়ায় শত্রুর বিরুদ্ধে। রাতেই তারা পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। যোগ দেয় ৮ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সঙ্গে।

ক্যাপ্টেন খালেকুজ্জামানের নেতৃত্বে ৮ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট এবং ইপিআর-এর ১৫০ জন সৈনিককে দায়িত্ব দেয়া হয় রাঙ্গামাটি-মহালছড়ি নৌপথে নিরাপত্তাব্যুহ তৈরির। এই দলের এক নম্বর এলএমজি চালক মুন্সী আবদুর রউফ ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রামের নানিয়ারচর উপজেলাধীন বাকছড়ির একটি বাঙ্কারে।

৮ এপ্রিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ২ নং কমান্ডো ব্যাটেলিয়ানের দুই কোম্পানি সৈনিক ৭টি স্পিডবোট ও ২টি লঞ্চ সহযোগে রাঙামাটি-মহালছড়ি নৌপথের আশেপাশে অবস্থানরত মুক্তিবাহিনীর ওপর আক্রমণ চালায়।

পাকিস্তানি সৈন্যরা মুক্তিবাহিনীর অবস্থান আঁচ করে লঞ্চ থেকে তাদের অবস্থানের ওপর মর্টারে গোলাবর্ষণ শুরু করে। তাদের এই অতর্কিত আক্রমণে মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। এই সুযোগে কিছু পাকিস্তানি সৈন্য তীরে নেমে মুক্তিবাহিনীর অবস্থান ঘিরে ফেলে।

ক্যাপ্টেন খালেকুজ্জামান পিছু হটার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু নিরাপদে অবস্থান ত্যাগের জন্য প্রয়োজন নিরবিচ্ছিন্ন কাভারিং ফায়ার। মুন্সী আবদুর রউফের এলএমজির কাভারিং ফায়ারে ক্যাপ্টেন খালেকুজ্জামান তার সৈন্যদের নিয়ে পিছু হটতে থাকেন। তার অব্যর্থ গুলিতে স্পিডবোটগুলো ডুবে যায় এবং সেগুলোতে অবস্থানরত পাকিস্তানি সৈন্যরা হতাহত হয়। 

বাকি সৈন্যরা লঞ্চ দুটিতে করে পালাতে থাকে। পাকিস্তানি সৈন্যরা এলএমজির রেঞ্জের বাইরে গিয়ে লঞ্চ থেকে মর্টারে গোলা বর্ষণ করতে থাকে। অসম সাহসী আবদুর রউফ তখনো গুলি চালানো অব্যাহত রেখেছিলেন। অকস্মাৎ শত্রুর একটি গোলার আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় মুন্সী আবদুর রউফের দেহ। সহযোদ্ধারা পরে তার মরদেহ উদ্ধার করে নানিয়ারচরের চিংড়ি খাল সংলগ্ন একটি টিলার ওপর সমাহিত করে।

মুক্তিযুদ্ধে তার বীরত্ব ও আত্মদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ খেতাবে ভূষিত করে। বাংলাদেশ রাইফেলস ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে সিপাহী মুন্সী আবদুর রউফকে অনরারি ল্যান্স নায়েক পদে মরনোত্তর পদোন্নতি দেয়।

 

জনপ্রিয়