
তিন মাসের জন্য নতুন পাল্টা শুল্ক স্থগিত করায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানালেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (৯ এপ্রিল) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড পেজে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, আমাদের অনুরোধে ইতিবাচক সাড়া দিয়ে শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করায় আপনাকে ধন্যবাদ, মিস্টার প্রেসিডেন্ট। আপনার বাণিজ্য এজেন্ডাকে সহযোগিতা করার জন্য আপনার প্রশাসনের সঙ্গে আমরা কাজ চালিয়ে যাব।
এর আগে, বাংলাদেশি পণ্যের ওপর নতুন করে ৩৭ শতাংশ রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ বা পাল্টা শুল্ক আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। নতুন শুল্কের কারণে বাংলাদেশের রফতানি পণ্যের বড় বাজারটিতে বিশেষ করে তৈরি পোশাক রফতানিতে বড় ধাক্কার আশঙ্কা দেখা দেয়।
এতদিন বাংলাদেশের মোট পণ্য রফতানির ১৮ শতাংশের গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ বা পাল্টা শুল্ক আরোপের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে দুটি চিঠি পাঠানো হবে বলে রোববার (৬ এপ্রিল) সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সোমবার (৭ এপ্রিল) বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা ৩৭ শতাংশ শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত চেয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
চিঠিতে বলা হয়, আমরা আপনাকে আশ্বস্ত করছি, আপনার বাণিজ্য এজেন্ডা সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়নে সহযোগিতার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবে বাংলাদেশে। আপনার ঘোষণার পর আমি আমার উচ্চ প্রতিনিধিকে ওয়াশিংটন ডিসিতে পাঠিয়েছি যাতে ১৭ কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশের দ্রুত বর্ধনশীল বাজারে আমেরিকান রফতানি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো যায়। আমরাই প্রথম দেশ যারা এ ধরনের ইতিবাচক উদ্যোগ নিয়েছি।
‘আমরাই প্রথম দেশ যারা রফতানির ওপর স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়ার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির জন্য বহু বছরের চুক্তি করেছি। আমাদের কর্মকর্তারা তখন থেকেই বাংলাদেশে আমেরিকান রপ্তানি দ্রুত বাড়ানোর জন্য সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা চিহ্নিত করতে কাজ করছেন। বাণিজ্য উপদেষ্টা আমাদের বিশদ কার্যক্রম নিয়ে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদারে কাজ করবেন।’
এদিকে চীন বাদে যেসব দেশের ওপর পারস্পরিক শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল সেগুলো ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেছেন ট্রাম্প। অন্য দেশগুলোকে ছাড় দিলেও চীনা পণ্যের ওপর মোট শুল্কের পরিমাণ ১০৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ১২৫ শতাংশ করার ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
নিজের মালিকানাধীন সামাজিক মাধ্যম ট্রুথে এ ব্যাপারে ট্রাম্প লিখেছেন, বিশ্ববাজারের প্রতি চীন যে অসম্মান দেখিয়েছে, সেটির ভিত্তিতে আমি চীনের ওপর শুল্কের পরিমাণ ১২৫ শতাংশে উন্নীত করছি। যা এ মুহূর্ত থেকে কার্যকর হবে।