
নেত্রকোনার মদনে ছাত্রের ধর্ষণে এক অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীকে সালিশ থেকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযুক্ত মাহিন মিয়া জাওলা গ্রামের আরজু মিয়ার ছেলে। তিনি স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত।
রোববার (২০ এপ্রিল) সকাল পর্যন্ত ভুক্তভোগী কিশোরীর কোনো সন্ধান পাননি তার স্বজনেরা।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ওই কিশোরীর বাবা গত দুই বছর আগে এক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। জীবিকার তাগিদে মেয়েটির মা চট্টগ্রামে পোশাক শ্রমিকের কাজ করেন। কিশোরী মেয়েটি গ্রামের বাড়িতে বৃদ্ধ দাদির সঙ্গে বসবাস করতেন। এ সময় পাশের বাড়ির মাহিন মেয়েটিকে নানা প্রলোভন দিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে।
বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে এক পক্ষ শুক্রবার গ্রামে সালিশের আয়োজন করে। দুই পরিবারের লোকজনের সম্মতিতে ভুক্তভোগী কিশোরী মেয়েটির সঙ্গে অভিযুক্ত মাহিনের বিয়ের সিদ্ধান্ত হয়। সালিশের পর অতর্কিত অভিযুক্ত মাহিন তার লোকজন নিয়ে কিশোরীকে ঘর থেকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তাদের কোনো সন্ধান মিলছে না। কিশোরীর পরিবার এ নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
কিশোরীর দাদি জানান, লম্পট মাহিন প্রায় সময়েই আমাদের ঘরে যাওয়া-আসা করতো। পরে জানতে পারি আমার নাতনি অন্তঃসত্ত্বা। মাহিন তার সঙ্গে জোর করে এসব করছে বলে আমাদের জানায়। বিষয়টি মাহিনের পরিবারকে জানালে তারা বিয়ে করাবে বলে জানায়। শুক্রবার রাতে বাড়িতে দরবার (সালিশ) করার পর আমার নাতনিকে তুলে মাহিন কোথায় নিয়ে গেছে জানি না। আমরা মাহিনের শাস্তি চাই।
মাহিনের বাবা আরজু মিয়া জানান, আমরা দুই পরিবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম তাদেরকে সামাজিকভাবে বিয়ে দিব। কিন্তু ছেলে-মেয়ে দুই জনেই বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। আমরা খোঁজাখুঁজি করছি সন্ধান পাওয়া যায়নি। পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন রুবেল জানান, অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। বিষয়টির সমাধান করতে আমরা গ্রামে বৈঠক করেছি। পরে শুনেছি মেয়েটিকে মাহিন জোরপূর্বক তুলে নিয়ে গেছে। বৈঠকে ছেলের পরিবার খুবই খারাপ আচরণ করেছে। এ ঘটনার চূড়ান্ত বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাঈম মুহাম্মদ নাহিদ হাসান জানান, এ ঘটনায় কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি কেউ। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।