
নির্বাচন কমিশন (ইসি) বিএনপি দলীয় প্রার্থী মোহাম্মদ ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করেছে। রবিবার (২৭ এপ্রিল) ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ডিএসসিসি নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে ইশরাক হোসেন মামলা দায়ের করেছিলেন। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে, গত ২৭ মার্চ আদালত ইশরাক হোসেনের পক্ষে রায় দেন।
নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ মো. নুরুল ইসলাম নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত তৎকালীন মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের মেয়র পদ বাতিল করে ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে ঘোষণা করেন।
আদালতের রায়ে, ২০২০ সালের নির্বাচনে শেখ ফজলে নূর তাপসের মেয়র হিসেবে প্রকাশিত সরকারি গেজেট বাতিল করা হয় এবং ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে ঘোষণা করা হয়। রায় ঘোষণার সময় ইশরাক হোসেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাচনে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অগ্রহণযোগ্যতার অভিযোগে ২০২০ সালের ৩ মার্চ ইশরাক হোসেন ডিএসসিসি নির্বাচন ও ফলাফল বাতিলের দাবিতে মামলা করেন।
মামলায় তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা, রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবদুল বাতেন এবং দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসসহ মোট আটজনকে বিবাদী করা হয়।
রায়ের পর ইশরাক হোসেনের আইনজীবী রফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, "অনিয়ম, দুর্নীতি ও অগ্রহণযোগ্যতার অভিযোগে আমরা নির্বাচন বাতিল চেয়ে মামলা করেছিলাম।
তাকে মেয়র হিসেবে ঘোষণার আবেদন করেছিলাম। আদালত আজ আমাদের পক্ষে রায় দিলেন। ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন।"
এই রায় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর ইশরাক হোসেনের এই বিজয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন করে উৎসাহ যোগাবে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এই রায়ের বিরুদ্ধে কোনো আইনি পদক্ষেপ নেবে কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
নির্বাচন কমিশনের গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে ইশরাক হোসেন আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
তার সামনে এখন নগরীর বিভিন্ন সমস্যা সমাধান এবং জনগণের প্রত্যাশা পূরণের কঠিন চ্যালেঞ্জ।
এই রায়ের ফলে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি হতে পারে এবং আগামীতে স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোর ওপর এর প্রভাব পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।