
নেত্রকোনা সীমান্তে অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি সোমেশ্বরী নদীর তীরে অবস্থিত দুর্গাপুর উপজেলা। সবুজ পাহাড়, নীল নদী ও আদিবাসী অধ্যুষিত উপজেলাটি যেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক ভাণ্ডার, যেখানে গড়ে উঠেছে বিশিরিরি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কালচালাল একাডেমি, রাণীখং মিশন ও সাদা মাটির পাহাড়সহ উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান।
ঈদের ছুটিতে দুর্গাপুরে একদিকে সোমেশ্বরী নদীর বালুচর, রূপালী পানির স্রোত, অপরদিকে বিজয়পুর এলাকার দেশবিখ্যাত সাদা মাটির পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভিড় করছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার অগণিত পর্যটক। তারা সোমেশ্বরী নদী আর সবুজঘেরা সাদা মাটির পাহাড়ের সৌন্দর্য দেখে বিমোহিত হচ্ছেন।মানুষের এ ভিড় কয়েকদিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
পুরনো এসব পর্যটনের যেমন অপার সম্ভাবনা রয়েছে, অন্যদিকে দুর্গাপুর থেকে পর্যটন কেন্দ্রে চলাচলে সোমেশ্বরী নদীর ওপর অস্থায়ী একটি সেতু রয়েছে। এ সেতুটি পাকা করার দাবি পর্যটকদের। এছাড়াও বাইরে থেকে আসা পর্যটকদের জন্য স্পটে গড়ে ওঠেনি প্রয়োজনীয় আধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এখানে আধুনিক বিশ্রামাগার ও শৌচাগারের অভাব ও রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এসবের দাবি করে আসছেন বহিরাগত পর্যটকরা।
স্থানীয় ব্যবসায়ী রহুল আমিন দৈনিক বলেন, প্রতি বছর ঈদের ছুটিতে দুর্গাপুরের সাদা মাটির পাহাড়সহ দর্শনীয় স্থানগুলোতে বাইরে থেকে অসংখ্য মানুষ আসেন। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে এবার এখানে আরো বেশি মানুষ ভিড় করছেন। এতে আমরা সাধারণ ব্যবসায়ীরা খুবই খুশি। সারাবছর মানুষের উপস্থিতি কম থাকে। যাতায়াত ব্যবস্থা অনুন্নত থাকায় এমনটি হচ্ছে। এ লোকসান ঈদের ছুটিতে কাটিয়ে উঠতে পারবো বলে আশা করছি।
গফরগাঁও থেকে আসা ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম বলেন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সোমেশ্বরী নদী ও বিজয়পুর সাদা মাটির পাহাড় দেখতে স্ত্রী সন্তান সবাইকে নিয়ে এসেছি। খাবারের হোটেলে খাবারের মান বাড়ানো দরকার।
অপরদিকে, এখানে আধুনিক টয়লেট না থাকায় অস্বস্তিতে আছি। থাকার জন্য আধুনিক হোটেল গড়ে তোলা প্রয়োজন। তাহলে দূরদূরান্ত থেকে আসা মানুষের কষ্ট লাঘব হবে।
জেলার বারহাট্টা উপজেলার বাউসী অর্দ্ধচন্দ্র উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রভাষক বিজয় চন্দ্র দাস জানান, ঈদের ছুটিতে শুধুমাত্র মুসলমান নয় আমরা অন্যান্য ধর্মের লোকেরাও দুর্গাপুর আসি। অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি সৌন্দর্যে ঘেরা দুর্গাপুরের বিজয়পুর সাদা মাটির পাহাড়। সপরিবারে সৌন্দর্য দেখতে এসেছি। নেতিবাচক দিকটি হলো, আধুনিক টয়লেটের ব্যবস্থা নেই। স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করছি।
জানতে চাইলে দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাভিদ রেজানুল করিম জানান, প্রতিবছর ঈদের ছুটিতে জেলা ও জেলার বাইরে থেকে অসংখ্য পর্যটক আসছেন। এটি নিঃসন্দেহে গৌরবের বিষয়। ঈদের পর্যটকদের সুবিধার্থে দর্শনীয় স্থানে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া পর্যটকদের নানা সমস্যা সমাধানেও বিশেষ নজরদারি রয়েছে।