ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে বাংলাদেশ দলের ওয়ানডে সিরিজ ঘনিয়ে আসার আগে আবারও আলোচনায় সাকিব আল হাসান। জাতীয় দল-সংশ্লিষ্টদের মধ্যে গুঞ্জন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলবেন সাকিব। তাঁকে বিবেচনায় রেখেই চূড়ান্ত দল গড়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন নির্বাচকরা। বাঁহাতি এ অলরাউন্ডারের দেশে ফেরা নিয়ে সমস্যা থাকলেও বিদেশে খেলা নিয়ে আপত্তি করেনি সরকার।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর পাকিস্তান ও ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজও খেলেছেন তিনি। প্রস্তুতি না থাকায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজ খেলতে রাজি হননি। তবে উইন্ডিজের বিপক্ষে খেলতে আপত্তি থাকার কথা নয় তাঁর। সম্প্রতি আবুধাবিতে জাতীয় দলে ফেরা নিয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে সাকিব বলেন, টি১০ লিগ শেষে জাতীয় দলে খেলবেন। বিসিবি থেকেও তাঁকে দলে নিতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে নির্বাচক প্যানেলের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। অবশ্য দল ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত কোনো কিছুই চূড়ান্ত নয়। দেশের বর্তমান বাস্তবতায় যে কোনো সময় সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হতে পারে।
সাকিব শেষ জাতীয় দলে খেলেছেন ভারতের বিপক্ষে টেস্টে। প্রস্তুতি নিয়েছিলেন মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলে টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানাবেন। তাঁর সে ইচ্ছা পূরণ হয়নি দেশে নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হওয়ায়। হতাশা আর অভিমানে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজ খেলতে রাজি হননি। যদিও বলা হয়েছিল, প্রস্তুতি না থাকায় খেলতে চাননি বাঁহাতি অলরাউন্ডার। এবার খেলার মধ্যে থাকায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যেতে আপত্তি থাকার কথা না।
বিসিবিপ্রধান ফারুক আহমেদ, জাতীয় দলের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স এবং অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজও চান বর্তমান বাস্তবতায় সাকিব যেন খেলেন। কারণ, জাতীয় দলের গুরুত্বপূর্ণ দু’জন ক্রিকেটার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে কোনো সংস্করণেই খেলতে পারবেন না। আঙুলের চিড় থেকে মুশফিকুর রহিমের সেরে ওঠা, চোট পরিচর্যা করা এবং ম্যাচ ফিটনেস ফিরে পেতে সময় লাগবে। বিসিবির মেডিকেল বিভাগ জানায়, মুশফিকের পুরোপুরি ফিট হতে ১৫ থেকে ২০ নভেম্বর লেগে যেতে পারে।
গতকাল জানা গেছে, অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও উইন্ডিজ সফরে সাদা বলের খেলা মিস করবেন। কারণ তাঁর কুঁচকির চোট সারেনি। শনিবার এমআরআই করে দেখা গেছে, চোটের ক্ষত রয়ে গেছে। বিসিবির একজন ফিজিও বলেন, ‘গ্রেড টু টিআর থেকে সেরে উঠতে ছয় সপ্তাহ লাগে। পরিচর্যা করে খেলায় ফিরতে আরও কিছুটা সময়ের প্রয়োজন হবে। তাই শান্তর ওয়েস্ট ইন্ডিজ যাওয়ার সম্ভাবনা নেই বলা যায়।’ মুশফিক-শান্ত দু’জনই এনসিএল টি২০ লিগে খেলে বিপিএলের প্রস্তুতি নেবেন বলে জানায় বিসিবির একটি সূত্র।
মুশফিক, শান্ত না থাকায় শক্তিশালী ওয়ানডে দল গড়া কঠিন হয়ে গেছে। লিটন কুমার দাস ফেরায় শান্তর শূন্যতা পূরণ হবে। মুশফিকের জায়গায় সাকিবকে চান নির্বাচকরা। কোনো কারণে তিনি না খেললে বিকল্প নিয়ে টান পড়বে। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে মুস্তাফিজুর রহমানেরও খেলা হবে না। তিনি পিতৃত্বকালীন ছুটি নেওয়ায় ওয়ানডে দলে ফিরবেন তানজিম হাসান সাকিব। গ্লোবাল টি২০ লিগে খেলতে ওয়েস্ট ইন্ডিজেই আছেন তিনি। সৌম্য সরকার, রিশাদ হোসেনও গ্লোবাল টি২০তে খেলছেন রংপুর রাইডার্সের হয়ে। সেখান থেকেই জাতীয় দলে যোগ দেবেন তারা।
সম্ভাব্য ওয়ানডে দল: লিটন কুমার দাস, সৌম্য সরকার, তানজিদ হাসান তামিম, জাকির হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তাওহিদ হৃদয়, জাকের আলী অনিক, মেহেদী হাসান মিরাজ (অধিনায়ক), রিশাদ হোসেন, সাকিব আল হাসান/নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, নাহিদুল ইসলাম, তানজিম হাসান সাকিব।