জেরার্ড পিকেকে ব্যঙ্গ করে শাকিরা গেয়েছিলেন, ‘তুমি টুইঙ্গো ছেড়ে ফেরারি কিনেছ।’ যার অর্থ, টেকসই, ঐতিহ্যবাহী কিছু ছেড়ে চকচকে, গতিময় কিছু বেছে নেওয়া। কিন্তু কারও গ্যারেজে যদি ফেরারি-টুইঙ্গো দুই-ই থাকে! বাংলাদেশের বোলিং লাইনআপে যেমন আছেন পেসার তাসকিন আহমেদ ও নাহিদ রানা! তাহলে একজনের ইমপ্যাক্ট এবং অন্যজনের গতি দিয়ে প্রতিপক্ষকে কোণঠাসা করা যায়। পাকিস্তানে টেস্ট সিরিজ জয়ের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজে ১৫ বছর পর টেস্ট জিতে তেমন কিছুই দেখিয়েছেন নাহিদ-তাসকিনের পেস জুটি।
জ্যামাইকায় দলের বড় জয়ে প্রথম ইনিংসে নাহিদ গতির ঝলক দেখিয়ে নেন ৫ উইকেট। তাসকিনের ভাগে পড়ে মাত্র ১ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে তাসকিন ২ উইকেট ও নাহিদ ১ উইকেট নিয়েছেন। জয় পাওয়া টেস্টে তাসকিনের পরিসংখ্যান সাদামাটা। তবে প্রথম ইনিংসে বল হাতে এক প্রান্তে দারুণ চাপ সৃষ্টি করেন তাসকিন। ১৪ ওভার বল করে দেন মাত্র ২০ রান। ক্যারিবীয় ব্যাটাররা তাঁকে ব্লক করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছিলেন। যার সুবিধা নিয়ে অন্য প্রান্তে উইকেট তুলে নিতে থাকেন নাহিদ।
প্রথম টেস্টে দল হারলেও দুর্দান্ত বোলিং করেছেন সাময়িক বিশ্রাম কাটিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে ফেরা তাসকিন। প্রথম ইনিংসে ২ উইকেট নেন তিনি। দ্বিতীয় ইনিংসে তুলে নেন ৬ উইকেট। দুই টেস্টে দারুণ খেলে যৌথভাবে জাইডেন সিলসের সঙ্গে সিরিজ সেরা হয়েছেন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো উইকেট ও কন্ডিশনে উইন্ডিজ পেসারদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সিরিজ সেরা হওয়া বড় কিছু। পারফরম্যান্স নিয়ে তাসকিন বলেন, ‘কাঁধের অবস্থা ভালো ছিল না। টেস্ট ক্রিকেটে ফেরা তাই কঠিন ছিল। তবে কঠোর পরিশ্রম করেছি। আশা করছি, এমন মুহূর্ত আরও আসবে। সামনে বাংলাদেশ আরও ভালো ভালো পেসার পাবে।’
নাহিদ-তাসকিনের সঙ্গে পেস বোলিং জুটিতে থাকবে হাসান মাহমুদের নামও। টেস্টে ধারাবাহিক ভালো করছেন তিনি। তাদের দৃষ্টিভঙ্গি মুগ্ধ করেছে নতুন কোচ ফিল সিমন্সকে। ম্যাচসেরা তাইজুল ইসলাম কৃতিত্ব দিয়েছেন পেসারদের। অধিনায়ক মিরাজের কণ্ঠেও ঝরেছে পেসারদের স্তুতি। সেই পাকিস্তান সিরিজ থেকে নাহিদ রানার প্রশংসা তো ইয়ান বিশপ করেই যাচ্ছেন, ‘যেভাবেই হোক ২০২৭ সালের বিশ্বকাপ পর্যন্ত তাকে ফিট রাখতে হবে। দক্ষিণ আফ্রিকায় সে বাংলাদেশের বড় অস্ত্র হবে।’
কোচ সিমন্স বলেন, ‘নাহিদকে দেখে আমি শারজাহর চেয়ে বেশি মুগ্ধ হয়েছি। সে লেন্থ মেনে ধারাবাহিকভাবে বল করেছে। ম্যাচ শুরুর আগে তার একটা কথা শুনে আমি অবাক হয়েছি।’