২০২২ অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে খেলতে গিয়ে বিরূপ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন নোভাক জোকোভিচ। করোনার টিকা না নেওয়ায় মেলবোর্নে পা রাখার পরই তাঁর ভিসা বাতিল করা হয়। একটি হোটেলে আটকেও রাখা হয় তাঁকে। জোকোভিচের এসব পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার কথা কমবেশি সবই এসেছে সংবাদমাধ্যমে। কিন্তু যা সংবাদমাধ্যমে আসেনি, জিকিউ ম্যাগাজিনকে সেটাই জানিয়েছেন সার্বিয়ান তারকা। তিনি জানান, তাঁর খাবারে বিষ দেওয়া হয়েছিল!
জোকোর ভাষায়, ‘স্বাস্থ্যগত কিছু সমস্যায় ভুগছিলাম আমি, মেলবোর্নের হোটেলে যেটা আমি বুঝতে পারি। যে খাবার দেওয়া হয়েছিল, তাতে বিষক্রিয়ায় ভুগছিলাম।’
: আপনি কী বোঝাতে চাচ্ছেন?
: ‘সার্বিয়ায় ফিরে আমি কিছু আবিষ্কার করেছিলাম। আমি এটা কখনোই জনসমক্ষে বলিনি, কিন্তু তখন আমি জানতে পারি, আমার শরীরে ভারী ধাতুর মাত্রা খুব বেশি ছিল। খুব বেশি পরিমাণে সিসা ও পারদ ছিল আমার শরীরে।’
: আপনি কি মনে করেন খাবার থেকেই এটা হতে পারে?
: এটাই একমাত্র উপায়।
: তাহলে আপনি যখন ইউরোপে ফিরছিলেন, খুব অসুস্থ ছিলেন?
: হ্যাঁ, খুব অসুস্থ ছিলাম। এটা সাধারণ ফ্লুর মতো ছিল। কিন্তু কিছুদিন পর সেটা আমাকে খুবই দুর্বল করে ফেলে।
: এই ঘটনার পরও ধরে নেওয়া যায় আপনি টিকা নেননি?
: না, না। কারণ আমি কখনোই মনে করিনি যে আমার (টিকা নেওয়া) দরকার। আমি একজন সুস্থ ব্যক্তি, আমার শরীরের যত্ন নিই, স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন। আমি একজন পেশাদার অ্যাথলেট, তাই আমি যা গ্রহণ করি, তা নিয়ে খুবই সতর্ক। নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা এবং অন্যান্য পরীক্ষা করি। আমি জানি আমার শরীরে কী চলছে। তাই আমি টিকার প্রয়োজন বোধ করিনি। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আমি জানি যে আমি কারও জন্য হুমকি ছিলাম না।’
: সবকিছু মেনে নিয়ে কি আপনি অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে গিয়ে তা ভুলে যেতে পারবেন?
: আমার স্ত্রী, বাবা-মা এবং পরিবারের জন্য হয়তো এটা সম্ভব নয়। কিন্তু আমার জন্য এটা সম্ভব। আমি কখনোই অস্ট্রেলিয়ার জনগণের প্রতি কোনো ক্ষোভ পোষণ করিনি। বরং গত কয়েক বছরে বা অন্য কোথাও অস্ট্রেলিয়ার অনেক মানুষ আমার কাছে এসে ক্ষমা চেয়েছেন, কারণ তাঁরা তাঁদের সরকারের আচরণে লজ্জিত ছিলেন এবং আমি মনে করি সরকার পরিবর্তন হয়েছে। তারা আমার ভিসা পুনর্বহাল করেছে এবং আমি এর জন্য খুবই কৃতজ্ঞ।
টিকা না নেওয়ার কারণে শুধু সেবারের অস্ট্রেলিয়ান ওপেনই নয়; জোকোভিচ খেলতে পারেননি সে বছরের ইউএস ওপেনেও। ফর্মে থাকা জোকো ওই দুটি টুর্নামেন্ট খেললে হয়তো তাঁর গ্র্যান্ড স্লাম শিরোপার সংখ্যা এত দিনে ২৫ ছাড়িয়ে যেত। তবে এই নিয়ে কোনো অনুশোচনা নেই তাঁর। উল্টো বলছেন, ‘আমি যদি সেভাবে ভাবতাম, তাহলে হয়তো আফসোস করতাম, যা আমি করতে চাইনি। বরং যা হয়েছে সেটাই আমার লক্ষ্য অর্জনের ইচ্ছাকে আরও শক্তিশালী করেছে।’