আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বাংলাদেশ দল থেকে বাদ পড়ার দিনই বিপিএলে বিস্ফোরক সেঞ্চুরি হাঁকালেন লিটন দাস। ওপেনিংয়ে তার সঙ্গী তানজিদ হাসান তামিম, যিনি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে আছেন, তিনিও পেলেন তিন অঙ্কের স্বাদ। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে তাদের বিশাল উদ্বোধনী জুটিতে দুর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে রানের পাহাড় গড়ল ঢাকা ক্যাপিটালস।
রোববার (১২ জানুয়ারি)সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১ উইকেটে ২৫৪ রান তুলেছে ঢাকা। এবারের বিপিএলে আগের ছয় ম্যাচের সবকটিতে হারা দলটির ব্যাটারদের সামনে অসহায় ছিলেন রাজশাহীর বোলাররা।
মাত্র ৪৪ বলে সেঞ্চুরি ছুঁয়ে লিটন ৫৫ বলে দশটি চার ও নয়টি ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ১২৫ রানে। ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে নেমে পুরো ২০ ওভার খেলেন তিনি। তানজিদ শেষ ওভারের তৃতীয় বলে আউট হওয়ার আগে করেন ১০৮ রান। ৬৪ বল মোকাবিলায় তিনি মারেন ছয়টি চার ও আটটি ছক্কা। শেষদিকে সাব্বির রহমান ২ বলে একটি ছক্কায় ৭ রানে অপরাজিত থাকেন।
লিটন ও তানজিদের তাণ্ডবে যা যা রেকর্ড হলো তা তুলে ধরা হলো:
বিপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড গড়েছে ঢাকা। ২৫৪ রানের সুবাদে তারা টপকে গেছে যৌথভাবে আগের কীর্তির মালিক দুটি দলকে। ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে ৪ উইকেটে ২৩৯ রান করেছিল রংপুর রাইডার্স। আর গত বছর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ৩ উইকেটে ২৩৯ রান তুলেছিল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে।
স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে ২২৭তম ম্যাচে এসে প্রথম সেঞ্চুরির দেখা লিটন পেয়েছেন ৪৪ বলে। বিপিএলে বাংলাদেশের ব্যাটারদের মধ্যে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড এখন তার দখলে। আগের দ্রুততম বাংলাদেশি সেঞ্চুরিয়ান ছিলেন তামিম ইকবাল। তিনি ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের আসরের ফাইনালে কুমিল্লার হয়ে ঢাকা ডায়নামাইসের বিপক্ষে ৫০ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন। বিপিএলে ৪০ বলে তিন অঙ্ক ছুঁয়ে সবার ওপরে আছেন পাকিস্তানের আহমেদ শেহজাদ।
লিটন ও তানজিদের ১১৮ বলে ২৪১ রানের উদ্বোধনী জুটি বিপিএলে যে কোনো উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটির রেকর্ড। আগেরটি ছিল নিউজিল্যান্ডের ব্র্যান্ডন ম্যাককালাম ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিস গেইলের। ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে ডায়নামাইটসের হয়ে রংপুরের বিপক্ষে দ্বিতীয় উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ২০১ রানের জুটি গড়েছিলেন তারা।
তামিমের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি ব্যাটার হিসেবে বিপিএলে দুটি সেঞ্চুরি এখন তানজিদের। তিনি গত মৌসুমে চ্যালেঞ্জার্সের জার্সিতে ৬৫ বলে ১১৬ রানের ইনিংস খেলেছিলেন খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে।
লিটনের ১২৫ রানের ইনিংসটি বিপিএলের ইতিহাসের বাংলাদেশের ব্যাটারদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস। তার ওপরে আছেন কেবল তামিম। তিনি ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ফাইনালে কুমিল্লার হয়ে ডায়নামাইসের বিপক্ষে ৬১ বলে অপরাজিত ১৪১ রান করেছিলেন।
লিটন ও তানজিদের নৈপুণ্যে বিপিএলে কেবল দ্বিতীয়বারের মতো একই দলের দুই ব্যাটারের সেঞ্চুরির ঘটনা দেখা গেছে। এর আগে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে রংপুরের পক্ষে জোড়া শতরান এসেছিল ইংল্যান্ডের অ্যালেক্স হেলস ও দক্ষিণ আফ্রিকার রাইলি রুশোর ব্যাট থেকে। প্রতিপক্ষ ছিল ভাইকিংস।
ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টিতে যে কোনো উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটির রেকর্ড গড়েছেন লিটন ও তানজিদ মিলে। আগের কীর্তি ছিল ভারতের বিরাট কোহলি ও দক্ষিণ আফ্রিকার এবি ডি ভিলিয়ার্সের। তারা আইপিএলে ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে দ্বিতীয় উইকেটে ২২৯ রানের জুটি গড়েছিলেন গুজরাট লায়ন্সের বিপক্ষে।