জিতলেই প্লে-অফ, আর হারলে নিশ্চিত বিদায়। এমন সমীকরণে খেলতে নেমে ঢাকা ক্যাপিটালসের বিপক্ষে দারুণ এক জয় পেয়েছে খুলনা টাইটানস। এই জয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) চতুর্থ দল হিসেবে প্লে-অফ নিশ্চিত করেছে খুলনা। প্লে-অফ নিশ্চিত করা অন্য তিন দল হচ্ছে ফরচুন বরিশাল, রংপুর রাইডার্স এবং চিটাগং কিংস।
আজ প্লে-অফে যাওয়ার ম্যাচে ঢাকাকে খুলনা হারিয়েছে ৬ উইকেটে। জয় দিয়ে খুলনা প্লে-অফে পৌঁছানোয় বাদ পড়ে গেছে নানা নেতিবাচক কারণে এবারের বিপিএলে সমালোচিত দল দুর্বার রাজশাহী। খুলনা ও রাজশাহী, দুদলই প্রথম পর্ব শেষ করেছে সমান ১২ পয়েন্ট নিয়ে। তবে খুলনা (০.১৮৪) রাজশাহীকে (–১.০৩০) পেছনে ফেলেছে নেট রান রেটে এগিয়ে থাকায়। অন্যদিকে হারের হতাশা নিয়েই বিপিএল মৌসুম শেষ করল ঢাকা। ১২ ম্যাচের মাত্র ৩টিতে জিতেছে তারা, হেরেছে ৯টিতে।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আজ আগে ব্যাটিং করে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১২৩ রান করে ঢাকা। জবাবে মেহেদী হাসান মিরাজের দায়িত্বশীল ফিফটিতে ১৯ বল ও ৬ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে নোঙর ফেলে খুলনা। এটি ১২ ম্যাচে খুলনার ৬ষ্ঠ জয়।
১২৪ রানের লক্ষ্যটা খুব বেশি বড় ছিল না। কিন্তু খুলনার শুরুটাও ছিল বেশ নড়বড়ে। প্রথম তিন ব্যাটসম্যানের দুজনই ফিরেছেন কোনো রান না করে। মোহাম্মদ নাঈম ও আফিফ হোসেন ফিরেছেন শূন্য রানে। দুজনকেই ফিরিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। অল্প রানে দুই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানকে হারানোর পর খুলনার ব্যাটন ছিল অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে।
আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে নিজের দায়িত্বটা বেশ ভালোভাবেই পালন করেন মিরাজ। দলের প্রথম ৪৯ রানের মধ্যে ৩৯ রানই ছিল তাঁর। পাওয়ারপ্লেতে খুলনা করে ৫৩ রান। এর মধ্যে দলীয় নবম ওভারে নিজের ফিফটি তুলে নেন মিরাজ। এ সময় মিরাজকে ভালোই সঙ্গ দেন অ্যালেক্স রস।
তবে দলীয় ৮২ রানে রহমত আলীকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রস (২২)। এরপর বসিস্টোকে (১৮) নিয়ে ৩৮ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে যান মিরাজ। বসিস্টো ফেরার পর মোহাম্মদ নেওয়াজকে নিয়ে বাকি কাজটা সারা মিরাজ অপরাজিত ছিলেন ৫৫ বলে ৫ চার ও ৪ ছক্কায় ৭৪ রানে।
আগে ব্যাট করতে নেমে ঝোড়ো গতিতেই শুরুটা করেছিল ঢাকা। ২.৩ ওভারেই তারা তুলে নেয় ২৯ রান। কিন্তু এরপরই লিটন দাসের বিদায় শুরু হয় ছন্দপতনের। মিরাজের বলে মুশফিক হাসানকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লিটন (১০)। লিটন ফিরলেও এক প্রান্তে ঝোড়ো ব্যাটিং অব্যাহত রাখেন তানজিদ হাসান।
কিন্তু অন্য প্রান্তে কেউই সঙ্গ দিতে পারছিল না তানজিদকে। ফিফটি করে ফিরে যান তিনিও। ৩৭ বলে ১ চার ও ৭ ছক্কায় তাঁর ব্যাট থেকে আসে ৫৪ রান। একপর্যায়ে ৮৩ রানে ঢাকা হারায় ৫ উইকেট। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে ঢাকা শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করে ১২৯ রান। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২০ রান আসে সাব্বির রহমানের ব্যাট থেকে। খুলনার হয়ে ২টি করে উইকেট নেন হাসান মাহমুদ ও বসিস্তো।
দিনের আরেক ম্যাচে আজ রাতে মুখোমুখি হবে বরিশাল ও চট্টগ্রাম। এই ম্যাচে বরিশাল জিতলে কোয়ালিফায়ারে খেলতে পারবে রংপুর। বরিশাল জিতলে বিপিএলের এক আসরে সর্বোচ্চ পয়েন্ট নিয়ে প্লে-অফে উঠবে দলটি। অন্য দিকে চিটাগংয়ের এলিমিনেটর নিশ্চিত। এখন বরিশালকে হারালে কোয়ালিফায়ারে খেলতে পারবে তারা। আর সে ক্ষেত্রে রংপুরকে খেলতে হবে এলিমিনেটরে।