ইসরায়েলে কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আল জাজিরা বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে দেশটির সরকার। পাশাপাশি সরকারকে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার স্বার্থে বিভিন্ন বিদেশি চ্যানেল বন্ধের ক্ষমতা দিয়ে একটি আইনও পাস হয়েছে দেশটির পার্লামেন্ট নেসেটে। জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে হলে সরকার যেকোনো বিদেশি গণমাধ্যমকে ৪৫ দিন পর্যন্ত নিষিদ্ধ করতে পারবে। খবর-বিবিসি
সোমবার পার্লামেন্টে ভোটাভুটিতে ৭০-১০ ভোটে আইনটি পাস হয়। এর ফলে বিদেশি টেলিভিশন চ্যানেলের কন্টেন্টে নিষেধাজ্ঞা, এমনকি যেকোনো চ্যানেল বন্ধের এখতিয়ারও পাবে দেশটির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
এই আইন অনুমোদনের পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আলজাজিরাকে ‘সন্ত্রাসী চ্যানেল’ হিসেবে আখ্যায়িত করে চ্যানেলটির সম্প্রচার দ্রুত বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ইসরায়েল থেকে আল–জাজিরা তাদের সম্প্রচার আর চালাতে পারবে না। আল-জাজিরার আঞ্চলিক কার্যালয় বন্ধে তিনি দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন।
ইসরায়েলের এ পদক্ষেপে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ফিলিস্তিনের গাজায় বিদেশি সাংবাদিকদের প্রবেশে ইসরায়েলের কঠোর বিধিনিষেধ আছে। এ অবস্থায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অল্প কিছু সাংবাদিক যুদ্ধের খবর সংগ্রহ করছেন যার মধ্যে আল–জাজিরার সাংবাদিকরা অন্যতম।
এদিকে সম্প্রচার বন্ধের বিষয়ে আল–জাজিরা একটি বিবৃতি দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে- আল–জাজিরার কর্মী ও এর কার্যালয়ের নিরাপত্তার জন্য নেতানিয়াহুকে দায়ী করবে তারা।
প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েল গাজায় হামলা শুরু করার আগে গাজা উপত্যকায় প্রায় ১ হাজার সাংবাদিক কর্মরত ছিলেন। তাদের মধ্যে ১০০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। এই হিসেবে মোট সংবাদকর্মীর প্রায় ১০ শতাংশ মারা গেছেন এরই মধ্যে। এ এলাকাটি কার্যত এখন সাংবাদিকদের বধ্যভূমিতে পরিণত হয়েছে।
সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষাবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন সিপিজে বলেছে, গাজায় সাংবাদিকদের হত্যার সংখ্যা ইতিহাসে ‘অতুলনীয়’। সংস্থাটি বলেছে, ইসরায়েলি বাহিনী গাজা উপত্যকায় হামলা চালিয়ে সাংবাদিকদের এমন হারে হত্যা করছে, যার তুলনা আধুনিক ইতিহাসে নেই।