পঞ্চদশ শতকের অভিযাত্রী ক্রিস্টোফার কলম্বাস পশ্চিম ইউরোপের একজন সেফার্ডিক ইহুদি ছিলেন। সম্প্রতি এমন তথ্য জানিয়েছেন স্পেনের বিজ্ঞানীরা। ডিএনএ বিশ্লেষণ করে কয়েক শতাব্দীর পুরোনো এই রহস্য উন্মোচনের দাবি করেছেন তারা। খবর রয়টার্সের।
১৪৯০-এর দশক থেকে স্প্যানিশ অর্থায়নে পরিচালিত অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন কলম্বাস। এর জেরে ইউরোপীয়দের আমেরিকা জয়ের পথ সহজ হয়। তবে তার জন্মস্থান ও সমাধিস্থল নিয়ে কয়েকটি দেশের মধ্যে তর্কবিতর্ক আছে।
ইতিহাসবিদদের অনেকে মনে করেন কলম্বাস ইতালির জেনোয়ায় জন্ম নিয়েছিলেন। কেউ দাবি করেন, স্পেনের একজন ইহুদি কিংবা গ্রিক থেকে শুরু করে বাস্ক, পর্তুগিজ বা ব্রিটিশ নাগরিক।
রহস্যের সমাধানে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ মিগুয়েল লোরেন্তের নেতৃত্বে ২২ বছর অনুসন্ধান কাজ পরিচালনা করেন গবেষকেরা। স্পেনের সেভিল ক্যাথেড্রালে সমাহিত দেহাবশেষের ক্ষুদ্র নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এখানে কলম্বাসের দেহাবশেষ আছে বলে দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে কর্তৃপক্ষ। যদিও এ বিষয়ে ভিন্ন দাবিও আছে।
গবেষকেরা কলম্বাসের দেহাবশেষের ক্ষুদ্র নমুনা পরিচিত আত্মীয় ও বংশধরদের সঙ্গে তুলনা করেন। শনিবার স্পেনের জাতীয় সম্প্রচারমাধ্যম টিভিইতে ‘কলম্বাস ডিএনএ: দ্য ট্রু অরিজিন’ শিরোনামের একটি তথ্যচিত্রে (ডকুমেন্টারি) গবেষণার ফলাফল তুলে ধরা হয়।
গবেষকরা বলেন, আমাদের কাছে কলম্বাসের ডিএনএ আছে, তা খুব আংশিক, কিন্তু যথেষ্ট। আমাদের কাছে তার ছেলে ফার্নান্দো কোলনের ডিএনএ আছে। ফার্নান্দোর ‘ওয়াই’ ক্রোমোজোম (পুরুষ) ও মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ (মায়ের কাছ থেকে আসা) উভয়ের ইহুদি উৎসের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
কলম্বাস ১৫০৯ খ্রিষ্টাব্দে স্পেনের ভ্যালাডোলিডে মারা যান। তিনি হিস্পানিওলা দ্বীপে সমাধিস্থ হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। এখন এই দ্বীপটির মালিকানা ভাগাভাগি করছে ডমিনিক প্রজাতন্ত্র ও হাইতি। ১৫৪২ খ্রিষ্টাব্দে কলম্বাসের দেহাবশেষ সেখানে নেওয়া হয়েছিল। এরপর ১৭৯৫ এ কিউবায় স্থানান্তর করা হয়েছিল। ১৮৯৮ খ্রিষ্টাব্দে তা স্পেনের সেভিলে নেওয়া হয় বলে দীর্ঘকাল ধরে ধারণা রয়েছে।