ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বর্বর হামলায় আরো ৮৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৪২ হাজার ৬০০ ছাড়িয়ে গেছে।
এছাড়া গত বছরের অক্টোবর থেকে চলা এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও আরো এক লাখ ফিলিস্তিনি। রোববার (২০ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
মন্ত্রণালয় বলেছে, ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত আগ্রাসনে ৮৪ জন নিহত এবং আরো ১৫৮ জন আহত হয়েছেন। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন কারণ উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
রোববারের মৃত্যু নিয়ে উপত্যকাটিতে ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিহতের মোট সংখ্যা ৪২ হাজার ৬০৩ জনে পৌঁছেছে। টানা এক বছরের বেশি সময় ধরে চলমান এই হামলায় আরো অন্তত ৯৯ হাজার ৭৯৫ জন ব্যক্তিও আহত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন কয়েক লাখ ফিলিস্তিনি।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বলছে,ইসরায়েলি বোমার আঘাতে গাজা উপত্যকাজুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়িঘরের ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন।
উল্লেখ্য, ৭ অক্টোবর দখলদার ইসরায়েলের সীমানায় হামাসের নজিরবিহীন হামলায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। ওই সময় প্রায় ২৫০ জনকে ধরে গাজায় নিয়ে আসে হামাসযোদ্ধারা। তার পর থেকে পাল্টা প্রতিশোধে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
গাজায় বসবাসকারী দুই মিলিয়নেরও বেশি ফিলিস্তিনিদের জ্বালানি, বিদ্যুৎ, খাদ্য ও পানি বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। দখলদারদের আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।
এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।