আশ্রয়হীন হয়ে অথবা মানসিক সহায়তার প্রয়োজনে রাষ্ট্রের কাছে সাহায্য চাইতে গিয়ে হেনস্তার শিকার হওয়া অন্তত ৬ লাখ মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লুকসন।
সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) পার্লামেন্টের গ্যালারিতে অসংখ্য সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন। তাদের অভিযোগ, অসহায় অবস্থায় রাষ্ট্র বা চার্চের কাছে সাহায্য চাইতে গিয়ে তারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
এ ব্যাপারে নিউজিল্যান্ডের সরকার একটি তদন্ত কমিশন গঠন করেছিল। ওই তদন্ত কমিশন জানায়, অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন অত্যাচার বা হেনস্তার শিকার হয়েছেন। যারা এই অভিযোগ করেছিলেন, তাদের অধিকাংশই নিউজিল্যান্ডের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত।
এরপরেই পার্লামেন্টে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয় এবং প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লুকসন নিজের এবং সাবেক সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
তিনি বলেন, ‘এটা খুবই ভয়ংকর ও হৃদয়বিদারক ছিল। এটি কখনই হওয়ার কথা ছিল না। এমন ঘটনা যাতে আর কখনো না ঘটে, সে দিকে নজর দেয়া হবে। যে ঘটনা ঘটেছে, তার তদন্ত হবে।’
তদন্ত কমিশন জানিয়েছে, ১৯৫০ থেকে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করেছে কমিশন। তাতে বলা হয়েছে, অন্তত ছয় লাখ ৫০ হাজার মানুষ অত্যাচার ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন। ভুক্তভোগীদের মধ্যে অসংখ্য শিশু রয়েছে। তাদের ওপর মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার হয়েছে। সবচেয়ে পরিতাপের বিষয় হলো, সরকারি এবং চার্চের প্রতিষ্ঠানে এই ঘটনা ঘটার ফলে তারা সরাসরি অভিযোগ জানাতেও পারেনি সব সময়।
কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বহু শিশুকে জোর করে সম্পূর্ণ অকারণে তাদের মায়েদের থেকে আলাদা করে দেয়া হয়েছে। শিশুদের অন্য লোকের কাছে দত্তক হিসেবে পাঠানো হয়েছে। শিশু এবং নারীদের ওপর যৌন নির্যাতনের পাশাপাশি ইলেকট্রিক শক দেয়া হয়েছে। মূলত বর্ণবাদের কারণেই এই অত্যাচার চালানো হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লুকসন বলেন, ‘কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অবশ্যই দোষীদের শাস্তি দেয়া হবে, যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর না ঘটে।’