যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে তাদের দূতাবাস বন্ধ ঘোষণা করেছে। মার্কিন দূতাবাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘বড় ধরনের বিমান হামলার’ সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়ার পর এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বুধবার (২০ নভেম্বর) মার্কিন দূতাবাসের এক নিরাপত্তা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে দূতাবাস বন্ধ রাখা হয়েছে এবং দূতাবাস কর্মীদের তাদের অবস্থান থেকে সরে না যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে’।
একই সঙ্গে বিমান হামলার সতর্কতা জারি হলে মার্কিন নাগরিকদের নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
এদিকে বুধবার ভোরে কিয়েভে রুশ ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটেছে। কিয়েভ সিটি মিলিটারি প্রশাসনের প্রধান সেরহি পপকো জানিয়েছেন, ড্রোন হামলার ধ্বংসাবশেষ শহরের ডনিপ্রোভস্কি এলাকায় পড়েছে।
তিনি এক টেলিগ্রাম বার্তায় জানান, ‘ড্রোন হামলার ঘটনায় একটি বহুতল আবাসিক ভবনের অ্যাপার্টমেন্টে আগুন ধরে গেছে। হতাহতের তথ্য যাচাই করা হচ্ছে‘।
সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়ার ড্রোন হামলায় কিয়েভে এক ডজনেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে এবং ইউক্রেনজুড়ে বিদ্যুৎ অবকাঠামোতে আঘাত হানায় ব্যাপক ব্ল্যাকআউটের ঘটনা ঘটছে।
ইউক্রেনের পালটা আঘাত এবং নতুন পরিস্থিতি
সম্প্রতি ইউক্রেনও প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহকৃত দীর্ঘ-পাল্লার ATACMS ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার ব্রায়ানস্ক অঞ্চলে একটি সামরিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে।
এই হামলার পর ক্রেমলিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এরই মধ্যে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রাশিয়ার পারমাণবিক নীতিতে পরিবর্তন এনে এর প্রয়োগের সীমা আরও কমিয়েছেন।
নতুন এই নীতিমালায় বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো পরমাণু অস্ত্রধারী দেশের সহযোগিতায় কোনো অ-পরমাণুধারী দেশ রাশিয়ার ওপর আক্রমণ চালায়, তাহলে রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করে হামলা চালাতে পারে’।
এদিকে মার্কিন দূতাবাসের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, কিয়েভে মার্কিন দূতাবাস বন্ধের এই সিদ্ধান্ত পুতিনের নীতিগত পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কিত নয় বরং ‘চলমান বিমান হামলার হুমকির কারণে’ নেওয়া হয়েছে।
দূতাবাসের কর্মীরা দূর থেকে কাজ চালিয়ে যাবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গতরাতে রুশ বাহিনী ৪৪টি ইউক্রেনীয় ড্রোন প্রতিহত করেছে। এর মধ্যে তিনটি ড্রোন বেলগোরদ সীমান্ত অঞ্চলের আকাশে ধ্বংস করা হয়।
ইউক্রেনের দাবি, তারা ওই অঞ্চলে একটি রুশ কমান্ড পোস্টে আঘাত হেনেছে।
বর্তমান পরিস্থিতি যুদ্ধক্ষেত্রে উত্তেজনা আরও বাড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে।
সূত্র: এনবিসি নিউজ