লেবানন-বংশোদ্ভূত আমেরিকান ব্যবসায়ী মাসাদ বুলোসকে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য ও আরববিষয়ক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
রবিবার (১ ডিসেম্বর) নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া একটি পোস্টে বুলোসকে ‘সফল আইনজীবী এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অত্যন্ত সম্মানিত নেতা’ হিসেবে প্রশংসা করেন তিনি।
তবে এই মাসাদের আরো একটি পরিচয় রয়েছে। তিনি ট্রাম্পের মেয়ে টিফানির শ্বশুর। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারশিবিরে সক্রিয় ছিলেন মাসাদ বুলোস। বিশেষ করে আরব-আমেরিকান মুসলিম ভোটারদের মন জয়ে তিনি ভূমিকা রেখেছেন।
পোস্টে ট্রাম্প আরো লেখেন, ‘মাসাদ দক্ষ চুক্তি নির্মাতা এবং মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির জন্য অটল সমর্থক। তিনি যুক্তরাষ্ট্র এবং এর স্বার্থের জন্য একজন শক্তিশালী প্রবক্তা হবেন এবং আমি তাকে আমাদের দলে পেয়ে আনন্দিত।’
তবে মাসাদ বুলোস তার নিজস্ব মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক মতামত নিয়ে বেশিরভাগ সময় নীরব থেকেছেন। নিজের নীতিগত অবস্থানও স্পষ্ট করেননি তিনি।
তিনি লেবাননের একটি রাজনৈতিকভাবে সংযুক্ত খ্রিষ্টান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু কিশোর বয়সেই টেক্সাসে যান এবং পরে নাইজেরিয়ায় তার পরিবারিক ব্যবসায়িক উদ্যোগে যোগ দেন।
মাসাদের বৈশিষ্ট্যও বেশ বতর্কিত। এর আগে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস জানিয়েছিল, বুলোস ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে লেবাননের সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তবে সম্প্রতি নিউজউইকের এক সাক্ষাৎকারে এই দাবিকে অস্বীকার করেছেন তিনি। মাসাদ আরও অস্বীকার করেছেন, তিনি সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সাথে সংযুক্ত লেবাননের রাজনীতিবিদ সুলেইমান ফ্রানজিয়েহ’র বন্ধু। এই ফ্রানজিয়েহ’র প্রেসিডেন্ট হওয়ার আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করে হিজবুল্লাহ।
অবশ্য মাসাদ বুলোস বলেছেন, তিনি লেবাননের কোনো দলের সাথে সংযুক্ত নন। তবে তিনি লেবাননের বেশিরভাগ খ্রিষ্টান নেতার সাথে পরিচিত।
এক দিন আগেই আরেক মেয়ে ইভাঙ্কার শ্বশুর চার্লস কুশনারকে ফ্রান্সে পরবর্তী মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন ট্রাম্প।
তবে নিয়োগ পেলেও বুলোসের ভূমিকার সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানা যায়নি। ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যপ্রাচ্য নীতির তত্ত্বাবধানকারী কর্মকর্তাদের বেছে নেয়া প্রক্রিয়ার মধ্যেই এই ঘোষণা এসেছে। এর আগে ট্রাম্প ইসরায়েলপন্থি মার্কো রুবিওকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করেন। এছাড়া মাইক হাকাবিকে ইসরায়েলি বসতির সমর্থক হিসেবে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত এবং নীতিগত অভিজ্ঞতাহীন ব্যবসায়ী স্টিভেন উইটকফকে মধ্যপ্রাচ্য বিশেষ দূত হিসেবে মনোনীত করেছেন ট্রাম্প।