আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির ওয়েবসাইট বন্ধ দেখা যাচ্ছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, গতকাল ইউএসএআইডির ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার চেষ্টা করলে সেখানে ‘সার্ভার আইপি ঠিকানা খুঁজে পাওয়া যায়নি’ বলে একটি বার্তা ভেসে উঠছে।ধারণা করা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক এই সংস্থাটিকে এবার পররাষ্ট্র দপ্তরের অধীনে নিতে যাচ্ছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন।এ বিষয়ে ইউএসএআইডি ও হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
এদিকে পররাষ্ট্র দপ্তরের দুটি সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে, ইউএসএআইডি আর স্বাধীন সংস্থা থাকছে না। এটিকে পররাষ্ট্র দপ্তরের অধীনে নিতে ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।
রয়টার্স আরও জানিয়েছে, গত শুক্রবারই ইউএসএআইডির সিল সম্বলিত ফলকগুলো অপসারণ করা হয়েছে। এরপর সংস্থাটির ওয়েবসাইটেও প্রবেশ করা যাচ্ছে না। এসব কর্মকাণ্ড স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়, ইউএসএআইডিকে পররাষ্ট্র দপ্তরে একীভূত করার কাজ চলছে।
ট্রাম্প প্রশাসন গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সহায়তা বন্ধের নির্দেশ দেয়। ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী কয়েক বিলিয়ন ডলারের এ ধরনের বৈদেশিক সহায়তা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং করদাতাদের অর্থের অপচয় কি না, তা নিশ্চিত হতে পর্যালোচনা করে দেখা হবে।
এরপরই ইউএসএআইডির ওয়েবসাইট বন্ধ দেখা গেল।
ইউএসএআইডির সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তারা বলেছেন, ভিন্নমত দমন করার জন্যই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ছাঁটাই করা হয়েছে। এবার সংস্থাটিকে পররাষ্ট্র দপ্তরের অধীনে নেওয়া হচ্ছে। এটি নিঃসন্দেহে হঠকারী সিদ্ধান্ত।
সিনেটের বিরোধীদলীয় নেতা চাক শুমার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ নিলে তা হবে অবৈধ ও জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী।
যদি ইউএসএআইডিকে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের অধীনে রাখা হয়, তবে বিশ্বের বৃহত্তম একক এ দাতা সংস্থার কাছ থেকে বিশ্বব্যাপী জীবন রক্ষাকারী যে সাহায্য পাওয়া যায়, তাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করবে। ইউএসএআইডির কাজকর্ম সম্পর্কে জানে এমন একটি সূত্র জানিয়েছে, এ পদক্ষেপ গ্রহণ করলে সংস্থাটির মানবিক কার্যক্রমের ওপর বড় ধরনের প্রভাব পড়বে।
ইউএসএআইডি অতীতে ইরানসহ যেসব দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই, তাদেরও সেতু নির্মাণের মতো নানা উন্নয়নকাজে সহায়তা করতে সক্ষম হয়েছে। এখন যদি এর কার্যক্রম রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়, তবে এ ধরনের সুবিধাগুলো নষ্ট হবে। ট্রাম্পের পরিকল্পনা সফল হলে সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কর্তৃক সৃষ্ট ইউএসএআইডি প্রশাসকের পদটি বাতিল হয়ে যাবে।